সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্ব আলোচনা কর

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্ব আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্ব আলোচনা কর।

সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্ব আলোচনা কর
সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্ব আলোচনা কর

সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্ব আলোচনা কর

উত্তর ভূমিকা : প্রশাসনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। প্রশাসনকে একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া বলা যেতে পারে। 

কেননা সংগঠন কাঠামো বিভাগ তৈরি, বিভিন্ন পর্যায়ে সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব বণ্টন, সমন্বয়সাধন, জবাবদিহিতার পরিবেশ সৃষ্টি প্রভৃতি সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। 

প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য সর্বোত্তম পন্থা নির্ধারণ, বিভিন্ন দল ও ব্যক্তির মধ্যে অর্জনের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ এবং তার পদ্ধতি নির্দিষ্টকরণ প্রভৃতি কাজ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়।

● প্রশাসনে সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্ব : সংগঠন কাঠামোতে সর্ব প্রকার কর্মকাণ্ড গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সিদ্ধান্তের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

সিদ্ধান্ত গ্রহণ যেমন প্রশাসনের কাজ তেমনি পুরো প্রশাসনই সিদ্ধান্তের ফলশ্রুতি। প্রশাসনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্ব নিম্নে আলোচনা করা হলো :

১. সংগঠনের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন : প্রতিষ্ঠানের অভীষ্ট লক্ষ্য কী এবং কীভাবে তা অর্জিত হবে তা সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে নির্দিষ্ট করা হয়। 

সাধারণত সামাজিক সংস্থাসমূহের উদ্দেশ্য হচ্ছে গৃহীত নীতির বাস্তবায়নের মাধ্যমে সংস্থার আওতাভুক্ত সদস্যদের ব্যাপক কল্যাণসাধন করা। 

সংস্থার নির্বাহী এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কী কী সেবা প্রদান করা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং সেগুলোর অর্জন নিশ্চিত করেন। 

পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সংস্থার লক্ষ্য পরিবর্তন, পরিমার্জন বা সংশোধন করা হয়ে থাকে ।

২. সংগঠনের কার্যাবলিতে সহায়তা প্রদান : সংগঠনের উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় ;

Purpose

Policy

Planning

Program

Project

এ পদ্ধতি গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা কোনো প্রশাসনের পক্ষেই সব Purpose বা লক্ষা একসঙ্গে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। 

তাই কোনো বিশেষ Purpose কে অগ্রাধিকার দিয়ে তা বাস্তবায়ন করা হবে তা নির্ধারণে নির্বাহীকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এরপর Purpose এর আলোকে Policy গ্রহণ এবং তার জন্য Plan, Program তৈরি, Project গ্রহণ সবকিছু সিদ্ধান্তের আলোকে হয়ে থাকে।

৩. প্রশাসনিক কার্যাবলি বাস্তবায়ন : প্রশাসনিক কার্যক্রমে একজন নির্বাহীকে Planning, Organizing. Staffing, Directing, Reporting, Budgetting প্রভৃতি ক্ষেত্রে সহায়তার জন্য বিভিন্ন গ্রুপ দায়িত্ব পালন করে। তাদেরকে নিয়োগ, নির্দেশনা বা নিয়ন্ত্রণের জন্য সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন অপরিসীম।

৪. নিরাপত্তা প্রদান : সঠিক ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ওপর সংগঠনের দীর্ঘস্থায়িত্ব নির্ভর করে। ভুল ও অপরিণত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে সংগঠন গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে বিলুপ্তি হয়ে যেতে পারে। সুতরাং সংগঠন ও প্রশাসনের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

৫. লক্ষ্য অর্জনে বাধা দূরীকরণ : সংগঠন বা প্রশাসনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বাধাসমূহ দূর করার জন্য তাৎক্ষণিক ও কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়। 

তা না হলে প্রশাসন কাঠামো ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা থাকে । এ প্রসঙ্গে K. G. Davis বলেছেন, “প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনা প্রশাসনের জনস্বার্থবিরোধী প্রবণতা প্রতিহত করে।”

৬. প্রশাসনিক শৃঙ্খলা রক্ষা : কোনো সংগঠনের লক্ষ্য অর্জনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক বিভাগসমূহের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় থাকা জরুরি। 

প্রশাসনের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা ও অনিয়ম বজায় থাকলে কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা দেখা দেয়। তাই সংগঠনের শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নির্বাহীকে খুব দক্ষতার সাথে কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়।

৭. দ্রুত সমস্যার সমাধান : বিভিন্ন সামাজিক বা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় বহুমুখী সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়। 

সংগঠনে উদ্ভূত সমস্যাসমূহের দ্রুত ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান করে কার্যক্রমে গতিশীলতা আনার জন্য প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয় ।

৮. সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান : সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কেবল উদ্ভূত সমস্যার সমাধানের বিকল্প উপায় থাকতে পারে। তবে এসব বিকল্প থেকে সর্বোত্তম সমাধান বাছাই করার জন্য নিখুঁত সিদ্ধান্ত প্রশাসনের জন্য অপরিহার্য

৯. গতিশীলতা সৃষ্টি : কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে সামাজিক, রাজনৈতিক বা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে কর্মে গতিশীলতা সৃষ্টি হয়। 

এসব সংগঠনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়মিত অনুশীলিত হলে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ গণতান্ত্রিক, সমন্বিত ও অংশগ্রহণমূলক ধারা বজায় রাখতে পারলে প্রশাসনের সব স্তরে আত্মসন্তুষ্টি জন্ম নেয় এবং তা প্রশাসনের স্থবিরতা রোধ করে।

১০. জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ : সামাজিক সংগঠনসমূহে মূলত সমষ্টি উন্নয়নের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। 

জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের আর্থসামাজিক, মানবীয় ও দৈহিক অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে আধুনিক সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার সর্বশেষ ও বিশেষ কৌশল। 

সুতরাং সামাজিক সংস্থার বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে জনগণের অংশগ্রহণের পাশাপাশি সংস্থার অভ্যন্তরীণ ক্রিয়াশীল বিভিন্ন স্বাধীন ইউনিট যেমন— Board, Stafj. Committee ইত্যাদিতে তাদের অন্তর্ভুক্তিকরণ জরুরি।

উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, সমগ্র সামাজিক প্রশাসন প্রক্রিয়া একটি সমন্বিত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফসল। সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমেই সামাজিক প্রশাসনে কার্যক্রমের সূচনা, বিভাগ ও সমাপ্তি ঘোষিত হয়। 

তাই সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার কোনো ঘটনা বা বিষয়ের শুরু বা সমাপ্তি নয়; বরং প্রশাসনকে প্রতিটি কাজে সঠিক পথে পরিচালনার জন্য গাইডলাইন স্বরূপ ।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্ব আলোচনা কর

আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্ব আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
আরও পড়ুনঃ
আরও পড়ুনঃ