২৬টি ছোট সূরা সমূহ বাংলা উচ্চারণ সহ pdf | কোরআন শরীফের ছোট সূরা সমূহ
প্রতিটি মুসলিমের উপর সালাত আদায় করা ফরজ। তাই আমাদের উচিত নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা। আর নামাজ পড়তে হলে কিংবা সালাত আদায় করতে হলে অবশ্যই আমাদের ছোট সূরা সমূহ বাংলা উচ্চারণ সহ জানতে হবে।
তাছাড়া আমরা যারা বেশি কুরআন জানি না বা মুখস্থ নেই, তাদের নামাজ পড়ার জন্য ছোট ছোট সূরা জেনে রাখা উচিত। তাই আজ আমরা ছোট সূরা সমূহ বাংলা উচ্চারণ সহ জানার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
ছোট সূরা সমূহ বাংলা উচ্চারণ সহ pdf | কোরআন শরীফের ছোট সূরা সমূহ
আমরা অধিকাংশ মুসলমান জন্মগত মুসলিম হওয়ার কারণে সহজে কুরআন পড়তে জানি না। অথচ আমাদের প্রতিটি মুসলিমের উপরই কুরআন জানা ফরজ।
২৬টি ছোট সূরা সমূহ বাংলা উচ্চারণ সহ pdf কোরআন শরীফের ছোট সূরা সমূহ |
কেননা নামাজ পড়ার জন্য অবশ্যই কিছু ছোট সূরা সমূহ জানা অবশ্যই জরুরী। কেননা নামাজ আদায়ের জন্য সূরা কিরাত অবশ্যই পড়তে হবে যা পড়া আবশ্যক।
আমরা অনেকেই জানি না নামাজ ভাঙার কারন গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি কারন হলো অশুদ্ধ কিরাত পড়া। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত ছোট সূরা সমূহ বাংলা উচ্চারণ সহ জানা।
যাতে নামাজ পড়ার জন্য ছোট ছোট সূরা গুলো আমরা পড়তে পারি। বেশী জানা না থাকলেও কমপক্ষে ৮/১০ টি সূরা আমাদের জানা থাকা আবশ্যক।
সুচিপত্রঃ ছোট সূরা সমূহ বাংলা উচ্চারণ সহ pdf | কোরআন শরীফের ছোট সূরা সমূহ
০১। সূরা ফাতিহা অর্থ সহ বাংলা অনুবাদ
০২। সূরা নাস আরবি বাংলা উচ্চারণ
০৩। সূরা ফালাক বাংলা অনুবাদ সহ
০৪। সূরা ইখলাস এর বাংলা অনুবাদ
০৫। সূরা লাহাব বাংলা অর্থ সহ
০৬। সূরা নাসর বাংলা উচ্চারণ সহ
০৭। সূরা কাফিরুন বাংলা উচ্চারণ সহ অর্থ
০৮। সূরা কাওসার বাংলা উচ্চারণ সহ
০৯। সূরা মাউন বাংলা অনুবাদ সহ
১০। সূরা হুমাযাহ বাংলা উচ্চারণ সহ
১১। সূরা কুরাইশ বাংলা উচ্চারণ সহ
১২। সূরা ফীল বাংলা উচ্চারণ সহ
১৩। সূরা আসর এর বাংলা অনুবাদ
১৪। সূরা ক্বদর এর বাংলা উচ্চারণ
১৫। তাশাহুদ (আওাহিয়্যাতু)
১৬। দুরুদ শরিফ
১৭। হাদিসে বর্ণিত আরেকটি দুরুদ
১৮। দোয়ায়ে মাসূরা
১৯। দোয়া মাসূরা ২
২০। দোয়া মাসূরা ৩
২১। দোয়ায়ে কুনুত বাংলা উচ্চারণ সহ
যদি আমরা নামাজ পড়ার জন্য ছোট ছোট সূরা (soto sura bangla) গুলো শিখে রাখতে পারি, তাহলে অবশ্যই নামাজে কিরাত পড়ার সময় ভুল হবেনা।
তাই সবারই সূরা গুলো মুখস্ত রাখা প্রয়োজন। নামাজে সূরা ফাতিহার পর একটি সুরা কিংবা কোনো সুরার কমপক্ষে ছোট ছোট তিনটি আয়াত হলেও পাঠ করতে হবে।
তাহলেই নামাজ শুদ্ধ হবে। আমরা আজ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে namajer soto sura bangla pdf - বিভিন্ন ছোট ছোট সুরা সমূহ জানার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
০১। সূরা ফাতিহা অর্থ সহ বাংলা অনুবাদ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ।
الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
আলহামদুলিল্লাহি রাব্বীল আলামীন।
الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
আররাহমানির রাহীম।
مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ
মা-লিকী ইয়াউমিদ্দ্বীন।
إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ
ইয়্যাকা-নাবুদু ওয়া ইয়্যাকা নাসতায়ীন।
اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ
ইহদিনাস-সিরাতাল মুসতাক্বীম।
صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ
সিরাত্বাল লাযিনা আন-আমতা আলাইহিম।গাইরিল মাগদুবি আলাইহিম। ওয়ালাদ্দুয়াল্লীন আমীন।
সুুারা ফাতিহা এর বাংলা অর্থ
- শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়,অতি দয়ালু।
- সকল প্রশংসা আল্লাহ তা আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের মালিক।
- যিনি অত্যন্ত মেহেরবান ও দয়ালু।
- যিনি বিচার দিনের মালিক।
- আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধু তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি।
- আমাদেরকে সহজ সরল পথ দেখাও।
- তাদের পথ-- যাদেরকে তুমি নিয়ামত দান করেছ তাদের পথ -- যারা ক্রোধভাজন (ইয়াহুদী) নয় এবং যারা পথভ্রষ্টও (খ্রিষ্টান) নয়। (আমীন)
০২। সূরা নাস আরবি বাংলা উচ্চারণ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ।
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ
কুল আউযু বিরাব্বিন্নাস।
مَلِكِ النَّاسِ
মালিকিন্না-স্ ।
إِلَهِ النَّاسِ
ইলা-হি ন্না-স্ ।
مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ
মিন্ শাররিল ওয়াস্ ওয়া-সিল্ খান্না-সি
الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ
আল্লাযী ইউওয়াস ওয়িসু ফী সুদুরিন্নাস।
مِنَ الْجِنَّةِ وَ النَّاسِ
মিনাল জিন্নাতি ওয়ান্নাস।
সুরা নাস এর বাংলা অর্থ
- শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়,অতি দয়ালু।
- বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করিতেছি মানুষের পালনকর্তার,
- মানুষের অধিপতির,
- মানুষের মা’বুদের
- তার অনিষ্ট থেকে, যে কুমন্ত্রণা দেয় ও আত্নগোপন করে,
- যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে
- জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে। ’
০৩। সূরা ফালাক বাংলা অনুবাদ সহ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ।
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ
ক্বুল আ‘ঊযু বিরাব্বিল ফালাক্ব।
مِن شَرِّ مَا خَلَقَ
মিন্ র্শারি মা- খালাক্ব।
وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ
ওয়ামিন শাররি গাসিক্বিন ইযাওয়াক্বাব৷
وَمِن شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ
ওয়ামিন শাররিন নাফফাছাতি ফিল উক্বাদ৷
وَمِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ
অমিন শাররি হাসিদিন ইযা হাসাদ।
সুারা ফালাক এর বাংলা অর্থ
- শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়,অতি দয়ালু।
- বলুন,আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি প্রভাতের পালনকর্তার,
- তিনি যা সৃষ্টি করেছেন,তার অনিষ্ট থেকে,
- অন্ধকার রাত্রির অনিষ্ট থেকে,যখন তা সমাগত হয়,।
- আর গিরায় ফুতকার দানকারী নারীদের অনিষ্ট থেকে,
- আর হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে’।
সুরা ফালাক এবং নাসের শানে নুযূল
কুরআনের গুরুত্বপূর্ণ এই সূরা দুটি নাযিল হওয়ার প্রেক্ষাপট হল, হুদাইবিয়ায় যে ঘটনা ঘটেছিল, সেই ঘটনার পর লাবিদ ইবনে আসাম এবং তার মেয়েরা রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর যাদু টোনা করেছিল।
যেকারণে তিনি অনেক কষ্ট অনুভব করেন এবং অসুস্থ হয়ে পড়েন। আল্লাহ জিবরাইল আঃ এর মাধ্যমে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ঐ যাদুকরের নাম এবং কোথায়, কিভাবে যাদু করেছে সেই সম্পর্কে সকল বৃতান্ত জানিয়ে দেন। এই জাদু চিরুনী ও চুলের সাহায্যে করা হয়েছিল। যা যারওয়ান কূপের তলদেশে একটি পাথরের নিচে চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল।
হুজুর পাক রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসুস্থতার সময় এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ সুরা ফালাক এবং নাস নাযিল হয়। সূরা দুটি নাযিল হওয়ার পর আল্লাহর বিবরণ অনুযায়ী ওই কূপ থেকে তা তুলে আনা হয়।
তারপর ওই সূরা দুটি পড়ে গিরা খুললে তৎক্ষণাত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুস্থ হয়ে উঠেন। তাই এই সূরা দুটি পড়লে অনিষ্ট ও যাদু থেকে নিরাপদে থাকা যায়। হাদিস শরিফে প্রত্যেক ফরয নামাযের পর তা পড়ার গুরুত্ব এসেছে।
এক হাদিসে এসেছে, কোনো ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা সূরা ইখলাস ও এই দুই সূরা পড়লে সে সকল বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ থাকবে। (জামে তিরমিযি শরিফ, হাদিস : ২৯০৩; সুনানে আবু দাউদ,হাদিস : ১৫২৩; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৯২৬৬; সুনানে নাসাঈ ২/১৫৪; তাফসিরে ইবনে কাসীর ৪/৯১৭]
০৪। সূরা ইখলাস এর বাংলা অনুবাদ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ
কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ ৷
اللَّهُ الصَّمَدُ
আল্লাহুছ ছামাদ৷
لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ
লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ৷
وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ
ওয়ালাম ইয়াকিল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ৷
সুরা ইখলাস এর বাংলা অর্থ
- শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়,অতি দয়ালু।
- বলো, তিনিই আল্লাহ,এক-অদ্বিতীয়।
- আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন,সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী।
- তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি।।
- এবং তার সমতুল্য কেউ নেই।
০৫। সূরা লাহাব বাংলা অর্থ সহ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ।
تَبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ وَتَبَّ
তাব্বাত ইয়াদা আবি লাহাবিউ ওয়াতাব্ব।
مَا أَغْنَى عَنْهُ مَالُهُ وَمَا كَسَبَ
মা আগনা আ’নহুমালুহু ওয়ামা কাসাব।
سَيَصْلَى نَارًا ذَاتَ لَهَبٍ
সাইয়াছ্লা- না-রন্ যা-তা লাহাবিঁও।
وَامْرَأَتُهُ حَمَّالَةَ الْحَطَبِ
ওয়ামরা আতুহু হাম্মা লাতাল হাতাব।
فِي جِيدِهَا حَبْلٌ مِّن مَّسَدٍ
ফি যিদিহা হাবলুম্মিম মাসাদ।
সুরা লাহাব এর বাংলা অর্থ
- শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়,অতি দয়ালু।
- আবু লাহাবের হস্তদ্বয় ধ্বংস হোক এবং ধ্বংস হোক সে নিজে,
- কোন কাজে আসেনি তার ধন-সম্পদ ও যা সে উপার্জন করেছে।
- সত্বরই সে প্রবেশ করবে লেলিহান অগ্নিতে’।
- এবং তার স্ত্রীও-যে ইন্ধন বহন করে,’।
- তার গলদেশে খর্জুরের রশি নিয়ে।
০৬। সূরা নাসর বাংলা উচ্চারণ সহ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ।
إِذَا جَاء نَصْرُ اللَّهِ وَالْفَتْحُ
ইযা-জা-আ নাসরুল্লাহি ওয়াল ফাতহু,
وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُونَ فِي دِينِ اللَّهِ أَفْوَاجًا
ওয়ারা আইতান্নাসা ইয়াদখুলুনা ফীদীনিল্লাহি আফওয়াজা৷
فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ إِنَّهُ كَانَ تَوَّابًا
ফাসাব্বিহ বিহামদি রব্বিকা ওয়াস তাগফিরহু৷ ইন্নাহু কানা তাউয়্যাবা৷
সুরা নাসর এর বাংলা অর্থ
- শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়,অতি দয়ালু।
- যখন আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় আসবে,
- এবং আপনি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবেন,
- তখন আপনি আপনার পালনকর্তার পবিত্রতা বর্ণনা করুন এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাকারী।
০৭। সূরা কাফিরুন বাংলা উচ্চারণ সহ অর্থ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ
কুল ইয়া আইয়্যুহাল কাফিরুন। আবিদুনা মা -আ বুদ৷
لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ
লা-আবুদু মা তা বুদুন।
وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ
ওয়ালা আংতুম আবিদুনা মা আবুদ৷
وَلَا أَنَا عَابِدٌ مَّا عَبَدتُّمْ
ওলা লা আনা আবিদুম মা -আবাত্যুম
وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ
অলা য় আন্তুম্ ‘আ-বিদূনা মা য় আ’বুদ্।
لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِيَ دِينِ
লাকুম দীনুকুম অলিয়া দ্বীন৷
সূরা কাফিরুন এর বাংলা অর্থ
- শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়,অতি দয়ালু।
- বল,‘হে কাফিররা।
- তোমরা যার ‘ইবাদাত কর আমি তার ‘ইবাদাত করি না।
- এবং আমি যার ‘ইবাদাত করি তোমরা তার ‘ইবাদাতকারী নও’।
- আর তোমরা যার ‘ইবাদত করছ আমি তার ‘ইবাদাতকারী হব না’।
- আর আমি যার ‘ইবাদাত করি তোমরা তার ‘ইবাদাতকারী হবে না’।
- তোমাদের জন্য তোমাদের দীন আর আমার জন্য আমার দীন।’
০৮। সূরা কাওসার বাংলা উচ্চারণ সহ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ।
إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ
ইন্না আ তাইনা কালকাওছার।
فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ
ফাছাল্লি লি রাব্বিকা ওয়ানাহার
إِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الْأَبْتَرُ
ইন্না শা-নিয়াকা হুয়াল আবতার৷
সূরা কাউসার এর বাংলা অর্থ
- শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়,অতি দয়ালু।
- নিশ্চয় আমি আপনাকে কাওসার দান করেছি।
- অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কোরবানী করুন। ।
- যে আপনার শত্রু, সেই তো লেজকাটা, নির্বংশ।
০৯। সূরা মাউন বাংলা অনুবাদ সহ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ।
أَرَأَيْتَ الَّذِي يُكَذِّبُ بِالدِّينِ
আরায়াইতাল্লাজি ইউকাযযিবু বিদ্দীন।
فَذَلِكَ الَّذِي يَدُعُّ الْيَتِيمَ
ফাযালিকাল্লাযী ইয়াদু’য্যুল ইয়াতীম।
وَلَا يَحُضُّ عَلَى طَعَامِ الْمِسْكِينِ
ওয়ালা ইয়াহুদ্দু আলা তো য়ামিল মিসকীন।
فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّينَ
ফাওয়াইলুল্লিল মুছাল্লীন।
الَّذِينَ هُمْ عَن صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ
আল্লাযীনা হুম আনছলাতিহিম্ সাহুন।
الَّذِينَ هُمْ يُرَاؤُونَ
আল্লাযীনা হুম্ ইউরা-উনা।
وَيَمْنَعُونَ الْمَاعُونَ
ওয়া ইয়ামনা য়ূনাল মাউন।
সুরা মাউন এর বাংলা অর্থঃ
- শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়,অতি দয়ালু।
- আপনি কি দেখেছেন তাকে,যে বিচারদিবসকে মিথ্যা বলে?
- সে সেই ব্যক্তি, যে এতীমকে গলা ধাক্কা দেয়।
- এবং মিসকীনকে অন্ন দিতে উৎসাহিত করে না।
- অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাযীর,।
- যারা তাদের নামায সম্বন্ধে বে-খবর;
- যারা তা লোক-দেখানোর জন্য করে।
- এবং নিত্য ব্যবহার্য্য বস্তু অন্যকে দেয় না।
১০। সূরা হুমাযাহ বাংলা উচ্চারণ সহ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ।
وَيْلٌ لِّكُلِّ هُمَزَةٍ لُّمَزَةٍ
ওয়াইলুলিলকুল্লি হুমাঝাতিল লুমাঝাহ ।
الَّذِي جَمَعَ مَالًا وَعَدَّدَهُ
আল্লাযী জামা‘আ মা-লাওঁ‘ওয়া ‘আদ্দাদাহ।
يَحْسَبُ أَنَّ مَالَهُ أَخْلَدَهُ
ইয়াহছাবুআন্না মা-লাহূআখলাদাহ।
كَلَّا لَيُنبَذَنَّ فِي الْحُطَمَةِ
কাল্লা-লাইউমবাযান্না ফিল হুতামাহ।
وَمَا أَدْرَاكَ مَا الْحُطَمَةُ
ওয়ামাআদরা-কা মাল হুতামাহ।
نَارُ اللَّهِ الْمُوقَدَةُ
না-রুল্লা-হিল মূকাদাহ
الَّتِي تَطَّلِعُ عَلَى الْأَفْئِدَةِ
আল্লাতী তাত্তালি‘উ আলাল আফইদাহ।
إِنَّهَا عَلَيْهِم مُّؤْصَدَةٌ
ইন্নাহা-‘আলাইহিম মু’সাদাহ
فِي عَمَدٍ مُّمَدَّدَةٍ
ফী ‘আমাদিম মুমাদ্দাদাহ ।
সূরা হুমাযাহ এর বাংলা অর্থ
- শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়,অতি দয়ালু।
- প্রত্যেক পশ্চাতে ও সম্মুখে পরনিন্দাকারীর দুর্ভোগ,
- যে অর্থ সঞ্চিত করে ও গণনা করে
- সে মনে করে যে, তার অর্থ চিরকাল তার সাথে থাকবে!
- কখনও না, সে অবশ্যই নিক্ষিপ্ত হবে পিষ্টকারীর মধ্যে।
- আপনি কি জানেন, পিষ্টকারী কি?
- এটা আল্লাহর প্রজ্জ্বলিত অগ্নি,
- যা হৃদয় পর্যন্ত পৌছবে।
- এতে তাদেরকে বেঁধে দেয়া হবে,
- লম্বা লম্বা খুঁটিতে।
১১। সূরা কুরাইশ বাংলা উচ্চারণ সহ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ।
لِإِيلَافِ قُرَيْشٍ
লিঈলাফি ক্বূরাইশিন।
إِيلَافِهِمْ رِحْلَةَ الشِّتَاء وَالصَّيْفِ
ঈলাফিহিম রিহলাতাশ শিতাই ওয়াছ্ছাইফি।
فَلْيَعْبُدُوا رَبَّ هَذَا الْبَيْتِ
ফালইয়া’বুদু রাব্বাহাযাল বাইত।
الَّذِي أَطْعَمَهُم مِّن جُوعٍ وَآمَنَهُم مِّنْ خَوْفٍ
আল্লাযী আত্ব’আমাহুম মিন জু-ইও ওয়া আমানাহুম মিন খাওফ৷
সুরা কুরাইশ এর বাংলা অর্থ
- শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়,অতি দয়ালু।
- যেহেতু কুরাইশের চিরাচরিত অভ্যাস আছে।
- অভ্যাস আছে তাদের শীত ও গ্রীষ্ম সফরের।
- অতএব তারা ইবাদত করুক এই গৃহের প্রতিপালকের।
- যিনি তাদেরকে ক্ষুধায় আহার দিয়েছেন এবং ভয় হতে দিয়েছেন নিরাপত্তা।
১২। সূরা ফীল বাংলা উচ্চারণ সহ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ।
أَلَمْ تَرَ كَيْفَ فَعَلَ رَبُّكَ بِأَصْحَابِ الْفِيلِ
আলাম তারা কাইফা ফা’আলা রাব্বুকা বিআসহাবিল ফী-ল।
أَلَمْ يَجْعَلْ كَيْدَهُمْ فِي تَضْلِيلٍ
আলাম ইয়াজ’আল কাইদাহুম ফী তাদ্বলীলিও।
وَأَرْسَلَ عَلَيْهِمْ طَيْرًا أَبَابِيلَ
ওয়া আরছালা ‘আলাইহিম তাইরান আবাবীল।
تَرْمِيهِم بِحِجَارَةٍ مِّن سِجِّيلٍ
তারমীহিম বিহিজারাতিম মিন ছিজ্জলিন।
فَجَعَلَهُمْ كَعَصْفٍ مَّأْكُولٍ
ফাজা-আলাহুম কা’আছফিম মা’কুল।
সুরা ফিল এর বাংলা অর্থ
- শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়,অতি দয়ালু।
- আপনি কি দেখেননি আপনার পালনকর্তা হস্তীবাহিনীর সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছেন?
- তিনি কি তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেন নি?
- তাদের বিরুদ্ধে তিনি ঝাঁকে ঝাঁকে পাখী প্রেরণ করেছিলেন।
- যারা তাদের উপর পোড়া মাটির পাথর নিক্ষেপ করেছিল।
- অতঃপর তিনি তাদেরকে করেছিলেন চিবানো ঘাসের মত।
১৩। সূরা আসর এর বাংলা অনুবাদ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ।
وَالْعَصْرِ
ওয়াল ‘আসর।
إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ
ইন্নাল ইনছা-না লাফী খুছর।
إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ
ইল্লাল্লাযীনা আ-মানূওয়া ‘আমিলুসসা-লিহা-তি ওয়া তাওয়া-সাওবিল হাক্কি ওয়া তাওয়া-সাও বিসসাবরি।
সুরা আসর এর বাংলা অর্থ
- শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়,অতি দয়ালু।
- কসম যুগের (সময়ের),
- নিশ্চয় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত;
- কিন্তু তারা নয়, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে তাকীদ করে সত্যের এবং তাকীদ করে সবরের।
১৪। সূরা ক্বদর এর বাংলা উচ্চারণ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ।
إِنّا أَنزَلناهُ في لَيلَةِ القَدرِ
ইন্না আনযালনাহু ফী লাইলাতিল ক্বাদরি।
وَما أَدراكَ ما لَيلَةُ القَدرِ
ওয়ামা আদরাকা মা লাইলাতুল ক্বদরি।
لَيلَةُ القَدرِ خَيرٌ مِن أَلفِ شَهرٍ
লাইলাতুল ক্বদরি খাইরুম মিন্’আলফি শাহর।
تَنَزَّلُ المَلائِكَةُ وَالرّوحُ فيها بِإِذنِ رَبِّهِم مِن كُلِّ أَمرٍ
তানায যালুল মালাইকাতু ওয়ার রুহ ফিহা বিইযনি রাব্বিহীম মিনকুল্লি আমরিন।
سَلامٌ هِيَ حَتّى مَطلَعِ الفَجرِ
সালামুন হিয়া হাত্তা মাত্বলাইল ফাজ্বর।
সুরা কদর এর বাংলা অর্থ
- শুরু করছি আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়,অতি দয়ালু।
- নিশ্চয়ই আমি এটি নাযিল করেছি ‘লাইলাতুল ক্বাদরে।’
- তোমাকে কিসে জানাবে ‘লাইলাতুল ক্বাদর’ কী?
- লাইলাতুল কদর’ হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম।
- সে রাতে ফেরেশতারা ও রূহ (জিবরাইল) তাদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করে।
- শান্তিময় সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত।
- প্রতি দুই রাকাত নামাজের পর একটি বৈঠক দিতে হয়। উক্ত বৈঠকে তাশাহুদ পাঠ করা সুন্নাহ। নিম্নে তাশাহুদটি দেওয়া হলো।
১৫। তাশাহুদ (আওাহিয়্যাতু) | নামাজের ছোট সূরা
اَلتَّحِيَّاتُ لِلَّهِ، وَالصَّلَوَاتُ، وَالطَّيِّبَاتُ، اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ، أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ
তাশাহুদের বাংলা উচ্চারণ
আত্তাহিয়্যা-তু লিল্লা-হি ওয়াস্সালাওয়া-তু ওয়াত্তায়্যিবা-তু আস্সালা-মু ‘আলাইকা আইয়্যূহান নাবিয়্যূ ওয়া রা'হমাতুল্লা-হি ওয়া বারাকা-তুহু। আস্সালা-মু ‘আলাইনা- ওয়া ‘আলা ‘ইবা-দিল্লা-হিস সা-লিহীন। আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আব্দুহু ওয়া রাসূলুহু
তাশাহুদের বাংলা অর্থ
- সমস্ত মৌখিক, দৈহিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহ্র জন্য। হে নবী!
- আপনার প্রতি সালাম এবং আল্লাহ্র রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক।
- সালাম আমাদের প্রতি এবং আল্লাহ্র নেক বান্দাগণের প্রতি।
- আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, আল্লাহ্ ব্যতীত আর কোন মাবূদ নাই।
- এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহ্র বান্দা ও রাসূল।
বিভিন্ন সাহাবী থেকে (বিভিন্ন শব্দে) তাশাহুদ বর্ণিত হয়েছে। ইবনু মাসউদ (রা.) বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর পেছনে সালাত আদায়ের সময় বসলে বলতাম: আল্লাহ্র উপর সালাম। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদিন আমাদেরকে বললেন: আল্লাহ্ই হচ্ছেন সালাম (কাজেই, তাঁকে সালাম প্রদান করা ঠিক নয়)। অতএব, তোমরা যখন সালাতের মধ্যে বসবে তখন বলবে: (দোয়াটি উপরে উল্লেখিত হয়েছে) সহিহ বুখারী হাদিস নং ৭৩৮১
১৬। দুরুদ শরিফ | ২৬টি ছোট সূরা
নামাজের শেষ বৈঠকে তাশাহুদের পরে দুরুদ পাঠ করতে হয়। নিম্নে দুরুদটি দেওয়া হলো।
اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَّعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَّعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
দুরুদ এর বাংলা উচ্চারণ
আল্লা-হুম্মা সাল্লি ‘আলা- মুহাম্মাদিউ ওয়া ‘আলা- আ-লি মুহাম্মাদিন কামা- সাল্লাইতা ‘আলা- ইব্রাহীমা ওয়া ‘আলা- আ-লি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লা-হুম্মা বা-রিক ‘আলা- মুহাম্মাদিউ ওয়া ‘আলা- আ-লি মুহাম্মাদিন, কামা- বা-রাকতা ‘আলা- ইব্রাহীমা ওয়া ‘আলা- আ-লি ইব্রাহীমা ইন্নাকা 'হামীদুম্ মাজীদ
দুরুদ এর বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ্! তুমি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর রহমত বর্ষণ করো, যেভাবে রহমত বর্ষণ করেছো ইবরাহীম (আ.) ও তাঁর পরিবারবর্গের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ্! বরকত অবতীর্ণ করো মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তাঁর পরিবারবর্গের উপর, যেভাবে তুমি বরকত নাযিল করেছো ইবরাহীম (আ.) ও তাঁর পরিবার-পরিজনের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত ও সম্মানিত’।
কা‘ব্ ইবনু ‘উজ্রহ্ (রা.) বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আপনাদের উপর অর্থাৎ আহলে বাইতের উপর কিভাবে দরুদ পাঠ করতে হবে? কেননা, আল্লাহ্ তো (কেবল) আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন, আমরা কিভাবে আপনার উপর সালাম করব। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা এভাবে বলো - (দোয়াটি উপরে উল্লেখিত হয়েছে) রেফারেন্স: সহিহ বুখারি হাদিস নং ৩৩৭০
১৭। হাদিসে বর্ণিত আরেকটি দুরুদ
اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَأَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ، وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَأَزْوَاجِهِ وَذُرِّيَّتِهِ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ
দুরুদের বাংলা উচ্চারণ
আল্লা-হুম্মা সাল্লি ‘আলা- মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আঝওয়া-জিহি ওয়া যুররিয়্যাতিহি কামা- সাল্লাইতা ‘আলা- আ-লি ইব্রাহীমা, ওয়া বা-রিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আঝওয়া-জিহি ওয়া যুররিয়্যাতিহি কামা- বা-রাক্তা ‘আলা- আ-লি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ
দুরুদের বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ্! শান্তি বর্ষণ করো মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপর, এবং তাঁর স্ত্রী ও বংশধরদের উপর, যেভাবে শান্তি বর্ষণ করেছো ইবরাহীম (আ.)-এর পরিবারের উপর আর অনুগ্রহ বর্ষণ করো মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপর, এবং তাঁর স্ত্রী ও বংশধরদের উপর, যেভাবে অনুগ্রহ বর্ষণ করেছো ইবরাহীম (আ.)-এর পরিবারের উপর তুমি প্রশংসিত, মহিমান্বিত।
আবূ হামিদ সাইদি (রা.) থেকে বর্ণিত, তারা জিজ্ঞাসা করেন, “হে আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আমরা আপনার জন্য কীভাবে দরুদ পাঠ করব?” তখন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তোমরা বলো - (দোয়াটি উপরে উল্লেখিত হয়েছে) সহিহ বুখারি হাদিস নং ৩৩৬৯
১৮। দোয়ায়ে মাসূরা
নামাজের শেষ বৈঠকে তাশাহুদ এবং দুরুদ পড়ার পর সালাম ফেরানোর আগে কিছু দোয়া পড়তে হয়। এই দোয়া গুলোকে দোয়ায়ে মাসূরা বলে। তেমন কিছু হাদিসে বর্ণিত দোয়া নিম্নে দেওয়া হলো।
সহিহ বুখারির ৮৩৪ নং হাদিসে এসেছে, আবু বকর (রা.) রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলেন, আমাকে একটি দোয়া শিখিয়ে দিন যা আমি নামাযের মধ্যে পড়ব, তখন তিনি এ দোয়াটি শিখিয়ে দেন -
اَللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِيْ ظُلْمًا كَثِيْرًا وَلَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِيْ إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ
বাংলা উচ্চারণ
আল্লা-হুম্মা ইন্নী যালাম্তু নাফ্সী যুলমান কাছিরান ওয়ালা- ইয়াগফিরুয যুনূবা ইল্লা- আনতা, ফাগ্ফিরুলী মাগফিরাতান মিন ‘ইনদিকা ওয়ার’হামনী ইন্নাকা আনতাল গাফূরুর্ রাহীম
বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ্! আমি নিজের উপর অনেক যুলুম করেছি, আর আপনি ছাড়া গুনাহসমূহ কেউই ক্ষমা করতে পারে না, সুতরাং আপনি নিজ গুণে আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমাকে রহম করুন, আপনি বড়ই ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
১৯। দোয়া মাসূরা ২
সহিহ মুসলিম কিতাবে ৫৮৮ নং হাদিসে আরেকটি দোয়া বর্ণিত হয়েছে। যেখানে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “তোমরা যখন তাশাহুদ শেষ করবে, তখন চারটি বিষয় থেকে আল্লাহ্র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে বলবে- দোয়াটি নিম্নে দেওয়া হলো।
اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَمِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ
বাংলা উচ্চারণ
আল্লা-হুম্মা, ইন্নী আ‘উযু বিকা মিন ‘আযা-বি জাহান্নাম, ওয়া মিন ‘আযা-বিল ক্বাব্র, ওয়া মিন ফিতনাতিল মা’হ্ইয়া- ওয়াল মামা-তি ওয়া মিন শার্রি ফিতনাতিল মাসী'হিদ দাজ্জা-ল
বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ্, আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই- জাহান্নামের আযাব থেকে, কবরের আযাব থেকে, জাগতিক জীবনের ও মৃত্যুর ফিতনা (পরীক্ষা বা বিপদ) থেকে এবং দাজ্জালের অমঙ্গল থেকে।
২০। দোয়া মাসূরা ৩
মুসলিম শরিফে ৭৭১ নং হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নামাযের শেষে তাশাহুদ ও সালামের মধ্যবর্তী সময়ে এ কথাগুলো বলতেন -
اَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ وَمَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ وَمَا أَسْرَفْتُ وَمَا أَنْتَ أَعْلَمُ بِهِ مِنِّي أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ
বাংলা উচ্চারণ
আল্লা-হুম্মাগ্ফির লী মা- ক্বাদ্দামতু ওয়ামা- আখ্খারতু ওয়ামা- আস্রারতু ওয়ামা- আ’লান্তু ওয়ামা- আস্রাফতু ওয়ামা- আনতা আ’লামু বিহী মিন্নী। আনতাল মুক্বাদ্দিমু ওয়া আনতাল মুআখ্খিরু লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতা
বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ্, আপনি ক্ষমা করে দেন আমার আগের পাপ, পরের পাপ, গোপন পাপ, প্রকাশ্য পাপ, আমার বাড়াবাড়ি এবং যে সকল পাপের কথা আপনি আমার চেয়ে বেশী জানেন। আপনিই অগ্রবর্তী করেন এবং আপনিই পিছিয়ে দেন। আপনি ছাড়া কোন প্রকৃত উপাস্য নেই।
২১। দোয়ায়ে কুনুত বাংলা উচ্চারণ সহ
اَللَّهُمَّ إِيَّاكَ نَعْبُدُ، وَلَكَ نُصَلِّي وَنَسْجُدُ، وَإِلَيْكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ، نَرْجُو رَحْمَتَكَ، وَنَخْشَى عَذَابَكَ، إِنَّ عَذَابَكَ بِالْكَافِرِينَ مُلْحَقٌ، اَللَّهُمَّ إِنَّا نَسْتَعِينُكَ، وَنَسْتَغْفِرُكَ، وَنُثْنِي عَلَيْكَ الْخَيْرَ، وَلَا نَكْفُرُكَ، وَنُؤْمِنُ بِكَ، وَنَخْضَعُ لَكَ، وَنَخْلَعُ مَنْ يَكْفُرُكَ
দোয়া কুনুতের বাংলা উচ্চারণ
আল্লা-হুম্মা ইয়্যাকা না‘বুদু, ওয়ালাকা নুসাল্লী, ওনাসজুদু, ওয়া ইলাইকা নাস‘আ, ওয়া নাহ্ফিদু, নারজূ রাহ্মাতাকা, ওয়া নাখশা ‘আযা-বাকা, ইন্না ‘আযা-বাকা বিলকা-ফিরীনা মুলহাক্ব। আল্লা-হুম্মা ইন্না নাসতা‘ঈনুকা ওয়া নাসতাগফিরুকা, ওয়া নুছনী ‘আলাইকাল খাইর, ওয়ালা-নাকফুরুকা, ওয়ানূ’মিনু বিকা, ওয়া নাখদ্বা‘উ লাকা, ওয়ানাখলা‘উ মাই ইয়াকফুরুক
দোয়া কুনুতের বাংলা অর্থ
হে আল্লাহ্! আমরা আপনারই ইবাদত করি; আপনার জন্যই সালাত আদায় করি ও সিজদা করি; আমরা আপনার দিকেই দৌড়াই এবং দ্রুত অগ্রসর হই; আমরা আপনার করুণা লাভের আকাঙ্ক্ষা করি এবং আপনার শাস্তিকে ভয় করি।
নিশ্চয় আপনার শাস্তি কাফেরদেরকে স্পর্শ করবে। হে আল্লাহ্! নিশ্চয় আমরা আপনার কাছে সাহায্য চাই, আপনার কাছে ক্ষমা চাই, আপনার উত্তম প্রশংসা করি, আপনার সাথে কুফরি করি না, আপনার উপর ঈমান আনি, আপনার প্রতি অনুগত হই, আর যে আপনার সাথে কুফরি করে আমরা তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করি। (সূত্র সহিহ। ইরওয়াউল গালীলঃ ২/১৭০, বায়হাকীঃ আস-সুনানুল কবরা- ২/২১১)
একজন মুসলিমের দৈনন্দিন ইবাদতের মধ্যে বড় ইবাদত হলো নামাজ। সহি শুদ্ধ নামাজ আদায়ের জন্য অবশ্যই কিছু সুরা জেনে রাখা উচিত। বিশেষ করে ছোট সূরা সমূহ বাংলা উচ্চারণ সহ মুখস্থ রাখা।
কেননা আমরা জানি সহি শুদ্ধ সুরা ছাড়া নামাজ সঠিকভাবে আদায় হয় না। তাই উপরের উল্লেখিত নামাজ পড়ার জন্য ছোট ছোট সূরা গুলো যে কারোরই সহজে মুখস্থ হবে।
তাই সকলের উচিত ছোট সূরা সমূহ বাংলা উচ্চারণ সহ জেনে রাখা। আসুন আমরা নিয়মিত সালাত আদায়ের চেষ্টা করি।