লোক প্রশাসনের বিষয়বস্তু আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো লোক প্রশাসনের বিষয়বস্তু আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের লোক প্রশাসনের বিষয়বস্তু আলোচনা কর।।
লোক প্রশাসনের বিষয়বস্তু আলোচনা কর |
লোক প্রশাসনের বিষয়বস্তু আলোচনা কর
উত্তর ভূমিকা : বাংলাদেশের লোকপ্রশাসন ব্যবস্থা ব্রিটিশ ভারতের লোকপ্রশাসন ব্যবস্থার উত্তরসূরি। বাংলাদেশের লোকপ্রশাসনের বিবর্তন আলোচনার ক্ষেত্রে ভারতীয় উপমহাদেশের লোকপ্রশাসনের বিভিন্ন দিক আলোচনা করা প্রয়োজন ।
মূলত বাংলাদেশের লোকপ্রশাসন হলো Administration as a Cooperation বা সহযোগিতামূলক প্রশাসন। তবে এ বিষয়ে বিতর্ক রয়েছে।
বাংলাদেশে লোকপ্রশাসনের ঐতিহাসিক পটভূমি : বাংলাদেশের বর্তমান লোকপ্রশাসন ব্রিটিশ ভারতের লোকপ্রশাসনের যোগ্য উত্তরসূরি বললে অত্যুক্তি হবে না। বাংলাদেশের লোকপ্রশাসনের ঐতিহাসিক পটভূমি আলোচনার পূর্বে ভারতীয় লোকপ্রশাসনের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন ।
ভারতীয় লোকপ্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায় : ভারতীয় লোকপ্রশাসন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সরকারের প্রণীত বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করে বর্তমান পর্যায়ে এসেছে। ১৮৮৫ সালের (Bengal Local Self-Government Act) তিনটি পর্যায় যথা :
ক. জেলা বোর্ড,
খ, লোকাল বোর্ড,
গ. ইউনিয়ন কমিটি।
এ তিনিটি পর্যায়ে বিভক্ত করা হয়। পরবর্তীতে ১৯০৭ সালে ভারত সরকার কেন্দ্র ও প্রদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক সম্পর্ক নিরূপণের জন্য এবং শাসনব্যবস্থায় বিকেন্দ্রীয়করণ নীতি কার্যকর করার মানসে C. E. Hobhous এর নেতৃত্বে একটি রাজকীয় কমিশন (Royal Commission) গঠন করে। যা ১৯১৮ সালে মন্টেগু চেমসফোর্ড রিপোর্টে কার্যকর করা হয়।
পাকিস্তানের মৌলিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা : তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান প্রদত্ত ১৯৫৯ সালের মৌলিক গণতন্ত্র আদেশে পূর্বের সকল স্বায়ত্তশাসনমূলক প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক পরিবর্তন সাধন করে।
এটি দ্বারা স্থানীয় শাসনের ক্ষেত্রে ৫টি নতুন স্তর সৃষ্টি করা হয় । গ্রাম পর্যায়ে এর সর্বনিম্ন স্তর ছিল ইউনিয়ন কাউন্সিল ও শহর পর্যায়ে ইউনিয়ন ও টাউন কমিটি ।
দ্বিতীয় স্তরে ছিল থানা কাউন্সিল, তৃতীয় স্তরে ছিল জেলা কাউন্সিল, চতুর্থ ও পঞ্চম পর্যায়ে ছিল যথাক্রমে ডিভিশনাল কাউন্সিল ও প্রাদেশিক উপদেষ্টা কাউন্সিল । অবশ্য শেষ স্তরটি ১৯৬২ সালের সংবিধান প্রণয়নের পর বাতিল করা হয়।
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের লোকপ্রশাসন : বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ভারতীয় লোকপ্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায় ও পাকিস্তান আমলে প্রণীত মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থা ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। বর্তমানে বাংলাদেশে যে লোকপ্রশাসন বা স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা বিদ্যমান সেটি মূলত মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থার নয়া সংস্করণ।
১৯৭২ থেকে এর যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৯৮২ সালে বাংলাদেশের লোকপ্রশাসনের যে আমূল পরিবর্তন ঘটে এরশাদ সরকারের উপজেলা ব্যবস্থা প্রণয়ন, যেমন- প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ। এছাড়া বাংলাদেশ সরকারের লোক নিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কর্মকমিশন প্রতিষ্ঠা ছিল একটি মাইলফলক।
পরবর্তীতে বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামো পরিচালনায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের মন্ত্রণালয়ের সংখ্যা ৪১টি। বাংলাদেশের বর্তমান স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা তিন স্তরবিশিষ্ট, এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো ইউনিয়ন পরিষদ।
এটি বাংলাদেশের লোকপ্রশাসনের একটি নয়া মেরুকরণ বললে অত্যুক্তি হবে না।বাংলাদেশের লোকপ্রশাসনের বিবর্তন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে মূলত ১৯৫৬ সালের পাকিস্তানের মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থা প্রণয়নের পর থেকে।
বর্তমানে যে প্রশাসনব্যবস্থা পরিচালিত হয় তা মূলত মৌলিক গণতন্ত্র ও পরবর্তীতে বিভিন্ন সংস্করণের ফলস্বরূপ। তবে বাংলাদেশের লোকপ্রশাসনের বিবর্তনে বিভিন্ন কমিশনের ভূমিকা ব্যাপক।
ব্রিটিশ শাসনামলে প্রণীত লি কমিশন, ওয়েলিংটন কমিশন প্রভৃতির কথা এ প্রসঙ্গে প্রণিধানযোগ্য। বর্তমানে বাংলাদেশে উপজেলা ব্যবস্থা স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রশাসনে গতিশীলতা বৃদ্ধি করেছে ব্যাপকভাবে ।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, আধুনিক যুগে মানুষ তার জীবনের প্রতিটি স্তরে প্রশাসনের ওপর নির্ভরশীল । লোকপ্রশাসন দেশের শাসনব্যবস্থার ধারাবাহিকতা রক্ষা করে। সরকার পরিবর্তনের মাঝে শূন্যতা পূরণ করে লোকপ্রশাসন ।
সরকারের আমূল পরিবর্তন ঘটলেও প্রশাসন থাকে প্রায় অপরিবর্তিত। বাংলাদেশ ঔপনিবেশিক শক্তির নাগপাশ থেকে মুক্তি পেয়েছে সত্যি কিন্তু বিদেশি শাসনব্যবস্থা দ্বারা আজও প্রভাবিত হয়ে আসছে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ লোক প্রশাসনের বিষয়বস্তু আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম লোক প্রশাসনের বিষয়বস্তু আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।