বেসরকারি প্রশাসন বলতে কি বুঝায় | সরকারি ও বেসরকারি প্রশাসনের সাদৃশ্যসমূহ লেখ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বেসরকারি প্রশাসন বলতে কি বুঝায় | সরকারি ও বেসরকারি প্রশাসনের সাদৃশ্যসমূহ লেখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বেসরকারি প্রশাসন বলতে কি বুঝায় | সরকারি ও বেসরকারি প্রশাসনের সাদৃশ্যসমূহ লেখ।
বেসরকারি প্রশাসন বলতে কি বুঝায় | সরকারি ও বেসরকারি প্রশাসনের সাদৃশ্যসমূহ লেখ |
বেসরকারি প্রশাসন বলতে কি বুঝায় | সরকারি ও বেসরকারি প্রশাসনের সাদৃশ্যসমূহ লেখ
উত্তর ভূমিকা : প্রশাসন হলো যেকোনো রাষ্ট্র, সরকার অথবা সংগঠনের প্রাণ। এ প্রশাসন কখনও সরকারি আবার কখনও বেসরকারি কর্মচারী বা ব্যক্তির মাধ্যমে চালিত হয়।
লোকপ্রশাসন হলো অর্থনীতির এমন একটি শাখা যার প্রধান উদ্দেশ্যই হচ্ছে সেবামূলক। অপরদিকে, বেসরকারি প্রশাসন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান নিয়ে কাজ করে থাকে।
রাষ্ট্রের দুটি দিক যেমন— নীতিনির্ধারণ ও নীতিপ্রণয়ন বা প্রয়োগ এর মাধ্যমে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই দুই প্রকার প্রশাসনের মধ্যে বেশকিছু সাদৃশ্য লক্ষ করা যায় ।
বেসরকারি প্রশাসন : বেসরকারি প্রশাসনের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Private Administration. এটা ব্যক্তিগত প্ৰশাসন নামেও পরিচিত । এ ধরনের প্রশাসন সাধারণত ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিচালিত হয়। বিভিন্ন তাত্ত্বিক বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বেসরকারি প্রশাসনকে সংজ্ঞায়িত করেছেন ।
প্রামাণ্য সংজ্ঞা :
ফেলিক্স এ. নাইগ্রো (Felix A. Nigro) বলেন, “বেসরকারি প্রশাসন হলো ঐ ধরনের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা যা জনগণের কাছে সরাসরি দায়ী থেকে নিজেদের স্বার্থে কাজ করে এবং জনকল্যাণের চেয়ে প্রতিষ্ঠানের কল্যাণকে বেশি গুরুত্ব দেয়।
”ফিফনার (Pfiffner) এর মতে, “বেসরকারি প্রশাসন এমন এক ধরনের কার্যাবলির ব্যবস্থাপনাকে বুঝায় যা ব্যক্তি অথবা ব্যক্তি সমষ্টি, ক্লাব, কোম্পানি বা কর্পোরেশন দ্বারা পরিচালিত হয়।”
বিদ্যাভূষণ (Vidaya Bhushan) বলেন, "বেসরকারি প্রশাসন হলো সংঘবদ্ধ কর্ম প্রচেষ্টা যা প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করে যেখানে প্রধান উদ্দেশ্য হলো মুনাফা অর্জন।”
Dictionary of Social Science এর ভাষায়, বেসরকারি প্রশাসন হলো এমন এক সমন্বিত কর্ম যা বেসরকারি নীতিমালা বাস্তবায়ন করে।
সুতরাং বেসরকারি প্রশাসন হলো এমন এক ধরনের প্রয়াস যেখানে প্রশাসন বেসরকারি নীতিমালার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়, এবং যার উদ্দেশ্য হলো প্রাতিষ্ঠানিক মুনাফা অর্জন।
© বেসরকারি প্রশাসনের সাথে লোকপ্রশাসনের সাদৃশ্য : নিম্নে উভয় প্রকার প্রশাসনের মধ্যকার সাদৃশ্যসমূহ আলোচনা করা হলো :
১. উৎপত্তিগত সাদৃশ্য : লোকপ্রশাসন ও বেসরকারি প্রশাসন উভয়েরই উৎপত্তি সামাজিক বিজ্ঞান থেকে। সুতরাং উভয়ের মধ্যে সাদৃশ্য বিদ্যমান।
২. কাঠামোর অভিন্নতা : উভয় প্রশাসনের প্রশাসনিক কাঠামোতে খুব বেশি পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না।
৩. কার্যাবলির অভিন্নতা : নামকরণের দিক থেকে উভয় প্রশাসনের মধ্যে পার্থক্য থাকলেও প্রশাসনিক কার্যাবলিতে তেমন কোনো পার্থক্য লক্ষ করা যায় না। কিছু কিছু সরকারি প্রকৃতির কাজ বেসরকারি প্রশাসন আবার কিছু বেসরকারি প্রকৃতির কাজ সরকারি প্রশাসন করে থাকে।
৪. প্রশাসনিক কাঠামোর অভিন্নতা : সরকারি ও বেসরকারি প্রশাসনের ক্ষেত্রে প্রায় একই প্রশাসনিক কাঠামো বিদ্যমান । যেমন— শ্রম বিভাগের নিয়ন্ত্রণ, পদসোপান, লাইন ও স্টাফ নীতি, ব্যবস্থাপনাগত দিক প্রভৃতি ।
৫. সাংগঠনিক নীতিমালার অভিন্নতা : প্রত্যেক সংগঠন পরিচালনার জন্য এর কিছু নীতি নির্ধারণ করা হয়। সেক্ষেত্রে উভয় প্রকার প্রশাসন তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য বিশেষ কিছু নীতি অনুসরণ করে।
৬. পরিকল্পনাগত অভিন্নতা : উভয় প্রকার প্রশাসনই সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য সঠিক পরিকল্পনা, সংগঠন ও উপযুক্ত নিয়ন্ত্রণ, আরোপ করে। পরিকল্পনা প্রণয়নে পদ্ধতিগত অনেক মিল আছে।
৭. কাজের ধরন ও প্রকৃতি : সরকারি প্রশাসন ও বেসরকারি প্রশাসনের কার্যাবলি ও প্রকৃতিগত দিকটা প্রায় কাছাকাছির । কিছু কিছু কলাকৌশল, পরিসংখ্যান, হিসাবনিকাশ, অফিস ব্যবস্থাপনা ও কার্যপদ্ধতি উভয় প্রশাসনে প্রায় একই রকমের।
৮. বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা : এফ ডব্লিউ টেইলর (FW Taylor) এর বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা উভয় প্রশাসনের ক্ষেত্রে অনুসরণ করা হয়।
৯. যোগাযোগ ও সম্পর্ক রক্ষায় : যেকোনো প্রশাসনের উচ্চ হতে নিম্ন পর্যায় পর্যন্ত কর্মচারীদের মধ্যকার পারস্পরিক যোগাযোগ ও সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকারি ও বেসরকারি উভয় প্রশাসনে এ ধরনের অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক লক্ষ করা যায়।
১০. প্রশিক্ষণ : প্রশাসনের কর্মচারীদের দক্ষতা, মেধা, যোগ্যতা, বুদ্ধিমত্তা প্রভৃতি বৃদ্ধি করে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে খাপখাওয়ানোর জন্য প্রশিক্ষণ অত্যন্ত জরুরি। তাই উভয় প্রশাসনই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে।
১১. তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার : বর্তমান আধুনিক বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই উভয় প্রশাসনই প্রযুক্তির ছোঁয়ায় নতুন নতুন কার্যক্রম হাতে নিচ্ছে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, লোকপ্রশাসন ও বেসরকারি প্রশাসনের মধ্যে বহুবিধ সাদৃশ্য। বিদ্যমান।
লোকপ্রশাসন ও বেসরকারি প্রশাসনের গুরুত্ব যেকোনো রাষ্ট্রের জন্যই অপরিহার্য। লোকপ্রশাসনের সহযোগী হিসেবেই আবির্ভূত হয়েছে বেসরকারি প্রশাসন। তাই উভয়ের মধ্যে কিছু সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ বেসরকারি প্রশাসন বলতে কি বুঝায় | সরকারি ও বেসরকারি প্রশাসনের সাদৃশ্যসমূহ লেখ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বেসরকারি প্রশাসন বলতে কি বুঝায় | সরকারি ও বেসরকারি প্রশাসনের সাদৃশ্যসমূহ লেখ। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।