উপাত্ত বিশ্লেষণে কম্পিউটার ব্যবহারের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো উপাত্ত বিশ্লেষণে কম্পিউটার ব্যবহারের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের উপাত্ত বিশ্লেষণে কম্পিউটার ব্যবহারের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা কর।
উপাত্ত বিশ্লেষণে কম্পিউটার ব্যবহারের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা কর |
উপাত্ত বিশ্লেষণে কম্পিউটার ব্যবহারের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা কর
উত্তর ভূমিকা : সামাজিক গবেষণায় উপাত্ত বিশ্লেষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। কিন্তু এর পরিধি ব্যাপক ও বিস্তৃত । গবেষণার এ পর্যায়ে বিষয়বস্তুর বর্ণনা, ব্যাখ্যা ও ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়।
যে অনুমান পরীক্ষা করার লক্ষ্যে গবেষণাকর্ম শুরু হয়েছিল, তথ্য বা উপাত্ত বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে তা পরীক্ষিত হয়। এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিদ্যমান তত্ত্ব যাচাই করা হয় এবং নতুন তত্ত্ব নির্মাণ করা হয় । কাজেই তত্ত্ব বিশ্লেষণ গবেষণার একটি মৌলিক ও সৃজনশীল পর্যায় ।
উপাত্ত বিশ্লেষণে কম্পিউটারের ব্যবহারের গুরুত্ব : তথ্য বিশ্লেষণের কাজে কম্পিউটারের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কম্পিউটার ব্যবহারের মাধ্যমে জনবলের ব্যবহার ও পরিশ্রমের মাত্রা কল্পনাতীতভাবে কমে এসেছে।
এর মাধ্যমে শুধু পরিশ্রম ও অর্থ অপচয় রোধই হচ্ছে না, বরং তথ্য বিশ্লেষণ স্বচ্ছলতা ও গতিশীলতাও এসেছে। কম্পিউটার এমন একটি 'Electronic Device' যা মানুষের দেওয়া নির্দেশসমূহ দক্ষতা ও দ্রুততার সাথে নির্ভুলভাবে নিষ্পন্ন করতে পারে। নিম্নে তথ্য বিশ্লেষণে কম্পিউটার ব্যবহারের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হলো
১. টাইপের কাজ : প্রাচীন টাইপ যন্ত্রের পরিবর্তে বর্তমানে কম্পিউটারের মাধ্যমে টাইপের কাজ করা হয়ে থাকে। তথ্য বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে ওয়ার্ড প্রসেসিং গুরুত্বপূর্ণ। কম্পিউটার ব্যবহারের মাধ্যমে অতি সহজেই বাংলা বা ইংরেজি টাইপের কাজ করা সম্ভব হয়।
এক্ষেত্রে WP-6, Ms word এবং বিজয়, বসুন্ধরা ইত্যাদি ব্যবহারযোগ্য প্যাকেজসমূহ উল্লেখযোগ্য। এসব প্যাকেজের সাহায্যে লেখার কাজের পাশাপাশি বানানের শুদ্ধতা যাচাই করা যায়। বর্ণের আকৃতি ছোট বড় করা, সংশোধন করা এবং প্রতিশব্দ বের করা যায়, যা তথ্য বিশ্লেষণে কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
২. প্রেডসিট বা ডাটাসিট : তথ্য বিশ্লেষণের জন্য গৃহীত উপাত্তসমূহ শ্রেণিবিভক্ত করে সাজানো হয়। কম্পিউটারের মাধ্যমে ভাটাগুলো সহজে সাজানো যায়। টাইপ রাইটারের মাধ্যমে ডাটা সাজাতে অনেক সময় ব্যয় হয়। রো এবং কলাম তৈরি করা সম্ভব হয় না...
অন্যদিকে, স্প্রেডসিটে অসংখ্য রো ও কলাম তৈরি করা থাকে বলে সহজে তথ্যের আকৃতি বাড়ানো বা কমানো যায় এবং যথার্থ তথ্য নেওয়া যায়। এছাড়া স্প্রেডসিটে যোগ বিয়োগ, শতকরা হিসাবসহ যেকোনো হিসাব খুব সহজে করা যায়।
৩. ডাটাবেস ব্যবস্থাপনা : ডাটাবেস ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেও ভিন্ন ভিন্নভাবে উপাত্তসমূহ সংরক্ষণ করা যায়। এ কাজ সাধারণত দুই ভাগে করা হয়। যথা :
i.সব ডাটা একটি ফাইলে রাখা এবং
ii. কমপ্লেক্স ডাটাবেস তৈরি করে একই ডাটার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের তথ্য বিভিন্ন ফাইলে রাখা ডাটাবেস ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অতি সহজেই গবেষকগণ ডাটাগুলো হালনাগাদকরণ, তুলনাকরণ এবং সংশোধন করতে পারে, যা স্প্রেডসিটে সংরক্ষণ করা যায় না।
৪. যোগাযোগ : তথ্য বিশ্লেষণের জন্য যোগাযোগ মাধ্যমসমূহ সচল রাখা প্রয়োজন। একাধিক প্রতিষ্ঠান এবং মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কর্মীদের সাথে যোগাযোগ রেখে তথ্য বিশ্লেষণ করতে কম্পিউটারের ব্যবহার অত্যধিক।
কম্পিউটারের মাধ্যমে ফোন করা, ফ্যাক্স পাঠানো, ডাটা পাঠানো, মেইল করা এবং দেশি-বিদেশি জার্নাল হতে তথ্য সংগ্রহ ইত্যাদি কাজ খুব সহজে করা যায় ।
৫. পরিসংখ্যানগত তথ্য বিশ্লেষণ : পরিসংখ্যানগত তথ্য বিশ্লেষণের কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। কোনো সূত্রের ব্যবহার ছাড়াই কম্পিউটারের মাধ্যমে অতি সহজে পরিসংখ্যানের প্রত্যয় ও ফলাফল পাওয়া যায়।
ক্যালকুলেটরের বিকল্প যন্ত্র হিসেবে কম্পিউটার ব্যবহার হচ্ছে, যা দ্রুত ও নির্ভুল ফলাফল প্রদান করছে। Co-relation' এবং 'Central tendency' এর উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।
তথ্য প্রদানের সাথে সাথে আমরা কম্পিউটারের মাধ্যমে নির্ভুল ফলাফল পাচ্ছি। প্রবৃদ্ধির হার, গড়, মধ্যক, প্রচুরক নির্ণয় করা যায় কম্পিউটারের সাহায্যে।
৬. প্রকল্প ব্যবস্থাপনা : কম্পিউটারের মাধ্যমে প্রকল্প ব্যবস্থাপনার কাজও করা যায়। তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রকল্প ব্যবস্থাপনার কাজ করা হয়। প্রকল্পের প্রকৃতি, জনবল, কার্যকরণ ইত্যাদি এ প্যাকেজের মাধ্যমে করা যায়।
প্রকল্পের সুষ্ঠু ও নির্ভুল ব্যবস্থাপনায় কম্পিউটারের ব্যবহার অপরিসীম। বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও এনজিওসমূহ কম্পিউটারের মাধ্যমে প্রকল্প ব্যবস্থাপনার কাজ করে।
৭. তথ্য প্রকাশনা : তথ্য প্রকাশনার কাজে কম্পিউটারের ব্যবহার অত্যাধিক। বই, ম্যাগাজিন, জার্নাল ইত্যাদি প্রকাশনার কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। ওয়ার্ড প্রসেসিং এর মাধ্যমে তথ্য ধারণ করে তা প্রিন্টারের সাহায্যে সহজেই প্রকাশ করা যাচ্ছে।
এছাড়াও তথ্য বিশ্লেষণে কম্পিউটারের মাধ্যমে একাধিক আকর্ষক রঙ ব্যবহার করা হয়। স্প্রেডসিটে উপস্থাপিত তথ্যের অতি প্রয়োজনীয় অংশ বিভিন্ন নকশার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়।
৮. ভৌগোলিক তথ্য : গবেষণার জন্য সংগৃহীত তথ্যাবলি বিশ্লেষণ করার জন্য অনেক সময় ভৌগোলিক তথ্য প্রয়োজন হয়। কম্পিউটারের মাধ্যমে ভূচিত্রাবলি সহজেই তৈরি করে কাজে লাগানো যায়।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, বাংলাদেশে কোন কোন এলাকায় পাহাড় পর্বত রয়েছে, কোথায় উপজাতি সম্প্রদায়ের বসবাস রয়েছে প্রভৃতি তথ্য কম্পিউটারের মাধ্যমে ইন্টারনেটে পাওয়া যায়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, কম্পিউটার এমন একটি আধুনিক যন্ত্র যা একজন গবেষককে তথ্য বিশ্লেষণের কাজে প্রয়োজনীয় চাহিদার অধিকাংশ পূরণ করে দেয়।
ডাটাবেস ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে একসাথে বহুসুবিধা পাওয়া যায়। কম্পিউটারের মাধ্যমে তথ্য বিশ্লেষণের মতো সৃজনশীল ও মৌলিক বিষয়ের দ্বারা তত্ত্ব যাচাই ও নির্মাণ করা যায় । যাতে করে গবেষণার সময় ও অর্থ দুটোই বেড়ে যায়।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ উপাত্ত বিশ্লেষণে কম্পিউটার ব্যবহারের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম উপাত্ত বিশ্লেষণে কম্পিউটার ব্যবহারের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।