তথ্য উপস্থাপন কাকে বলে । তথ্য উপস্থাপনের উপায় বর্ণনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো তথ্য উপস্থাপন কাকে বলে । তথ্য উপস্থাপনের উপায় বর্ণনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের উপাত্ত ব্যাখ্যাকরণ কাকে বলে? উপাত্ত কোন কোন উপায়ে ব্যাখ্যা করা যায়? লেখ।.
তথ্য উপস্থাপন কাকে বলে । তথ্য উপস্থাপনের উপায় বর্ণনা কর |
তথ্য উপস্থাপন কাকে বলে । তথ্য উপস্থাপনের উপায় বর্ণনা কর
উত্তর ভূমিকা : পরিসংখ্যানে উপাত্ত ব্যাখ্যাকরণ অতি গুরুত্বপূর্ণ। পরিসংখ্যানিক কাজ সম্পাদনের জন্য প্রাথমিক অবস্থায় এলোমেলোভাবে উপাত্ত পাওয়া যায়। সংগৃহীত উপাত্তসমূহ গবেষণার জন্য মাঠ পর্যায় হতে সংগ্রহ করতে হয়।
সংগৃহীত উপাত্ত সুন্দর, সহজ ও বোধগম্য করার জন্য উপস্থাপনের প্রয়োজন হয়। তথ্যকে গবেষণার কাজে ব্যবহার করার জন্য এর উপস্থাপন জরুরি।
গবেষণা কাজের উপযোগী করার জন্য উপাত্ত উপস্থাপন সুন্দর, সহজ ও বোধগম্য হতে হয় উপাত্তসমূহকে সম্পাদনা, শ্রেণিবদ্ধকরণ ও ছকের সন্নিবেশের মাধ্যমে ব্যাখ্যাকরণ বা উপস্থাপন করা হয় ।
উপাত্ত ব্যাখ্যাকরণ : গবেষণা বা অনুসন্ধানের জন্যে সংগৃহীত তথ্যমালা সারণি বা লেখচিত্রের মাধ্যমে যে উপায়ে উপস্থাপনা বা ব্যাখ্যাকরণ করা হয় তাকে উপাত্ত উপস্থাপন বলে।
সমাজ অনুসন্ধানলব্ধ উপাত্তসমূহ যথাযথভাবে সম্পাদনা, শ্রেণিবদ্ধকরণ ও ছকের সন্নিবেশ করার পর গবেষক সেগুলোকে পরিসংখ্যানগত প্রক্রিয়ায় বিশ্লেষণ করে। উপাত্তগুলোকে গবেষক কেবল সাধারণ বর্ণনা বা ছকের মাধ্যমে উপাস্থাপন করে না।
এছাড়া বিভিন্ন লেখচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করে । এর মধ্যে রয়েছে আয়ত্তলেখ, ব্যাপ্তিরেখা, স্তররেখা, গণসংখ্যা বহুভুজ, রূপচিত্র, মানচিত্র ইত্যাদি। তথ্যাবলি ছক বা লেখচিত্র যে মাধ্যমেই উপস্থাপন করা হোক না কেন গবেষককে এগুলো যথাযথভাবে বর্ণনা ও ব্যাখ্যা করতে হয় ।।
উপাত্ত ব্যাখ্যার উপায় : প্রধানত দুটি উপায়ে তথ্যকে উপস্থাপন করা হয়। যথা:
১. পরিসংখ্যানিক সারণি:
২. পরিসংখ্যানিক লেখ ।
১. পরিসংখ্যানিক সারণি : কোনো একটি বৈশিষ্ট্যের প্রেক্ষিতে সমজাতীয় বিবেচিত এককগুলোকে একটি শ্রেণিতে বা গোত্রে সাজিয়ে লিখলে যে সারণি পাওয়া যায় তাদেরকে পরিসংখ্যানিক সারণি বলে। এ পদ্ধতিতে সংগৃহীত উপাত্তসমূহকে একটি সুবিন্যস্ত সারণির মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
এ পদ্ধতিতে একটি ছকে শ্রেণিবিন্যাসিত উপাত্তসমূহকে উপর হতে নিচে এবং বাম হতে ডানদিকে সুশৃঙ্খল ও সারিবদ্ধভাবে মন্নিবেশিত করে প্রকাশ করা হয়। পরিসংখ্যানিক উপাত্তকে উপস্থাপনের জন্য সাধারণ তিন ধরনের সারণি ব্যবহার করা হয়। যেমন-
ক. শ্রেণিবদ্ধকরণ;
খ. সারণিবদ্ধকরণ;
গ. গণসংখ্যা নিবেশন ।
২. পরিসংখ্যানিক লেখ : পরিসংখ্যান উপাত্তকে স্থান, কাল, পরিমাণ ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য অনুসারে বিভিন্ন ধরনের চিত্রের সাহায্যে উপস্থাপন করা যায়। এসব চিত্রগুলোকে পরিসংখ্যানিক লেখ বলে।
এ পদ্ধতিতে উপাত্তসমূহকে লেখ, রেখা, চার্ট, মডেল ইত্যাদির সাহায্যে উপস্থাপন করা হয়। এর সাহায্যে উপাত্তসমূহকে অধিকতর সহজ ও আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করা যায় পরিসংখ্যানিক উপাত্তকে উপস্থাপনের জন্য সাধারণত নিম্নলিখিত লেখগুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যথা :
ক. আয়তলেখ,
খ, গণসংখ্যা বহুভুজ,
গ. গণসংখ্যা রেখা,
ঘ, অজিত রেখা,
ও কালীন রেখা,
চ. দণ্ডচিত্র,
ছ. বৃত্তকার চিত্র।
উপরিউক্ত লেখ ও চিত্রের মাধ্যমে তথ্যের উপস্থাপন সম্পর্কে পরিসংখ্যান অংশে সবিস্তারে আলোচনা করা হয়েছে বিধায় নিম্নে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো :
ক. আয়তলেখ : যে লেখচিত্রে একটি আনুভূমিক রেখার ওপর লম্বালম্বিভাবে অঙ্কিত ও পরস্পর সংযুক্ত আয়তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল দিয়ে প্রকাশ করা হয় তাকে আয়তলেখ বলে। অর্থাৎ গণসংখ্যা নিবেশনের বিভিন্ন শ্রেণির গণসংখ্যাকে আয়তক্ষেত্রের সাহায্যে প্রকাশ করলে যে লেখ পাওয়া যায় তাকে আয়তলেখ বলা হয়।
খ. গণসংখ্যা বহুভুজ : বিচ্ছিন্ন ও অভিচ্ছিন্ন উভয় ধরনের চলকের গণসংখ্যা নিবেশন উপস্থাপন করাকে গণসংখ্যা বহুভুজ বলে।
গ. গণসংখ্যা রেখা : গণসংখ্যা বহুভুজের একটি পরিবর্তিত রূপ হচ্ছে গণসংখ্যা রেখা।
ঘ. অজিভ রেখা : ক্রমযোজিত গণসংখ্যাকে যে বক্র রেখার সাহায্যে উপস্থাপন করা হয় তাকে অজিভ রেখা বলা হয়।
ড. কালীন রেখা : সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে চলকের মানের পরিবর্তন যে লেখচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয় তাকে কালীন রেখা বলা হয়।
চ. দণ্ডচিত্র : যে চিত্র কোনো চলকের বিভিন্ন সময় বা স্থানভিত্তিক তথ্যসমূহকে কতকগুলো দণ্ডের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয় তাকে দণ্ডচিত্র বলা হয়। দন্ডগুলোর প্রস্থ সমান এবং দৈর্ঘ্য দ্বারা প্রতিস্থাপিত তথ্যের মানের সমানুপাতিক হয় ।
ছ. বৃত্তাকার চিত্র : কোনো তথ্য বৃত্তের সাহায্যে উপস্থাপন করা হলে তাকে বৃত্তাকার চিত্র বলা হয়। একটি বৃত্তের কেন্দ্রের কোণের পরিমাণ 360° । এ বৃত্তের কেন্দ্রের 360° কোণ 100% তথ্য প্রকাশ করে।
একটি বৃত্তকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে প্রতিটি ভাগে প্রয়োজনীয় তথ্য উপস্থাপন করা হয়। উপরোক্ত পদ্ধতি ছাড়াও উপাত্ত উপস্থাপনের আরো কিছু পদ্ধতি রয়েছে।
নিম্নে সেগুলো দেখানো হলো :
i. বিবরণের মাধ্যমে : এ পদ্ধতিতে উপাত্তসমূহকে ব্যাখ্যা বা বিবরণের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। বিবরণমূলক উপস্থাপনায় গবেষণাকারীর পক্ষে দীর্ঘ বিবরণের মধ্য হতে উপাত্তের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলোকে দৃষ্টিগোচরে আনা খুব কষ্টসাধ্য হয় ।
ii. শ্রেণিকরণের মাধ্যমে : অশ্রেণিকৃত উপাত্ত সারির এককগুলো বিভিন্নভাবে অবস্থান করে বলে সমগ্র উপাত্ত সারি বা এর বিভিন্ন অংশে অন্তর্নিহিত উপাত্ত সম্পর্কে সহজে ধারণা নেওয়া যায় না।
এজন্য গুণ, সময়, অবস্থান ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যধারী বিভিন্ন এককগুলোকে কতকগুলো দলে সাজিয়ে লেখা হয়। এভাবে কোনো নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য অনুসারে লেখার পদ্ধতিকে শ্রেণিকরণ বলে। একটি দল বা শ্রেণিতে যে কয়টি সংখ্যা থাকে তাকে ঐ শ্রেণির গণসংখ্যা বা ঘটনসংখ্যা বলে।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, উপাত্ত উপস্থাপন হলো বিচ্ছিন্ন ও বিক্ষিপ্ত উপাত্তসমূহকে বিভিন্ন গুণ বা বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে সাজানো বা বিন্যাস করা।
সমাজ গবেষণার জন্য গৃহীত বিচ্ছিন্ন উপাত্তসমূহকে সুন্দর, সহজ ও বোধগম্যভাবে উপস্থাপন করাই উপাত্ত উপস্থাপনের কাজ। এটি গবেষণাকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করতে সাহায্য করে।
পরিসংখ্যানিক উপাত্তসমূহকে লেখচিত্র ছক বা সারণির মাধ্যমে সুবিন্যস্ত করে উপাত্ত উপস্থাপন উপাত্তকে সহজবোধ্য করে তোলার জন্য উপাত্ত উপস্থাপন বা ব্যাখ্যাকরণ অপরিহার্য।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ উপাত্ত ব্যাখ্যাকরণ বলতে কী বুঝ। উপাত্ত ব্যাখ্যার উপায় আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম তথ্য উপস্থাপন কী? তথ্য উপস্থাপনের উপায় বর্ণনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।