প্রশ্নমালা ও অনুসূচির মধ্যে পার্থক্য লিখ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো প্রশ্নমালা ও অনুসূচির মধ্যে পার্থক্য লিখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের প্রশ্নমালা ও সিডিউলের মধ্যে পার্থক্য কী।
প্রশ্নমালা ও অনুসূচির মধ্যে পার্থক্য লিখ |
প্রশ্নমালা ও অনুসূচির মধ্যে পার্থক্য লিখ
- অথবা, প্রশ্নমালা ও সিডিউলের মধ্যে পার্থক্য কী?
- অথবা, প্রশ্নপত্র ও অনুসূচির মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর ভূমিকা ; সামাজিক গবেষণার অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হচ্ছে প্রশ্নপত্র ও অনুসূচি। প্রশ্নপত্র হচ্ছে গবেষণার তথ্যসংগ্রহের জন্য কতিপয় সুনির্দিষ্ট প্রশ্নের সমাহার যা গবেষণার বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট।
তথ্যসংগ্রহের জন্য প্রশ্নপত্রকে যখন ব্যবহার করা হয় তখন তাকে সাক্ষাৎকার অনুসূচি বা Interview Schedule বলে ।
প্রশ্নমালা ও সাক্ষাৎকার অনুসূচির মধ্যকার পার্থক্যসমূহ : প্রশ্নপত্র ও অনুসূচি উভয়ই তথ্যসংগ্রহের কৌশল। লক্ষ্যগত দিক থেকে উভয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। উভয় পদ্ধতিই কতিপয় প্রশ্ন ব্যবহার করে তথ্যসংগ্রহ করে । এ সত্ত্বেও কতিপয় দিক থেকে উভয় পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান। তবে এসব পার্থক্য মূলত মাত্রাগত। নিম্নে পার্থক্যগুলো বর্ণনা করা হলো :
১. সংজ্ঞাগত : প্রশ্ন পদ্ধতিতে কতিপয় প্রশ্ন তৈরি করে তা ডাকযোগে উত্তরদাতার কাছে প্রেরণ করা হয় এবং উত্তরদাতা সেগুলো নিজে পূরণ করে গবেষকের কাছে ফেরত পাঠান।
পক্ষান্তরে, অনুসূচি পদ্ধতিতেও কতিপয় প্রশ্ন তৈরি করা হয় কিন্তু সেগুলো উত্তরদাতার কাছে প্রেরণ না করে সাক্ষাৎকারের সময় ব্যবহৃত হয় । সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী উত্তরদাতাকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেন এবং উত্তর লিপিবদ্ধ করেন ।
২. সময় ও ব্যয় : সাধারণত স্বল্প সময় ও কম ব্যয়ে তথ্যসংগ্রহের জন্য প্রশ্নপত্র পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। পক্ষান্তরে, উন্নতমানের তথ্যের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ ও সময় ব্যয়ের সুযোগ থাকলেই সাধারণত অনুসূচি পদ্ধতি অনুসৃত হয় ।
৩. পরিধিগত : প্রশ্নপত্র পদ্ধতিতে উত্তরদাতাদেরকে সরাসরি খুঁজে পাওয়ার প্রয়োজন নেই। কাজেই এ পদ্ধতি ব্যাপক এলাকা পরিব্যাপ্ত করতে পারে। পক্ষান্তরে, অনুসূচি পদ্ধতি ছোট গবেষণা এলাকার জন্যই বেশি প্রযোজ্য। এখানে উত্তরদাতার সরাসরি উপস্থিতি আবশ্যক ।
৪. ব্যাখ্যাদানগত : প্রশ্নপত্র পদ্ধতিতে যেহেতু সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী সরাসরি উপস্থিত থাকেন না, কাজেই এতে প্রশ্নগুলো স্বব্যাখ্যাত প্রকৃতির যাতে উত্তরদাতা পড়ে বুঝতে পারেন এবং উত্তর দিতে পারেন। পক্ষান্তরে, অনুসূচির প্রশ্নগুলো স্বব্যাখ্যাত হওয়ার প্রয়োজন হয় না। কারণ প্রয়োজনে সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী তা ব্যাখ্যা করেন।
৫. প্রযোজ্যতা : প্রশ্নপত্র পদ্ধতি সব ধরনের ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য নয়। যারা প্রশ্নপত্র পড়তে পারেন এবং বুঝতে পারেন কেবল তাদের জন্যই এ পদ্ধতি । পক্ষান্তরে, সব ধরনের ব্যক্তির জন্যই অনুসূচি পদ্ধতি প্রযোজ্য ।
৬. উত্তরদাতার সুবিধা : প্রশ্নপত্র পদ্ধতিতে উত্তরদাতার কাছে প্রশ্নপত্র পাঠানো হয় এবং উত্তরদাতা তার সুবিধামতো সময়ে উত্তর দেন। পক্ষান্তরে, অনুসূচি পদ্ধতিতে উত্তরদাতাকে এরূপ সময় দেওয়া হয় না। কারণ এতে সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীর নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই উত্তর দিতে হয়।
৭. ধারাবাহিকতা : প্রশ্নপত্র পদ্ধতিতে উত্তরদাতা প্রশ্নপত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা না করে বরং নিজের ইচ্ছামতো উত্তর দেন । পক্ষান্তরে, অনুসূচি পদ্ধতিতে অনুসন্ধানকারী প্রশ্নপত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে তথ্যসংগ্রহ করেন ।
৮. বোধগম্যতা : প্রশ্নপত্র পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্রের ভাষা সহজসরল ও সহজবোধ্য হয় যাতে উত্তরদাতা নিজেই তা বুঝতে পারেন। পক্ষান্তরে, অনুসূচির প্রশ্নগুলো অপেক্ষাকৃত জটিল প্রকৃতির। অবশ্য সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী এরূপ জটিল প্রশ্ন উত্তরদাতার কাছে বোধগম্য করে তোলেন ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সামাজিক গবেষণার ক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র ও অনুসূচি দুটি বিষয়ই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা
পালন করে থাকে। যদিও বিষয় দুটির মধ্যে কিছু পার্থক্য বিদ্যমান রয়েছে। তথাপি গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত তথ্যসংগ্রহে বিষয় দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ প্রশ্নমালা ও অনুসূচির মধ্যে পার্থক্য লিখ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম প্রশ্নপত্র ও অনুসূচির মধ্যে পার্থক্য কী। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।