পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য কী
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য কী জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য কী।
পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য কী |
পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য কী
উত্তর ভূমিকা : গবেষণায় উপাত্ত সংগ্রহের একটি প্রাচীন কৌশল হচ্ছে পর্যবেক্ষণ। গবেষণায় একটি বিশেষ পদ্ধতি হিসেবে পর্যবেক্ষণের ভূমিকা অধিক। এটি সকল বৈজ্ঞানিক গবেষণার ভিত্তিস্বরূপ।
কেননা বিজ্ঞানের সূত্রপাত ঘটে মূলত পর্যবেক্ষণ থেকেই সামাজিক ঘটনার অন্তর্নিহিত তাৎপর্যের উন্মেষ ও বিকাশ সাধনে এ পদ্ধতি বিশেষভাবে কার্যকর। গবেষণার কাজে একাধিক কৌশলের মধ্যে পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির জনপ্রিয়তা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে।
পর্যবেক্ষণ পদ্ধজি মাধ্যমে যেকোনো ঘটনাকে নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্তভাবে অধ্যয়ন করা হয়। এজন্য পর্যবেক্ষণকে গবেষণার উপাত্ত সংগ্রহের একটি মৌলিক ও বস্তুনিষ্ঠ কৌশল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য : গবেষক তথ্য সংগ্রহের জন্য নানা ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকেন। এর মধে পর্যবেক্ষণ একটি জনপ্রিয় গবেষণা পদ্ধতি। পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির কতিপয় স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল। নিম্নে পর্যবেক্ষন পদ্ধতির প্রধান বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো :
১. প্রাথমিক উপাত্ত সংগ্রহ : পর্যবেক্ষণ এমন একটি কৌশল, যেটি কেবল প্রাথমিক উপাত্ত সংগ্রহ করে থাকে। পর্যবেক্ষ পদ্ধতি মৌলিক উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক গবেষণায় সহায়তা করে। এক্ষেত্রে প্রত্যেক গবেষক মাঠ পর্যান্ত থেকে গবেষণার সাথে সম্পর্কিত প্রাথমিক উপাত্ত সংগ্রহ করে থাকে।
২. নিয়মতান্ত্রিকতা : পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি হচ্ছে কোনো বিষয়ের নিয়মতান্ত্রিক প্রত্যেক্ষকরণ ও পরীক্ষণ। বিশেষ উদ্দেশ সাধনের জন্য নির্দিষ্ট বস্তু বা ঘটনাকে সুশৃঙ্খলভাবে অবলোকন বা নিরীক্ষা করা। নিরীক্ষা করা হয় নিয়মতান্ত্রিকতা মেনে। নিয়মতান্ত্রিক প্রত্যক্ষণই পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির অন্য পরিচয়।
৩. পরিকল্পনা : যথাযথ পরিকল্পনা অনুসরণ করে পর্যবেক্ষণ পরিচালিত হয়। প্রয়োজনীয় উপাত্ত সংগ্রহ ও লিপিবদ্ধকরণের জন্য কোনো ধরনের যন্ত্রপাতি প্রয়োজন হবে তা পূর্ব থেকেই গবেষককে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায় কোনো একটি সম্প্রদায়ের বিষয়ে অনুষ্ঠান পর্যবেক্ষণ করার জন্য ক্যামেরার দরকার। এটি গবেষককে পূর্ব থেকে পরিকল্পনা করে সঙ্গে নিয়ে যেতে হয়।
৪. উদ্দীপ্তকরণ : উদ্দীপ্তকরণ পর্যবেক্ষণের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য। পর্যবেক্ষণের প্রাকৃতিক বা স্বাভাবিক ঘটনা সরাসরি ধারণ করা হয়।
কিন্তু পর্যবেক্ষণের সুবিধার্থে এর স্বাভাবিক প্রকৃতি অপরিবর্তিত রেখে ঘটনা বা বিষয়টির অবস্থানে পর্যবেক্ষক যে রদবদল করার সুবিধা নিয়ে থাকেন তাই হলো উদ্দীপ্তকরণ।
৫. উদ্দেশ্যহীনতা : পর্যবেক্ষণ অনেক সময় উদ্দেশ্য বিবর্জিত হয়। বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে গবেষক পর্যবেক্ষণ করলে ও মাঝে মাঝে সে উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়।
কিন্তু পর্যবেক্ষণ গবেষক অবচেতনভাবে করে থাকে। কিন্তু বিজ্ঞানভিত্তিক পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে উদ্দেশ্যমূলক হওয়া একান্ত জরুরি।
৬. গবেষণার বিষয়াদি লিপিবদ্ধকরণ : পর্যবেক্ষণকৃত সবকিছু মনে রাখা একজন গবেষকের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন কাজ । তাই পর্যবেক্ষণকৃত সবকিছু সম্পর্কে সংগৃহীত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে লিপিবদ্ধ করা উচিত। এতে উপাত্তের সঠিকতা ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায় ।
৭. অধ্যয়ন পদ্ধতি : পর্যবেক্ষণের অপর একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে, এটি একটি সরাসরি অধ্যয়ন পদ্ধতি। এক্ষেত্রে গবেষক ব্যক্তিগতভাবে মাঠে উপস্থিত হয়ে গবেষণার উদ্দেশ্যসমূহ স্বচক্ষে পর্যবেক্ষণ করেন। এভাবে পর্যবেক্ষিত বস্তু এবং চোখের মধ্যে সরাসরি মিথষ্ক্রিয়া ঘটে থাকে। ফলে বাস্তব উপাত্ত লিপিবদ্ধ করা যায় ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি হচ্ছে সামাজিক গবেষকদের জন্য একটি মৌলিক হাতিয়ার । বৈজ্ঞানিক গবেষণার অন্যতম হাতিয়ার হলো পর্যবেক্ষণ।
পর্যবেক্ষণ হলো সামাজিক গবেষণায় পরিবেশকে প্রভাবিত বা নিয়ন্ত্রিত না করে অবিকল ও অবিকৃত উপায়ে উপাত্ত সংগ্রহের কৌশল। পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ঘটনা সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা লাভ করা যায় ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য কী
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম পর্যবেক্ষণ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য কী। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।