বাংলাদেশ সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য কয়টি
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বাংলাদেশ সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য কয়টি জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বাংলাদেশ সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য কয়টি।
বাংলাদেশ সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য কয়টি |
বাংলাদেশ সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য কয়টি
উত্তর ভূমিকা : যেকোনো স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রপরিচালনার জন্য সংবিধান অপরিহার্য। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান প্রণীত হয় এবং একই বছর ১৬ ডিসেম্বর তা কার্যকর হয় ।
অবশ্য পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধনের ফলে বিভিন্ন ধারা উপধারায় বহু পরিবর্তন সাধিত হয়। ২০০১৮ সাল পর্যন্ত এ সংবিধান সতেরো বার সংশোধন করা হয়েছে।
বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ : নিম্নে বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা করা হলো :
১. সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা : ব্রিটিশ শাসনতন্ত্রের অনুকরণে বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের সংবিধান সংসদীয় বা মন্ত্রিপরিষদ শাসিত শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়।
কিন্তু ১৯৭৫ সালে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়। অবশ্য ১৯৯১ সালে দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করা হয়।
২. এককেন্দ্রিক শাসন : সংবিধানে বাংলাদেশকে একটি এককেন্দ্রিক গণপ্রজাতন্ত্রী রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সকল ক্ষমতা একটি কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ন্যস্ত করা হয়।
৩. মৌলিক অধিকার : এ সংবিধানে নাগরিকগণকে ব্যক্তিস্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা, চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা, সাম্যের অধিকার প্রভৃতি মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। অবশ্য সংসদ এসব অধিকারের ওপর আইনগত বাধানিষেধ আরোপ করতে পারে বলে বলা হয়।
৪. রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি : জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা এ চারটি নীতিকে রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বিভিন্ন সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের মূলনীতিতে কিছু পরিবর্তন আনা হলেও বর্তমানে এটিই বলবৎ রয়েছে। পাশাপাশি রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম থাকলেও ধর্মনিরপেক্ষতা ও সব ধর্মের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
৫. লিখিত দলিল : গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান একটি বিস্তারিত লিখিত দলিল। এ সংবিধানটি ১১ ভাগে বিভক্ত এবং তাতে ১৫৩টি অনুচ্ছেদ, একটি প্রস্তাবনা ও ৭টি তফসিল রয়েছে।
৬. দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান : বাংলাদেশের সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয়। জাতীয় সংসদ তার মোট সদস্যের অন্তত দুই- তৃতীয়াংশের ভোটে কেবল সংবিধানের কোনো বিধান সংশোধন বা বাতিল করতে পারে।
৭. রাষ্ট্রধর্ম ও ধর্মীয় স্বাধীনতা : বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তবে প্রত্যেক নাগরিকের যেকোনো ধর্ম অবলম্বন, পালন ও প্রচারের অধিকার রয়েছে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, যুগের চাহিদার প্রেক্ষিতে, সময়ের দাবির কারণে বিভিন্ন রূপ আইনকানুন বিধিবিধানের ক্ষেত্রে যেরূপ পরিবর্তন সাধিত হয় তা একটি রাষ্ট্রের মৌলিক আইন সংবিধানের ক্ষেত্রেও প্রয়োজ্য।
বাংলাদেশ সংবিধানের সবগুলো সংশোধনই যে জনগণের স্বার্থে হয়েছে তা পুরাপুরি বলা যাবে না বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধান বিশ্বের গণতান্ত্রিক সংবিধানগুলোর মধ্যে একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান বলা যায়। যা তার উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ বাংলাদেশ সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য কয়টি
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বাংলাদেশ সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য কয়টি। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।