অস্থায়ী সংবিধান আদেশ বলতে কি বুঝ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো অস্থায়ী সংবিধান আদেশ বলতে কি বুঝ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের অস্থায়ী সংবিধান আদেশ বলতে কি বুঝ।
অস্থায়ী সংবিধান আদেশ বলতে কি বুঝ |
অস্থায়ী সংবিধান আদেশ বলতে কি বুঝ
উত্তর ভূমিকা : ১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে অস্থায়ী সংবিধান আদেশ জারি করেন । তাছাড়াও এদেশের গণমানুষ সংসদীয় গণতন্ত্র ব্যবস্থা প্রবর্তনের ইচ্ছা পোষণ করেন।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশ গণপরিষদ আদেশ বলতে কী বুঝ
ফলে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি স্বাধীনতা ঘোষণার প্রেক্ষিতে এ অস্থায়ী সংবিধান আদেশ জারি করেছেন, যা বেশকিছু বৈশিষ্ট্যের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছিল*
‘অস্থায়ী সংবিধান আদেশ, ১৯৭২' : বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। এ উদ্দেশ্যে তিনি সালের ১০ এপ্রিলের স্বাধীনতা ঘোষণাপত্র অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে প্রদত্ত সকল ক্ষমতাবলে সংবিধান প্রণয়নের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারি অস্থায়ী সংবিধান আদেশ জারি করেন। এ আদেশে বলা হয়—
ক. এই আদেশ বাংলাদেশ 'অস্থায়ী সংবিধান আদেশ, ১৯৭২' নামে অভিহিত হবে।
খ. এই আদেশটি সমগ্র বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য হবে।
গ. এই আদেশটি অবিলম্বে বলবৎ হবে।
ঘ. এই আদেশে বর্ণিত 'গণপরিষদ' বলতে ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকে ১৯৭১ সালের ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের আসনগুলোতে বিজয়ী গণপ্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত পরিষদকে বুঝাবে ।
ঙ. প্রধানমন্ত্রীর অধীনে বাংলাদেশে একটি মন্ত্রিপরিষদ থাকবে।
চ. প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রজাতন্ত্রের সকল কাজ করবেন।
ছ. রাষ্ট্রপতি গণপরিষদে এমন একজন সদস্যকে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করবেন, যিনি গণপরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের আস্থাভাজন হবেন । অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হবেন।
জ. গণপরিষদ কর্তৃক সংবিধান প্রণীত হওয়ার পূর্বে রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হলে, মন্ত্রিপরিষদ কর্তৃক যেকোনো আদর্শ বাংলাদেশি নাগরিক রাষ্ট্রপতির পদে অস্থায়ীভাবে আসীন হবেন। গণপরিষদের প্রণীত সংবিধান অনুসারে নতুন রাষ্ট্রপতি দায়িত্বভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি উক্ত পদে বহাল থাকবেন ।
ঝ. বাংলাদেশে একটি হাইকোর্ট থাকবে। একজন প্রধান বিচারপতি ও সময়ের প্রেক্ষাপটে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিচারক নিয়ে হাইকোর্ট গঠিত হবে।
ঞ. বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির শপথ বাক্য পাঠ করাবেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। আর রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর শপথ বাক্য পাঠ করাবেন। শপথ বাক্যের ফরম মন্ত্রিপরিষদ কর্তৃক নির্ধারিত হবে ।
আরো পড়ুনঃ ১৯৬২ সালের সংবিধানের বৈশিষ্ট্যসমূহ কী কী
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অস্থায়ী সংবিধানে বাংলাদেশের জন্য সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। এ সংবিধান রাষ্ট্রপতিকে নামমাত্র প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী প্রকৃত প্রধান হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
এ সংবিধান অনুযায়ী গণপরিষদ গঠনের ব্যবস্থা করা হয়। ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদে বাংলাদেশের নতুন সংবিধান গৃহীত হয়ে ১৬ ডিসেম্বর এটি কার্যকর হলে অস্থায়ী সংবিধান আদেশ বাতিল হয় ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ অস্থায়ী সংবিধান আদেশ বলতে কি বুঝ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম অস্থায়ী সংবিধান আদেশ বলতে কি বুঝ। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।