আপাত পরীক্ষণমূলক গবেষণা নকশা বলতে কী বুঝ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো আপাত পরীক্ষণমূলক গবেষণা নকশা বলতে কী বুঝ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের আপাত বা আধা-পরীক্ষণমূলক গবেষণা নকশা কাকে বলে।
আপাত পরীক্ষণমূলক গবেষণা নকশা বলতে কী বুঝ |
আপাত পরীক্ষণমূলক গবেষণা নকশা বলতে কী বুঝ
- অথবা, আপাত বা আধা-পরীক্ষণমূলক গবেষণা নকশা কাকে বলে?
- অথবা, আধা পরীক্ষণমূলক গবেষণা নকশা বলতে কী বুঝ ?
উত্তর ভূমিকা : গবেষণা হলো মূলত বিশেষ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োগ। সামাজির সাধারণ নিয়ম আবিষ্কারের জন্য প্রত্যেক সমাজ গবেষকই প্রকল্প আকারে তার নির্ধারিত গবেষণা সমস্যা বা বিষয়কে সুনির্দিষ্ট করেন।
এর ভিত্তিতে তিনি অনুসন্ধান কাজের একটি প্রাসঙ্গিক নকশা বা পরিকল্পনা তৈরি করেন । আপাত ব আধা-পরীক্ষণমূলক গবেষণা নকশা তাদের মধ্যে অন্যতম ।
আপাত বা আধা-পরীক্ষণমূলক গবেষণা নকশা : গবেষণা নকশায় আধা পরীক্ষণমূলক গবেষণা দুই বা ততোধিক চলকের মধ্যকার কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয়ে পরীক্ষণমূলক পরিস্থিতি সম্পূর্ণরূপে গবেষকের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে।
কিন্তু আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রায় ক্ষেত্রেই আমরা কোনো ঘটনাকে সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণে রেখে সত্যিকার পরীক্ষণ পরিচালনা করতে পারি না।
উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, ফুসফুসের ক্যান্সার সৃষ্টিতে ধূমপানের প্রভাব অনুসন্ধানে একটি সত্যিকার পরীক্ষণ পরিচালনা করতে হলে পূর্বে কখনো ধূমপান করেনি এমন অংশগ্রহণকারীদেরকে দৈব নমুনায়ন পদ্ধতিতে দুটি দলে বিভক্ত করব। যথা—
ক. পরীক্ষণ দল এবং
খ. নিয়ন্ত্রিত দল ।
উল্লেখ্য দু'টি দলই সকল বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে সমান থাকবে। এবার পরীক্ষণ দলের অংশগ্রহণকারীদেরকে তামাক জাতীয় দ্রব্য যেমন— বিড়ি বা সিগারেট খেতে দিয়ে তাদের ফুসফুসে ধোঁয়া প্রবেশ করানো হবে এবং
নিয়ন্ত্রিত দলের অংশগ্রহণকারীদের তামাকের ধোঁয়া থেকে সম্পূর্ণরূপে প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। কিন্তু আমরা জানি যে, একজন অধূমপায়ী ব্যক্তির ফুসফুসে তামাকের ধোঁয়া প্রবেশ করানো একজন সমাজ গবেষকের কাছে নৈতিকভাবে যেমন সমর্থনযোগ্য নয়,
তেমনি সামাজিকভাবে তা গ্রহণযোগ্য নয়। এরূপ পরিস্থিতিতে নৈতিক বা সামাজিক মূল্যবোধের কারণে ধূমপান ও ফুসফুসের ক্যান্সারের মধ্যে সন্দেহাতীত কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয়ে আমরা সত্যিকার পরীক্ষণ পরিচালিত করতে পারছে না।
অথচ সমস্যাটির গুরুত্ব বিচারে এ ধরনের অনুসন্ধান অতীব জরুরি। এমতাবস্থায় সুনির্দিষ্ট সমস্যা নির্ধারণ, উদ্দেশ্য স্থিরকরণ, অনুকল্প গঠন, ধারণা ও চলকের সংজ্ঞায়নসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গবেষণা নকশায় বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে জ্ঞান অন্বেষণের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরি করতে ক্যাম্পবেল এবং স্ট্যানলি
"Experimental and Quasi Experimental Design for Research in Hand Book of Research on Teaching" গ্রন্থে আধা পরীক্ষণমূলক নকশা উপস্থাপন করেন । যা সামাজিক গবেষণায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
অর্থাৎ, আধা-পরীক্ষণমূলক নকশার মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন শর্তে দৈবচয়ণ পদ্ধতিতে বিন্যস্ত না করে নিয়মতান্ত্রিক পর্যবেক্ষণ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণকারীদেরকে কতিপয় বৈশিষ্ট্যর ভিত্তিতে শ্রেণিবিভাগ করা হয় এবং পরবর্তীতে একটি নির্ভরশীল চলকের পরিমাপের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের তুলনা করা হয় ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সামাজিক গবেষণায় আধা-পরীক্ষণমূলক গবেষণার গুরুত্ব অপরিসীম। যেসব ক্ষেত্রে সত্যিকার পরীক্ষণ সম্ভব নয়, সেসব ক্ষেত্রে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা না করার চেয়ে আধা-পরীক্ষণমূলক নকশার সাহায্যে স্বল্প সম্ভাবনাপূর্ণ সিদ্ধান্তে পৌছানোর উদ্দেশ্যেই গবেষকগণ আধা-পরীক্ষণমূলক গবেষণা পরিচালনা করে থাকেন।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ আপাত পরীক্ষণমূলক গবেষণা নকশা বলতে কী বুঝ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম আধা পরীক্ষণমূলক গবেষণা নকশা বলতে কী বুঝ । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।