একটি উত্তম অনুকল্পের বৈশিষ্ট্য লেখ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো একটি উত্তম অনুকল্পের বৈশিষ্ট্য লেখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের একটি উত্তম অনুকল্পের বৈশিষ্ট্য লেখ।
একটি উত্তম অনুকল্পের বৈশিষ্ট্য লেখ |
একটি উত্তম অনুকল্পের বৈশিষ্ট্য লেখ
উত্তর ভূমিকা : সামাজিক গবেষণার একটি কার্যকরী ধাপ হচ্ছে পূর্বানুমান বা অনুকল্প (Hypothesis)। পূর্বানুমান বলতে বুঝায়, যা পূর্বে বা আগেই অনুমান করা হয়ে থাকে । যেকোনো গবেষণার প্রারম্ভিক বিষয় হলো পূর্বানুমান।
গবেষক কোনো বিষয়কে যাচাই করার জন্য তত্ত্ব ও পূর্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কিছু অনুমান গঠন করেন। পূর্বানুমান বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির একটি অন্যতম হাতিয়ার।
একটি উত্তম অনুকল্পের বৈশিষ্ট্য : পূর্বানুমানের কাজ হলো গবেষণার দিকনির্দেশনা দেওয়া, গবেষণা সমস্যা সমাধানের ইঙ্গিত দেওয়া ও জ্ঞানের বিকাশ ঘটানো।
তাই যেসব অনুকল্প ঐসব উদ্দেশ্য সাধনে সক্ষম এবং যে অনুকল্পের নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহ রয়েছে তাই গ্রহণযোগ্য অনুকল্প হিসেবে বিবেচিত। নিচে অনুকল্পের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
১. প্রমাণসাপেক্ষতা : অনুকল্প বা পূর্বানুমানের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এটির প্রমাণ যোগ্যতা থাকতে হবে। অনুকল্পটি এমনভাবে উপস্থাপন করতে হবে যেন অনুকল্পটি যথার্থ যৌক্তিক অনুসিদ্ধান্ত দ্বারা তৈরি করা যায় এবং এই অনুসিদ্ধান্তগুলো বাস্তব ঘটনা ও তথ্যের সাহায্যে সত্যতা প্রমাণ করা যায়।
২. পরীক্ষণযোগ্যতা : একটি উত্তম অনুকল্পের পরীক্ষণ যোগ্যতা থাকতে হবে এবং পরীক্ষণযোগ্য সকল বিষয় বা ঘটনার সাথে অবশ্যই অনুকল্পটিকে সম্পর্কিত হতে হবে।
বিজ্ঞানসম্মত প্রমাণাদি সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে এটি যথাযথ ভূমিকা পালন করবে, যাতে অনুকল্পটি পরীক্ষা করা সম্ভব হয়। যেমন- পুঁজিবাদীরা শ্রমিকদের শোষণ করে, এটার অনুকল্প পরীক্ষা করা সম্ভব নয় ।
৩. সুনির্দিষ্টতা : উত্তম অনুকল্পের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো অনুকল্প সুনির্দিষ্ট হবে ও বিভিন্ন চলকের মধ্যকার সম্পর্ক ব্যাখ্যা করবে। তাছাড়া অনুকল্পটি কোন কোন স্বতন্ত্র অবস্থার প্রেক্ষিতে চলকের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করবে সেটাও নির্দেশিত হবে।
যে অনুকল্পটি গবেষণার জন্য বাছাই করা হয়েছে সেটা যেকোনো একাধিক বিষয়ের ওপর সুনির্দিষ্টভাবে রচিত হতে হবে ।
৪. কৌশলের পর্যাপ্ততা : পূর্বানুমানের সাথে প্রচলিত কৌশলের সম্পর্ক থাকতে হবে। অন্যথায় অনুকল্পটি গবেষণার জন্য উপযুক্ত হবে না। কারণ তত্ত্ব ও পদ্ধতি পরস্পর বিরোধী নয়; বরং সম্পর্কযুক্ত। অতএব গবেষককে সতর্ক থাকতে হবে, যেন অনুকল্পটি গ্রহণ করার মতো প্রয়োজনীয় কৌশল বর্তমান থাকে ।
৫. সংক্ষিপ্ততা : একটি অনুমানকে অবশ্যই সহজ হওয়ার পাশাপাশি সংক্ষিপ্ত হতে হবে, যেন গবেষকের গবেষণা কাজ পরিচালনা করার জন্য তা সুবিধাজনক হয়।
অনুকল্প বৈজ্ঞানিকভাবে লিখিত হলে তা সংক্ষিপ্ত হয়। সংক্ষিপ্ত অনুকল্প গবেষণার প্রত্যয় ও তাৎপর্যকে বুঝতে সহায়তা করে।
৬. বস্তুনিষ্ঠতা : বিজ্ঞানসম্মত অনুকল্প অবশ্যই মূল্যবোধজনিত ধারণা থেকে মুক্ত থাকবে। অনুকল্পে যদি কোনো গবেষক বস্তুনিষ্ঠতা বজায় না রাখতে পারে তাহলে অনুকল্পটি গবেষণার ক্ষেত্রে উপযুক্ত হবে না।
তাই ব্যক্তি হিসেবে গবেষককে ব্যক্তিগত মূল্যবোধের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে যেন তা কোনোভাবেই তার গবেষণার কাজে প্রভাব ফেলতে না পারে ।
৭. অবিমিশ্রিতা : অনুকল্প বা পূর্বানুমান এমন অবিমিশ্রিত হওয়া দরকার যার কারণে যে শর্তাদি থাকবে তা সহজে বোধগম্য হবে। এ অবিমিশ্রিত অনুকল্পের মধ্যে অন্তর্দৃষ্টি দৃশ্যমান হবে। তাই বলা হয়, সমস্যার ব্যাপারে গবেষকের যত বেশি অন্তর্দৃষ্টি থাকবে তার অনুকল্প তত বেশি সহজসরল হবে ।
৮. ভবিষ্যদ্বাণী : একটি উত্তম অনুকল্প যাচাইযোগ্য হওয়ার পাশাপাশি যুক্তিসংগত হতে হবে, যাতে করে একটি অনুকল্প ভবিষ্যদ্বাণী করার ক্ষেত্রে উপযুক্ত হয়। তাই বলা হয়, ভবিষ্যদ্বাণী হলো বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য বা উপাদান ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সব গবেষণার ক্ষেত্রে অনুকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সর্বদা পরিবর্তনশীল ও বিবর্তনশীল সমাজে বিভিন্ন উপাদান নিয়ে অনুসন্ধান কাজ পরিচালনা করার ক্ষেত্রে পূর্বানুমান সুনির্দিষ্ট চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে।
অনুকল্প ছাড়া কোনো গবেষণা কার্যক্রম সফলভাবে সম্পাদিত হতে পারে না। অনুকল্প প্রণয়নের আগে এর বৈশিষ্ট্যগুলোর দিকে সতর্কদৃষ্টি রাখা অত্যন্ত জরুরি ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ একটি উত্তম অনুকল্পের বৈশিষ্ট্য লেখ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম একটি উত্তম অনুকল্পের বৈশিষ্ট্য লেখ। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।