উদার নারীবাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো কী কী । সমালোচনাসহ তুলে ধর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো উদার নারীবাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো কী কী । সমালোচনাসহ তুলে ধর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের উদার নারীবাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো কী কী । সমালোচনাসহ তুলে ধর।
উদার নারীবাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো কী কী । সমালোচনাসহ তুলে ধর |
উদার নারীবাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো কী কী । সমালোচনাসহ তুলে ধর
উত্তর : ভূমিকা : নারী অধিকার আদায়ের আন্দোলনের ইতিহাসে উদার নারীবাদ প্রাচীনতম। সমাজ কাঠামোতে প্রথিত বৈষম্যসমূহ দূরীকরণে আন্দোলনের পথপ্রদর্শক এই উদার নারীবাদ। মূলত সমাজস্থ নারী ও পুরুষকে সমদৃষ্টিতে দেখে নারীর প্রতি বৈষম্যসমূহ দূর করাই উদার নারীবাদের অন্যতম লক্ষ্য।
→ উদার নারীবাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ : উদার নারীবাদী প্রবক্তাগণের মধ্যে কিছুটা মতভেদ থাকলেও তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ অভিন্ন । যথা :
১. নারীর পারিবারিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা : আদিম কাল থেকেই নারীরা অবহেলিত ও নিগৃহীত। এমনকি পরিবারের অভ্যন্তরে তাদের ভোগের পণ্য অথবা গৃহদাসী হিসেবে ব্যবহার করা হতো। পরিবারে নারীর সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করা উদারনৈতিক নারীবাদীদের উদ্দেশ্য ।
২. নারীর সামাজিক অধিকার প্রতিষ্ঠা : একজন নারী পরিবারের ন্যায় সমাজেও নানা অধিকার হতে বঞ্চিত। নারী যাতে সমাজে পুরুষের পাশাপাশি সমান ও ন্যায্য অধিকার লাভ করতে পারে উদারনৈতিক নারীবাদীরা সেই উদ্দেশ্য পালনে সচেষ্ট হয়।
৩. নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের মাধ্যমে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা : শুধুমাত্র ইসলাম ধর্ম ছাড়া পৃথিবীর অন্যান্য ধর্মগুলোতে নারীর অর্থনৈতিক অধিকারকে খর্ব করা হয়েছে। এমনকি পিতামাতার সম্পত্তি থেকেও নারীকে বঞ্চিত করা হয়েছে। উদার নারীবাদ নারীদের অর্থনৈতক অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নারী ক্ষমতায়নে সচেষ্ট হয়।
৪. নারীর রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা : অর্থনীতির পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়নের জন্য নারীর রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করা উদারনৈতিক নারীবাদের অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। উদারবাদীরা শুধুমাত্র সংরক্ষিত সংসদীয় নারী আসনের পক্ষপাতী না হয়ে পুরুষের সাথে তাল মিলিয়ে নারী অংশগ্রহণের জন্য জোর দিয়ে থাকেন।
৫. নারীর আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠা : বিভিন্ন সমাজ ও রাষ্ট্র নারী অধিকার রক্ষায় আইন প্রণয়ন করে থাকে। কিন্তু পুরুষশাসিত সমাজব্যবস্থায় নারীরা তাদের আইনগত অধিকার হতেও বঞ্চিত। উদারবাদী নারীরা নারীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত আইনের ব্যাখ্যা প্রদান করে নারী অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হন।
→ উদার নারীবাদের সমালোচনা : নারী আন্দোলনের পথদ্রষ্টা এবং নারী আন্দোলনের প্রাথমিক পর্যায়ে সূচনা হওয়া উদার নারীবাদ অত্যন্ত সমাদৃত হলেও তা সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। নিচে উদার নারীবাদের সমালোচনা তুলে ধরা হলো:
১. নারী ও পুরুষের মধ্যে বিরাজমান বৈষম্যসমূহ অর্থাৎ যে সমস্ত কারণে নারী অধীনস্ত সেই সমস্ত বিষয় নিয়ে উদার নারীবাদ কথা বললেও বৈষম্যের মূল উৎপাদনে বৈপ্লবিক পন্থা অনুসরণ করে না ।
২. উদার নারীবাদ ‘পুঁজিবাদ’ ও ‘সমাজতন্ত্রে’ নারীর অবস্থা নিয়ে আলোচনা করলেও তত্ত্বসমূহের পরিবর্তনে কোন মতামত ব্যক্ত করে না ।
৩. উদার নারীবাদ শ্রেণি বর্ণ বৈষম্যের সাথে লিঙ্গ বৈষম্যকে সম্পর্কিত করে না বরং তা লিঙ্গ বৈষম্যকে একক সামাজিক সমস্যা হিসেবে দেখে ।
৪. উদার নারীবাদ নারী অধিকার আন্দোলনকে একটি চাপ প্রয়োগকারী গ্রুপ হিসেবে দেখে। জাতিসংঘ, আন্ত-র্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা এবং NGO প্রভাবিত নারী আন্দোলন এ ধারার অংশ। তবে অধিকাংশ নারী এখনও উদার নারীবাদ দ্বারা প্রভাবিত এবং এর সাথে সম্পৃক্ত।
৫. উদার নারীবাদ সমাজের বিভিন্ন স্তরের নারীদের বিভিন্ন তারতম্য বিবেচনায় নিয়ে সমগ্র নারীর সমস্যাকে সমভাবে দেখে এবং সকল নারীর সমস্যা সমাধানে অভিন্ন পন্থা গ্রহণের পক্ষপাত ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, উদার নারীবাদ তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ তুলে ধরার মাধ্যমে সর্বস্তরের নারীদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয় এবং নারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে নারী অধিকারের বিষয়টি আন্দোলনের রূপলাভ করে ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ উদার নারীবাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো কী কী । সমালোচনাসহ তুলে ধর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম উদার নারীবাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো কী কী । সমালোচনাসহ তুলে ধর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।