সমাজবিজ্ঞানই একমাত্র বিজ্ঞান যা সমাজ ও সামাজিক বিষয়ে আলোচনা করে
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সমাজবিজ্ঞানই একমাত্র বিজ্ঞান যা সমাজ ও সামাজিক বিষয়ে আলোচনা করে ম্যাকাইভার এর উক্তিটি ব্যাখ্যা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সমাজবিজ্ঞানই একমাত্র বিজ্ঞান যা সমাজ ও সামাজিক বিষয়ে আলোচনা করে ম্যাকাইভার এর উক্তিটি ব্যাখ্যা কর ।
সমাজবিজ্ঞানই একমাত্র বিজ্ঞান যা সমাজ ও সামাজিক বিষয়ে আলোচনা করে |
সমাজবিজ্ঞানই একমাত্র বিজ্ঞান যা সমাজ ও সামাজিক বিষয়ে আলোচনা করে ম্যাকাইভার এর উক্তিটি ব্যাখ্যা কর
- অথবা, ‘সমাজবিজ্ঞানই একমাত্র বিজ্ঞান যা সমাজ ও সামাজিক বিষয়ে আলোচনা করে।'- ম্যাকাইভারের এ উক্তিটি সম্পর্কে তোমার মতামত দাও।
উত্তর : ভূমিকা : মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধভাবে বসবাস করাই তার স্বভাব। সমাজবিজ্ঞান একটি সামাজিক বিজ্ঞান। সামাজিক বিজ্ঞান হিসেবে সমাজবিজ্ঞান সমাজের সাথে জড়িত। সমাজ ও সামাজিক সম্পর্ক নিয়েই সমাজবিজ্ঞান আলোচনা করে।
সমাজে মানুষ বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কের ভিত্তিতে জড়িত থাকে। এই সম্পর্ক নিয়ে সমাজবিজ্ঞানী গবেষণা ও আলোচনা করে । তাই দেখা যায়, সমাজবিজ্ঞান সমাজ ও সামাজিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন ।
→ প্রাসঙ্গিক উক্তিটির ব্যাখ্যা : ম্যাকাইভারের উক্তিটি ব্যাখ্যা করার জন্য প্রথমে সমাজ, সামাজিক সম্পর্ক এবং বিজ্ঞান বিষয়টি ব্যাখ্যার প্রয়োজন ।
→ সমাজ : মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করাই মানুষের স্বভাব। ম্যাকাইভার society নামক গ্রন্থে বলেন, যেসব সামাজিক সম্পর্কের মধ্যে আমরা জীবনযাপন করি তাদের সংগঠিত রূপই সমাজ। সমাজ হলো একটি বিমূর্ত ধারণা, সমাজ বলতে পারস্পরিক সম্পর্ক বুঝায়।
→ সামাজিক সম্পর্ক : সামাজিক সম্পর্ক বলতে সমাজবদ্ধ মানুষের সঙ্গে অপর মানুষের কিংবা সামাজিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মানুষের পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সমাজবিজ্ঞানী স্বকর্ম ও তাঁর অনুসারী সমাজবিজ্ঞানী সমাজকে দেখেছেন গভীর অন্তর্দৃষ্টি থেকে।
→ সামাজিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক বিদ্যমান। নিম্নে উল্লেখ করা হলো :
১. রক্তের সম্পর্ক : রক্তের সম্পর্কের ভিত্তি হলো পরিবার। পিতা-মাতা, ভাই-বোন, জাতিগোষ্ঠী, আত্মীয়স্বজন সন্তানসন্তনি সবই রক্তের সম্পর্কে সম্পৃক্ত। এই ব্যক্তিবর্গ সমাজের সাথে সম্পর্কিত।
২. বিবাহ ও মৌখিক সম্পর্ক : সমাজের সম্পর্কের আরেকটি দিক হলো দুই পরিবার একটি সম্পর্কের জ্ঞানে আবদ্ধ হয়। আবার মৌখিক সম্পর্কের মাধ্যমে সামাজিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। যেমন- লিভ টুগেদার (live together)
৩. আদর্শভিত্তিক সম্পর্ক : আদর্শভিত্তিক সম্পর্ক হলো একটি আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে একটি দলে আবদ্ধ হওয়া। যেমন- রাজনৈতিক দল, আমলা, কর্মচারী ইত্যাদি ।
৪. ধর্মীয় "ম্পর্ক : সমাজে বিভিন্ন ধর্মের লোক বাস করে। ধর্মের ভিত্তিতে মুসলমান, হিন্দু আলাদা বন্ধনে আবদ্ধ ।
৫. বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক : সমাজের আরেকটি সম্পর্ক হলো বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক । সমাজে প্রত্যেক মানুষ বিভিন্ন মানুষের সাথে বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক গড়ে তোলেন ।
৬. অর্থনৈতিক সম্পর্ক : সমাজের মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিদ্যমান । যেমন— মালিক-শ্রমিক, শ্রমিক-সংগঠন সম্পর্ক ইত্যাদি ।
→ বিজ্ঞান : বিজ্ঞান হলো কোনো বিষয় সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান। পরীক্ষা, প্রমাণ, যুক্তি ইত্যাদি দ্বারা নির্ণীত সুশৃঙ্খল জ্ঞানই হলো বিজ্ঞান । অন্যভাবে বলতে গেলে, অনুসন্ধানলব্ধ সাধারণ নিয়ম প্রয়োগে রীতিগতভাবে অগ্রসর হয়ে যে জ্ঞান সংগ্রহ করা হয় তাকেই বিজ্ঞান বলে ।
বিশেষ রূপে জ্ঞানের চর্চা তথা গবেষণালদ্ধ জ্ঞানই হলো বিজ্ঞান।
→ ম্যাকাইভারের উক্তি বিশ্লেষণ : ম্যাকাইভার সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন, সমাজবিজ্ঞান সামাজিক সম্পর্কের বিজ্ঞান। তিনি আরো বলেন, সমাজবিজ্ঞানই একমাত্র বিজ্ঞান যা সমাজ ও সামাজিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে। ম্যাকাইভারের উক্তিটি বিশ্লেষণ করলে তিনটি বিষয় পাওয়া যায় । যথা-
(i) সমাজ;
(ii) সামাজিক সম্পর্ক ও
(iii) বিজ্ঞান ।
→ সমাজ ও সামাজিক সম্পর্ক বিশ্লেষণে সমাজবিজ্ঞান : মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধভাবে বসবাস করাই তার স্বভাব। প্রতিটি মানুষই কোন সমাজে বসবাস করে। ফলে সমাজের সাথে তার একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
মানুষ বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কযুক্ত থাকে। মানুষ একা বসবাস করতে পারে না। সামাজের সাথে তার একটি সম্পর্ক বিদ্যমান।
মানুষ দল, পরিবার, সমিতি, স্কুল, কলেজ, গ্রাম ও শহর ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কযুক্ত। সমাজবিজ্ঞান সমাজের এই সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা ও গবেষণা করে।
সমাজ কাঠামোর বিজ্ঞানভিত্তিক আলোচনা : সমাজবিজ্ঞান সমাজ কাঠামো নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক আলোচনা করে। সমাজবিজ্ঞান সমাজে মানুষের সাথে মানুষের, গোষ্ঠীর সাথে গোষ্ঠীর, মানুষের সাথে প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক আলোচনা করে।
উপরের আলোচনার ভিত্তিতে বলা যায়, সমাজবিজ্ঞানই একমাত্র বিজ্ঞান, যা সমাজ ও সামাজিক সম্পর্ক বিষয়ে পাঠ করে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সমাজবিজ্ঞান একটি বিজ্ঞান। এটি সমাজ, সামাজিক মানুষ, তাদের মধ্যে সম্পর্ক ইত্যাদি নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা করে।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে সমাজবিজ্ঞান পাঠ একান্ত প্রয়োজন। সমাজবিজ্ঞান সম্পর্কিত বিজ্ঞান সমাজের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করেন।
ম্যাকাইভার সমাজবিজ্ঞান সম্পর্কে যে উক্তি প্রদান করে তা প্রমাণ সাপেক্ষভাবে সত্য। তাই আমরা বলতে পারি সমাজবিজ্ঞান সমাজ ও সামাজিক সম্পর্ক নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা করে ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সমাজবিজ্ঞানই একমাত্র বিজ্ঞান যা সমাজ ও সামাজিক বিষয়ে আলোচনা করে ম্যাকাইভার এর উক্তিটি ব্যাখ্যা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সমাজবিজ্ঞানই একমাত্র বিজ্ঞান যা সমাজ ও সামাজিক বিষয়ে আলোচনা করে ম্যাকাইভার এর উক্তিটি ব্যাখ্যা কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।