সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা উল্লেখপূর্বক এর বিষয়বস্তু ও পরিধি নির্ণয় করুন
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা উল্লেখপূর্বক এর বিষয়বস্তু ও পরিধি নির্ণয় করুন জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা উল্লেখপূর্বক এর বিষয়বস্তু ও পরিধি নির্ণয় করুন ।
সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা উল্লেখপূর্বক এর বিষয়বস্তু ও পরিধি নির্ণয় করুন |
সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা উল্লেখপূর্বক এর বিষয়বস্তু ও পরিধি নির্ণয় করুন
- সমাজবিজ্ঞানের আওতা বা পরিসর বিশ্লেষণ কর ।
- অথবা, সমাজবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ কর।
- অথবা, সমাজবিজ্ঞানের পরিধি আলোচনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : আদিম যুগ থেকেই মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে দলবদ্ধ হয়ে বসবাস করে আসছে। এর ফলে গড়ে ওঠে সমাজ। আর এই সমাজ নিয়ে যে বিজ্ঞান কাজ করে তাই সমাজবিজ্ঞান।
সমাজবিজ্ঞানের পরিধি বা বিষয়বস্তু ব্যাপক ও বিস্তৃত । সমাজবিজ্ঞান সমাজের যাবতীয় দিক নিয়ে আলোচনা ও গবেষণা করে। সমাজের বিজ্ঞানভিত্তিক পাঠ হিসাবে গোটা | সমাজই সমাজবিজ্ঞানের পরিধিভুক্ত।
মানুষের জীবনযাত্রা দিন দিন পরিবর্তিত হচ্ছে ফলে সমাজবিজ্ঞানের পরিধি ব্যাপক থেকে ব্যাপকতর হচ্ছে। মানুষ সামাজিক জীব। তাই মানুষ ও সমাজের বিভিন্ন উপাদান সমাজবিজ্ঞানের পরিধিভুক্ত।
→ সমাজবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু : সমাজবিজ্ঞান এমন একটি বিজ্ঞান যা পরিবর্তিত সমাজের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করে । সমাজ বিজ্ঞানের বিষয়বস্তু ব্যাপক ও বিস্তৃত ।
নিম্নে সমাজবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু আলোচনা করা হলো :
১. ঐতিহাসিক সমাজবিজ্ঞান : সমাজবিজ্ঞানের অন্যতম বিষয় হলো ঐতিহাসিক বিষয়াবলি আলোচনা করা। সমাজবিজ্ঞান কেবল বর্তমান সমাজব্যবস্থাই আলোচনা করে না, ইহা প্রাচীন সমাজব্যবস্থা নিয়েও আলোচনা করে। প্রাচীন সমাজের উৎপত্তি, বিকাশ ও জীবনযাত্রা ইত্যাদি সমাজবিজ্ঞানের পরিধিভুক্ত।
২. শিক্ষা ক্ষেত্রে সমাজবিজ্ঞান : সমাজবিজ্ঞানের অন্যতম বিষয় হলো শিক্ষা সম্পর্কিত আলোচনা করা। শিক্ষা সমাজের অন্যতম প্রতিষ্ঠান । সমাজবিজ্ঞান শিক্ষার উদ্দেশ্য ও পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করে।
এছাড়াও শিক্ষার ফলে মানুষের আচরণ পরিবর্তিত হয় । সমাজবিজ্ঞান সেই সম্পর্কে দিক নির্দেশনা দেন। সমাজের সাথে শিক্ষার সম্পর্ক, মানুষের সাথে শিক্ষার সম্পর্ক ও শিক্ষার্থী আচার আচরণ সমাজবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় ।
৩. পরিবারের ক্ষেত্রে সমাজবিজ্ঞান : সমাজবিজ্ঞানের ক অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান হলো পরিবার। পরিবারের গঠন, না উৎপত্তি, ধরন ইত্যাদি সম্পর্কে সমাজবিজ্ঞান আলোচনা করে। আধুনিক পরিবারের সাথে প্রাচীন পরিবারের সম্পর্ক, আদিম পরিবারের উৎপত্তি সম্পর্কেও সমাজবিজ্ঞান আলোচনা করে ।
৪. ধর্মের সমাজতত্ত্ব : সমাজবিজ্ঞান বিভিন্ন গোষ্ঠীর বিভিন্ন ধরনের ধর্ম নিয়ে আলোচনা করে। সমাজের শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ধর্মের ভূমিকা ও গুরুত্ব নিয়ে সমাজবিজ্ঞান বিজ্ঞানসম্মত ধারণা দেন। মানুষের জীবনে ধর্মের প্রভাব কতটুকু, সে সম্পর্কে সমাজবিজ্ঞান আলোচনা করে ।
৫. সামাজিক জনজীবন : সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো জনসংখ্যা। সমাজের উপর জনসংখ্যার প্রভাব কেমন, জনসংখ্যার হ্রাস-বৃদ্ধির ফলে সমাজের কোনোরূপ পরিবর্তন হয় কি না এটাও সমাজবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় ।
৬. রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সমাজবিজ্ঞান : সমাজবিজ্ঞান রাজনৈতিক পটভূমি নিয়ে আলোচনা করে। মানুষের কল্যাণের সাথে রাজনৈতিক কার্যাবলি জড়িত। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের উদ্ভব, বিকাশ, ভূমিকা ও কার্যাবলি নিয়ে সমাজবিজ্ঞান আলোচনা করে ।
৭. আইনের সমাজতত্ত্ব : সমাজবিজ্ঞান সমাজে আইনের প্রয়োগ রূপ, সামাজিক আইন, আইনের উৎস, সমাজে আইনের | প্রভাব ও কার্যকারিতা এবং মানুষের আইনগত অধিকার ও কর্তব্য নিয়ে সমাজবিজ্ঞান আলোচনা করে ।
৮. সাংস্কৃতিক সমাজবিজ্ঞান : প্রতিটি সমাজের নিজস্ব সংস্কৃতি বিদ্যমান। সংস্কৃতি সমাজের পরিচয় বহন করে। সংস্কৃতি সাধারণত বস্তুগত ও অবস্তুগত হয়ে থাকে। এসব সংস্কৃতির উদ্ভব, বিকাশ ও জনজীবনে এর প্রভাব সম্পর্কে সমাজবিজ্ঞান আলোচনা করে।
৯. চিকিৎসা সমাজতত্ত্ব : সমাজবিজ্ঞান চিকিৎসাশাস্ত্র নিয়েও আলোচনা করে। মানুষের জন্য চিকিৎসাশাস্ত্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সমাজে ডাক্তার রোগীর সম্পর্ক, রোগী নার্সের সম্পর্ক কি ধরনের হবে তা আলোচনা করে। সমাজবিজ্ঞান, আধুনিক ও প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়েও আলোচনা করে। তাই চিকিৎসাশাস্ত্র সমাজবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় ।
১০. শিল্প সমাজতত্ত্ব : সমাজবিজ্ঞান সমাজে মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক, শ্রমিক-শ্রমিক সম্পর্ক নিয়ে এবং তাদের জীবনযাত্রা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে। শিল্প কারখানার উদ্ভবের ফলে সমাজের মানুষের জীবনযাত্রা কিরূপ পরিবর্তন আনে তা সমাজবিজ্ঞান আলোচনা করে ।
১১. সামাজিক পরিসংখ্যান : সমাজের মধ্যে বিভিন্ন ঘটনাবলি বিশ্লেষণের জন্য সংখ্যাতাত্ত্বিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। কারণ এসব সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়ার জন্য সংখ্যাতাত্ত্বিক পদ্ধতি প্রয়োজন। আর এজন্য সমাজবিজ্ঞান পরিসংখ্যান পদ্ধতির ব্যবহার গ্রহণ করে থাকে।
১২. সামাজিক মনোবিজ্ঞান : সমাজবিজ্ঞান সমাজে অবস্থিত মানুষের আচরণ ও ব্যক্তিত্ব নিয়ে আলোচনা করে। সমাজবিজ্ঞান মনোবিজ্ঞানের নগর মানুষের আচরণ, ব্যক্তিত্ব নিয়ে আলোচনা ও গবেষণা করে।
১৩. গোষ্ঠীর সমাজতত্ত্ব : বিভিন্ন গোষ্ঠীর উদ্ভব, কৃষ্টি, কালচার, আচার-আচরণ, সমাজবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়। বিভিন্ন গোষ্ঠীর মানুষের জীবনধারা ও সমাবিজ্ঞান আলোচনা করে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মানুষ সামাজিক জীব হিসেবে সমাজে বসবাস করে। মানুষের সাথে সমাজের যে সম্পর্ক সমাজবিজ্ঞান তা আলোচনা করে।
সমাজবিজ্ঞান এমন একটি বিজ্ঞান যা সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংঘ, সমাজিক পরিবর্তন, মানবিক সম্পর্ক, আচার-আচরণ, মূল্যবোধ, সামাজিক সমস্যা। মানুষের জীবনধারা ইত্যাদি আলোচনা করে। তাই আমরা বলতে পারি সমাজবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় ব্যাপক ও বিস্তৃত।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা উল্লেখপূর্বক এর বিষয়বস্তু ও পরিধি নির্ণয় করুন
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সমাজবিজ্ঞানের সংজ্ঞা উল্লেখপূর্বক এর বিষয়বস্তু ও পরিধি নির্ণয় করুন । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।