বাংলাদেশে সমাজবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বাংলাদেশে সমাজবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বাংলাদেশে সমাজবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর ।
বাংলাদেশে সমাজবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর |
বাংলাদেশে সমাজবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর
- সমাজবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর।
- অথবা, সমাজবিজ্ঞান পাঠের গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।
- অথবা, সমাজবিজ্ঞান অধ্যয়নের তাৎপর্য বা আবশ্যকতা কি?
উত্তর : ভূমিকা : মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করাই তার স্বভাব। সৃষ্টিলগ্নে মানুষ ছিল অসহায় তাই তারা সমাজ গড়ে তোলে। আর এই সমাজকে নিয়েই আলোচনা করে সমাজবিজ্ঞান।
সমাজের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জ্ঞান লাভ ও মানুষের আচার-আচরণ, জীবনযাত্রা প্রণালি সম্পর্কে জ্ঞান লাভের জন্য সমাজবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম ।
সমাজবিজ্ঞান পাঠের মাধ্যমে সমাজের সাথে বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কও জানা যায়। তাই আমরা বলতে পারি সমাজবিজ্ঞান সামাজিক কর্মকাণ্ডের বিজ্ঞান।
→ সমাজবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা : মানুষের প্রয়োজনেই সমাজ এর উদ্ভব। আর সমাজের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণের জন্য সমাজবিজ্ঞানের উৎপত্তি। সমাজ সম্পর্কে জ্ঞান লাভের জন্য সমাজবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
নিম্নে সমাজবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করা হলো :
১. মানব সভ্যতা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ : সমাজবিজ্ঞান পাঠের মাধ্যমে মানব সভ্যতা সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা যায়। আদিম যুগে মানুষ কিভাবে বসবাস করত। তাদের জীবনধারা কেমন ছিল, তাদের আচার-আচরণ ও কৃষ্টি কালচার সম্পর্কে জানার অন্যতম উৎস হলো সমাজবিজ্ঞান । মানুষের জীবনধারা পরিবর্তনে সমাজবিজ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
২. সমাজ সম্পর্কে ধারণা লাভ : সমাজ সম্পর্কে জ্ঞান লাভের অন্যতম মাধ্যম হলো সমাজবিজ্ঞান। সমাজের গঠন কাঠামো, শ্রেণিবিভাগ, পারস্পরিক সম্পর্ক, রীতিনীতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভের জন্য সমাজবিজ্ঞান পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম ।
৩. মানুষ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ : মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। সমাজের মানুষ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে সমাজবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম ।
সমাজে বসবাসরত মানুষের চরিত্র, চাল- চলন, আচার-আচরণ, রীতিনীতি সম্পর্কে জানতে সমাজবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজানীয়তা অপরিসীম। সমাজবিজ্ঞান মানুষের জীবন প্রণালি সম্পর্কে আলোচনা ও গবেষণা করে থাকে ।
৪. দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করে তোলে : সমাজে প্রত্যেক ব্যক্তির কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। এসব দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে দিক-নির্দেশনা দেন সমাজবিজ্ঞান। তাই কেউ সমাজে চলতে গেলে এসব দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। সমাজবিজ্ঞান পাঠের মাধ্যমে এসব দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া যায়।
৫. সমাজের শ্রেণিবিন্যাস সম্পর্কে ধারণা লাভ : সমাজে বিভিন্ন শ্রেণির লোক বসবাস করে। কেউ উচ্চবিত্ত, কেউ মধ্যবিত্ত, কেউ নিম্নবিত্ত। এছাড়াও হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও মুসলমানরা সমাজে বসবাস করে। সমাজে বিরাজমান এই শ্রেণিবিন্যাস সম্পর্কে জ্ঞানলাভের জন্য সমাজবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম
৬. সমাজ কাঠামো সম্পর্কে জ্ঞানলাভ : সমাজ কাঠামো সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে সমাজবিজ্ঞান সহায়তা করে । সমাজবিজ্ঞান হলো সমাজবিজ্ঞানের একটি কেন্দ্রীয় প্রত্যয়।
সমাজ কাঠামোর পরিবর্তন ও বিকাশ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে হলে সমাজবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম
৭. অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রণয়নে সমাজবিজ্ঞান : যেকোন সমাজের উন্নয়নের জন্য অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ব্যতীত কোন | সমাজ উন্নতি করতে পারে না। এই অর্থনৈতিক পরিকল্পনা সমাজের মানুষের জন্য কতটা উপকারিতা বয়ে আনবে তা সমাজবিজ্ঞান পাঠ করে জানা যায় ।
৮. সামাজিক পরিকল্পনার জন্য সমাজবিজ্ঞানের জ্ঞান : সামাজিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান ও সামাজিক সমস্যার সমাধানের জন্য সমাজবিজ্ঞানের জ্ঞান খুব প্রয়োজন ।
৯. সামাজিক সমস্যা সমাধানে সমাজবিজ্ঞান : সমাজে বসবাস করতে গিয়ে মানুষ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। এই সমস্যার সমাধানের জন্য সমাজ বিজ্ঞানের জ্ঞান অত্যাবশ্যক। বর্তমানে মানুষ বিভিন্ন সামাজিক সমস্যায় জর্জরিত। এই সমস্যা সমাধানের জন্য সমাজবিজ্ঞানের জ্ঞানের বিকল্প নেই।
১০. সামাজিক অপরাধ সম্পর্কে ধারণা : সমাজে বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত হয়। এসব অপরাধ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ ও অপরাধ দূরীকরণে কি করণীয় তা জানতে সমাজবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজন। সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমানোর জন্য সমাজবিজ্ঞানের জ্ঞান অত্যাবশক।
১১. মানব সংস্কৃতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ : মানব সংস্কৃতির উন্নতি ও বিকাশ সাধনে সমাজবিজ্ঞানের জ্ঞান অত্যাবশ্যক। বর্তমানে সমাজবিজ্ঞানের কারণে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি একে অপরের সাথে সংমিশ্রণ হচ্ছে।
১২. সামাজিক উন্নয়নে সমাজবিজ্ঞান : সামাজিক উন্নয়নে সমাজবিজ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। সমাজকে উন্নতর করতে হলে সমাজ বিজ্ঞানের জ্ঞান প্রয়োজন। কিভাবে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হলে সমাজে উন্নয়ন সম্ভব তা আমরা সমাজবিজ্ঞান অধ্যয়ন করে পেয়ে থাকি ।
১৩. সামাজিক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা লাভ : সমাজবিজ্ঞান পাঠের মাধ্যমে সামাজিক প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়।
মানব সমাজে মানবগোষ্ঠীর বিভিন্ন উন্নয়ন ও স্বার্থসিদ্ধির জন্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানসমূহের গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের সুষ্ঠু সমাজ জীবনের জন্য এই সমাজ প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আলোচনা ও অনুশীলন আবশ্যক ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সামাজিক জীব হিসেবে সমাজে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে বসবাস করতে হলে সামাজিক জ্ঞান প্রয়োজন। সমাজের কাঠামো, মানুষ ও তাদের জীবনধারা সম্পর্কে জানতে হলে সমাজবিজ্ঞান পাঠ একান্ত আবশ্যক।
মানবসমাজ ও মানবজাতির উন্নয়নের জন্য সমাজবিজ্ঞানের জ্ঞান থাকা দরকার। তাই আমরা বলতে পারি সমাজ ও সমাজের মানুষ সম্পর্কে জ্ঞান লাভের জন্য সমাজবিজ্ঞানের জ্ঞান অপরিসীম।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ বাংলাদেশে সমাজবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বাংলাদেশে সমাজবিজ্ঞান পাঠের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।