বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পটভূমি ও গুরুত্ব আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পটভূমি ও গুরুত্ব আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পটভূমি ও গুরুত্ব আলোচনা কর ।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পটভূমি ও গুরুত্ব আলোচনা কর |
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পটভূমি ও গুরুত্ব আলোচনা কর
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের গুরুত্ব আলোচনা কর।
- স্বাধীন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের গুরুত্ব বর্ণনা কর ।
উত্তর : ভূমিকা : ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখনো পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন। ফলে সদ্য স্বাধীন দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করে মুজিবনগর সরকারের সদস্যবৃন্দ।
এমনি প্রেক্ষাপটে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি শেখ মুজিব নিজ মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন করেন এবং মুজিবনগর সরকারের শাসনতন্ত্র অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
এভাবেই ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারির শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের শাসনামল বা বঙ্গবন্ধুর শাসনামল।
এ পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলায় প্রত্যাবর্তনের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম কেননা তার প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে দেশে পদ্ধতিগত শাসনব্যবস্থার সূচনা হয় ।
→ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের গুরুত্ব : ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বদেশে ফিরে এসে ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধু যখন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের শাসনভার গ্রহণ করেন সে সময় এ দেশটি নয় মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধ ও পাকিস্তান বাহিনীর জ্বালাও পোড়াও নীতির ফলে হয়ে পড়েছিল এক যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ড।
আর এমনি প্রেক্ষাপটে তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন গুরুত্বের স্বাক্ষর বহন করে। নিচে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের গুরুত্ব আলোচনা করা হলো :
১. সংসদীয় পদ্ধতির সরকার প্রবর্তন : ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রেসিডেন্ট হিসেবেই নিজ মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন করেন।
বঙ্গবন্ধুর শাসনভার গ্রহণের সাংবিধানিক ভিত্তি ছিল ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে ঘোষিত স্বাধীনতার সনদ।
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে বঙ্গবন্ধু সর্বপ্রথম যে কাজটি করেন তা হলো অস্থায়ী সংবিধান আদেশ জারির মাধ্যমে দেশে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন। বঙ্গবন্ধুর আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল একটি সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার।
সেই লক্ষ্যে অস্থায়ী সংবিধান আদেশ জারির পর ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু প্রধান বিচারপতির কাছে প্রথমে দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন এবং পদত্যাগ করে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ফলে সদ্য স্বাধীন সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।
২. ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার : ১০ জানুয়ারি স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভারতীয় সৈন্য ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি যখনই বলব, ভারতীয় সেনাবাহিনী তখনই দেশে ফেরত যাবে”।
এভাবে আস্তে আস্তে. অনেককে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। তার কথার গুরুত্ব অনুধাবন করা যায়। কিছুদিন পরেই সরকার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ২৫ দিনের মধ্যেই তিনি বাংলাদেশে অবস্থানরত ভারতীয় সৈন্যবাহিনীকে তাদের দেশে ফেরত পাঠাতে সক্ষম হয়েছিলেন।
আর এটি সম্ভব হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ কূটনৈতিক নীতির কারণে। তিনি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, স্বাধীন বাংলাদেশে এখন আর ভারতীয় সৈন্যবাহিনীর প্রয়োজন নেই।
ফলে ইন্দিরা গান্ধী তার গুরুত্ব অনুধাবন করে যথাশীঘ্র সম্ভব সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়। শেখ মুজিব ছাড়া এ কাজটি করা অসম্ভব ছিল।
৩. বাংলাদেশ দালাল অধ্যাদেশ জারি : একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দুঃসহ নির্যাতন, গণহত্যা, নারী নির্যাতন, লুটপাট, গৃহে অগ্নিসংযোগ এবং অন্যান্য দুষ্কার্যে সহযোগিতা করার জন্য রাজাকার ও আলবদর বাহিনী গঠন করা হয়েছিল।
সারাদেশে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত গঠিত হয়েছিল। 'পিস কমিটি' যার সদস্যরা 'দালাল' নামে পরিচিত।
এসব জঘন্য যুদ্ধাপরাধী ব্যক্তিদের বিচারের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু স্বদেশে ফিরেই ঘোষণা দিয়েছিলেন 'বিশ্বকে মানব ইতিহাসের জঘন্যতম কুকীর্তির তদন্ত অবশ্যই করতে হবে'।
এর থেকে বলা যায়, দালালদের বিচার প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর কাছে অত্যন্ত গুরুত্ব লাভ করেছিল। তাই শাসন ভার গ্রহণের ২ সপ্তাহের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু ২৪ জানুয়ারি জারি করেন ‘বাংলাদেশ দালাল (বিশেষ ট্রাইবুনাল) অধ্যাদেশ।
১৯৭২ এ অধ্যাদেশের মাধ্যমে দালালদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে দালালদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলে বঙ্গবন্ধু অভ্যন্তরীণ চাপের সম্মুখীন হন।
তাই পরিস্থিতি বিবেচনায় তিনি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করলেও গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত ১১ হাজার দালালকে কারারুদ্ধ করেন ।
৪. ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রণয়ন : বাংলাদেশ স্বাধীন করার পিছনে বঙ্গবন্ধুর যেমন একটা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছিল, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে গঠনের জন্য বঙ্গবন্ধুর মনে অনুরূপ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ছিল। যার ওপর ভিত্তি করেই স্বাধীন বাংলাদেশের এগিয়ে চলা।
দেশের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে ১০ জানুয়ারি তিনি বলেন ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই যে, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে, আর তার ভিত্তি বিশেষ কোনো ধর্মভিত্তিক হবে না।
রাষ্ট্রের ভিত্তি হবে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। এদেশের কৃষক-শ্রমিক, হিন্দু-মুসলমান সুখে থাকবে, শান্তিতে থাকবে।'
দেশের স্বাধীনতা অর্থবহ করার জন্য তিনি দৃঢ় প্রত্যয়ে ষোঘণা করেন, বাংলাদেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। অর্থাৎ শাসনভার গ্রহণের সময় বঙ্গবন্ধু সরকার তার কর্তব্য কর্ম বিষয়ে অত্যন্ত সজাগ ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর কাছে এটা স্পষ্ট ছিল যে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তার কী কী কাজ করতে হবে এবং কত দ্রুততার সাথে তা করতে হবে। এ থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের গুরুত্ব অনুধাবন করা যায় ।
৫. সংবিধান প্রণয়ন : সংবিধান প্রণয়ের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা সংবিধান হচ্ছে একটি দেশের শাসনতান্ত্রিক বিধানের দলিল। কিন্তু সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে সুনির্দিষ্ট সাংবিধানিক ভিত্তি ছিল না।
তাই বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের একদিন পর ১১ জানুয়ারি সংবিধান প্রণয়নের লক্ষ্যে অস্থায়ী সংবিধান আদেশ জারি করেন।
অস্থায়ী সংবিধান আদেশ বলে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের লক্ষ্যে সরকার ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ গণপরিষদ অধ্যাদেশ ও বাংলাদেশ পরিষদ সদস্য আদেশ নামক ২টি অধ্যাদেশ জারি করে। গণপরিষদের একমাত্র দায়িত্ব ছিল বাংলাদেশের জন্য একটি সংবিধান প্রণয়ন করা।
এর ওপর ভিত্তি করে সংবিধান প্রণয়ন কমিটি গঠিত হয় যা ১৯৭২ সালে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের জন্য একটি চূড়ান্ত সংবিধান উপহার দেয়।
আর এ সংবিধান ছিল ব্যাপক, সুলিখিত দলিল এবং এ উপমহাদেশের অন্যান্য সংবিধানে তুলনায় উন্নতমানের।
এর থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের গুরুত্ব সহজেই অনুধাবন করা যায়। কেননা তার সময়কালে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য ছিল সংবিধান প্রণয়ন করা।
৬. যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠন : যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম।
বাংলাদেশ স্বাধীন করার পিছনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যেমন একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছিল, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ গঠন করার জন্যও বঙ্গবন্ধুর মনে যে একটি কর্মকৌশল তৈরি করাই ছিল তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিন থেকে পরবর্তী ২/৩ দিন প্রদত্ত বক্তব্য বিবৃতি থেকে অনুধাবন করা যায় । যার ওপর ভিত্তি করে তিনি দেশ পুনর্গঠনে অগ্রসর হন।
কেননা যুদ্ধপরবর্তী সময়ে এদেশের প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক সামাজিক, যোগাযোগ, আইনশৃঙ্খলা প্রভৃতি ব্যবস্থা বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিল। বঙ্গবন্ধু এসব বিধ্বস্ত বিষয়সমূহকে পুনর্গঠিত করার জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেন ।
৭. শরণার্থী পুনর্বাসন : পুনর্বাসনের বিশাল দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শাসনকার্য শুরু করেছিলেন। ভারতে আশ্রয়গ্রহণকারী প্রায় একেকটি শরণার্থীকে পুনর্বাসন করা দেশের অভ্যন্তরে প্রায় ৪৩ লক্ষ বিধ্বস্ত বাসগৃহ পুনর্নির্মাণ করা এবং এদেরকে খাদ্যসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করা ছিল সরকারের বিরাট দায়িত্ব।
বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর শরণার্থী সমস্যা সমাধানের জন্য বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং মাত্র ৩ মাসের মধ্যে ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রায় ৯ লক্ষ ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ করেন এবং শরণার্থীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেন।
৮. অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রণয়ন : ১৯৭২ সালের ১৪ জানুয়ারি এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি তার সরকারের অর্থনৈতিক নীতি তুলে ধরে বলেন সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠায় তা চূড়ান্ত লক্ষ্য।
বর্তমান মুহূর্তে পুনর্বাসন ও জাতীয় অর্থনীতি পুনর্গঠিত করাই সবচেয়ে জরুরি বিষয়। তিনি বলেন, অর্থনীতিকে পুনরায় সচল করে তুলতে হবে।
খাদ্য, আশ্রয়, পরিধানের বস্ত্রের ব্যবস্থা করতে হবে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় চালু করা হবে এবং সকল শ্রেণির মানুষের পক্ষে শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ গড়ে তোলা হবে, জরুরি ভিত্তিতে সাহায্য ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে তিনি অর্থসংস্কারে মনোনিবেশ করেন এবং পাচ বছর মেয়াদি পাঠশালা পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন ।
৯. আইনশৃঙ্খলা রক্ষা : যুদ্ধপরবর্তী সময়ে দেশে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল। তাই দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের স্বার্থে বঙ্গবন্ধু প্যারা মিলিটারি বাহিনী হিসেবে জাতীয় রক্ষী বাহিনী গঠন করে।
এছাড়া সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সুদৃঢ় করার দিকেও বঙ্গবন্ধুর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ছিল। তার সরকারের আর্থিক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও তিনি | সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নে মনোনিবেশ করেন।
কেননা যুদ্ধপরবর্তী | সময়ে দেশে খুন, ছিনতাই, ডাকাতি, রাহাজানি, লুটপাট প্রভৃতি বৃদ্ধি পেয়েছিল যা আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করছিল।
তাই দেশ পুনর্গঠনে সর্বাগ্রে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ অপরিহার্য ছিল এ বিষয়টি শেখ মুজিব অনুধাবন করেছিলেন।
১০. পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ : বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম।
১৪ জানুয়ারি এক সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি কী হবে সে বিষয়ে তার মতামত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ সহ-অবস্থানের নীতিতে বিশ্বাসী, আমাদের নীতি হচ্ছে সকলের সহিত বন্ধুত্ব, কারও সাথে বিদ্বেষপরায়ণতা নয়, আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হইবে জোট নিরপেক্ষ।
অর্থাৎ তার পররাষ্ট্রনীতির মূলকথা ছিল শান্তিপূর্ণ সহ- অবস্থান এবং সকলের প্রতি বন্ধুত্ব প্রতিষ্ঠা ও জোটনিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতিতে অনুসরণ করা।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠন, ভারতীয় সৈন্য ফেরত পাঠান, যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি প্রদান, সংবিধান প্রণয়ন করা, সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থার প্রবর্তন করা, অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ, শরণার্থী সমস্যার সমাধান এবং বৈদেশিক নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম।
তিনি শুধু স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ গঠনেই সাফল্য দেখেননি, স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের করণীয় ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রণয়নেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন।
আর এটা সম্ভব হয়েছিল ১০ জানুয়ারি তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে। তাই বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন খুবই তৎপর্যপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পটভূমি ও গুরুত্ব আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পটভূমি ও গুরুত্ব আলোচনা কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।