সিমন দ্য বেভোয়ার জীবন ও চিন্তাধারা সম্পর্কে লেখ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সিমন দ্য বেভোয়ার জীবন ও চিন্তাধারা সম্পর্কে লেখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সিমন দ্য বেভোয়ার জীবন ও চিন্তাধারা সম্পর্কে ধারণা দাও।
সিমন দ্য বেভোয়ার জীবন ও চিন্তাধারা সম্পর্কে লেখ |
সিমন দ্য বেভোয়ার জীবন ও চিন্তাধারা সম্পর্কে লেখ
- অথবা, সিমন দ্য বেভোয়ার জীবন ও চিন্তাধারা সম্পর্কে ধারণা দাও ।
- অথবা, সিমন দ্য বেভোয়ার জীবন ও চিন্তাধারা সম্পর্কে আলোচনা কর ।
উত্তর : ভূমিকা : সিমন দ্য বেভোয়ার ছিলেন একজন ফরাসি লেখক, নারীবাদী ও বুদ্ধিজীবী। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে ফরাসি, দার্শনিক জাঁ পল সার্ত্রে ও তাঁর সমসাময়িক বুদ্ধিজীবীদের দ্বারা সংগঠিত
অস্তিত্ববাদী আন্দোলনের ধারা সমকালীন চিন্তা ও চেতনায় আলোড়নের সৃষ্টি করে । এই দর্শন রাজনীতি, সাহিত্য, শিল্পকলা ও জীবনবোধের ওপর গভীর প্রভাব বিস্তার করে। সিমন ছিলেন এই আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব ।
→ জীবন ও চিন্তাধারা : সিমন দ্য বেভোয়ার (১৯০৮-১৯৮৬) ফ্রান্সের এক বুর্জোয়া পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। উপন্যাস, নাটক ও চিন্তাশীল নারীবাদী গ্রন্থ রচনার জন্য তিনি সমগ্র বিশ্বে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন। সরবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে গ্রাজুয়েশনের পর মার্সেই, রুয়েল ও প্যারিসে শিক্ষকতা করেন।
পরে তিনি সরবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীতে সার্ত্রের সঙ্গে যৌথভাবে অস্তিত্ববাদী গ্রন্থ রচনা করে তিনি ইউরোপীয় দার্শনিক ও বুদ্ধিজীবীদের মাঝে ব্যাপক পরিচিত হয়ে ওঠেন। সার্ত্রে, মার্লোপন্ডি এবং রেমন্ড আরোনের সাথে মিলিতভাবে প্রকাশ করেন 'লা ডেম্প মর্দানে' নামক পত্রিকা।
তাঁর প্রথম গ্রন্থ 'লা ইনভিত্তি' (১৯৪৩) সালে প্রকাশিত হয়। এরও এক দশক পর ১৯৫৪ সালে লা ম্যান্দারিন' উপন্যাসের জন্য তিনি সমালোচকদের নিকট থেকে ব্যাপক প্রশংসা কুড়ান। তাঁর এই উপন্যাস 'প্রি কনকোর্ত” পুরস্কার লাভ করেন। কাজ ও চেতনাগত ঐক্য সিমন ও সার্ত্রের জীবনকে একসূত্রে আবদ্ধ করে।
তারা বিয়ে না করেও আজীবন যৌথ জীবন-যাপন করেন। এভাবেই মুক্ত চেতনার ক্রিয়াশীলতা তাদের মধ্যে দেখা যায়। যা ছিল অস্তিত্ববাদেরই অংশ। উভয়ে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এই দর্শন অনুসরণ করে গেছেন।
এছাড়াও ঘনিষ্ঠ জীবন-যাপনের মধ্যেও নারী ও পুরুষের পরস্পরের প্রতি যে দায়বোধ, সেই ভাবনা থেকেই বেভোয়ার তাঁর রচনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক নারীবাদী আন্দোলনকে সমৃদ্ধ করেছেন। তিনি বেশ কয়েকটি প্রভাব সঞ্চারকারী গ্রন্থ রচনা করেছেন ।
তাঁর বিখ্যাত নারীবাদী গ্রন্থ হলো “The Second Sex' (১৯৪৯) উল্লেখ্য গ্রন্থটি অস্তিত্ববাদী দর্শনের ওপর ভিত্তি করে রচিত। গ্রন্থটি অদ্যাবধি পর্যন্ত নারীমুক্তির ভাবনাকে প্রভাবিত করে চলেছে। এই গ্রন্থের মধ্যেই তিনি লেখেন, “নারী হয়ে কেউ জন্মায় না, নারী হয়ে ওঠে।
” তিনি আরও বলেন, “পুরুষের কাজকেই বিশ্বের কাজ বলে মনে করা হয়, তার পৃথিবী বলে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু পৃথিবীকে পুরুষেরা শুধু তাদের দৃষ্টিকোণ থেকেই বর্ণনা করে, সেই বর্ণনা পরম সত্য কিনা তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।”
চার খণ্ডে তিনি তাঁর আত্মজীবনী লিখেছেন। সার্ত্রেকে ঘিরে তাঁর আরও একটি আত্মজীবনী আছে। যার শিরোনাম 'অদেউ : এ ফেয়ারওয়েল যা সার্ত্রে (১৯৮১) সার্ত্রের মৃত্যুর পর গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।
সাহিত্যে অনবদ্য অবদানের জন্য এই চিন্তাবিদ ১৯৭৮ সালে অস্ট্রিয়ার রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পান। ১৯৮৬ সালে সিমন মৃত্যুবরণ করেন এবং তাঁর ইচ্ছে অনুযায়ী সার্ত্রের কবরস্থানেই তাঁকে শায়িত করা হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, নারী অধিকার কর্মী বা নারীবাদী লেখিকা সিমন দ্য বেভোয়ার নারী অধস্তনতার কারণসমূহ অত্যন্ত সুচারু ও যৌক্তিকতার সাথে সকলের সামনে উন্মোচনে সক্ষম হয়েছেন।
সিমন নারীদের অধিকার আদায়ে ও পুরুষের ন্যায় মানুষ হয়ে উঠায় নারীদের নিজ সম্পর্কিত লেখনীর জন্য কলম হাতে নেবার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি পুরুষতান্ত্রিকতার দুর্গকে জ্ঞান দ্বারা ভাঙার জন্য নারী শিক্ষার কথা বলেছেন ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সিমন দ্য বেভোয়ার জীবন ও চিন্তাধারা সম্পর্কে ধারণা দাও
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সিমন দ্য বেভোয়ার জীবন ও চিন্তাধারা সম্পর্কে আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।