সেলজুকদের পরিচয় তুলে ধর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সেলজুকদের পরিচয় তুলে ধর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সেলজুকদের পরিচয় তুলে ধর।
সেলজুকদের পরিচয় তুলে ধর |
সেলজুকদের পরিচয় তুলে ধর
উত্তর : ভূমিকা : আব্বাসীয় শাসনামলে ইতিহাসে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজবংশের উত্থান ঘটেছিল। তার মধ্যে অন্যতম একটি রাজবংশ হলো সেলজুক। ইসলামি আন্দোলন শিক্ষার প্রসার, জ্ঞানবিজ্ঞান সেলজুকদের অবদান ছিল অপরিসীম। এশিয়া মাইনরে আব্বাসীয় সাম্রাজ্যে তারাই সর্বপ্রথম স্থায়ী মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করে ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন ।
→ সেলজুক বংশের পরিচয় : নিম্নে সেলজুক বংশের পরিচয় তুলে ধরা হলো :
১. সেলজুকদের পরিচয় : সেলজুকরা তুরকিস্তানের কিরঘিজ তুন্দ্রা অঞ্চলে তুর্কি গোত্রীয় ঘুজ বংশোদ্ভূত ছিলেন। ৯৫৬ সালে তারা সেলজুক বিন বায়হাকের নেতৃত্বে তুর্কিস্তানের কিরঘিজ মালভূমি ছেড়ে বুখারার এসে বসবাস শুরু করেন।
কালক্রমে তারা সুন্নি ইসলাম গ্রহণ করেন এবং ইসলামের ধারক ও বাহক হয়ে উঠেন। এরপর সেলজুকের পুত্র পিগু আরসলিনের নেতৃত্বে তারা পূর্ব পারস্যে এসে বসতি স্থাপন করেন। সেলজুক বিন বায়হাকের নামানুসারে এই বংশের নামকরণ করা হয় সেলজুক বংশ।
২. সেলজুকদের নামকরণ : সেলজুকদের উত্থান ইসলামের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। প্রত্যেক বংশের নামের পাশ্চাত্যে পূর্বপুরুষদের কারও বিখ্যাত নাম সংযুক্ত থাকে।
তেমনি পূর্ব পুরুষ সেলজুক বিন বাকায়েকের নামানুসারে উচ্চ বংশের নামকরণ করা হয়েছে সেলজুক বংশ। মূলত সেলজুকদের আদি বাসস্থান ছিল মধ্যে এশিয়ায়।
৩. সেলজুকদের অবস্থান : আব্বাসীয়দের শাসনামলে উদ্ভব সেলজুকদের আদি বাসস্থান ছিল মধ্যে এশিয়ায়। সেলজুকগণ মূলত কিরগিজ অঞ্চলে ঘুজ বংশোদ্ভূত তুর্কী উপজাতি । স্বীয় মেধা, যোগ্যতা, তীক্ষ্ণবুদ্ধির মাধ্যমে তারা এশিয়ায় তাদের সাম্রাজ্য সুসংহত করেছিল।
৪. সেলজুক সালতানাত প্রতিষ্ঠা : সেলজুক বংশের প্রতিষ্ঠাতা তুলি বেগ একটি রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর তৎকালীন আব্বাসীয় খলিফা কায়েস বিল্লাহর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। খলিফা বুয়াইয়া শাসকদের অত্যাচারে।
অতিষ্ঠ হয়ে উঠেন এবং ১০৫৫ সালের ৮ ডিসেম্বর তুঘ্রিলকে বাগদাদে আহ্বান জানান । খলিফার আহ্বানে সাড়া দিয়ে তুঘ্রিল বাগদাদ আসলে বুয়াইয়া শাসক মালিক আর রহিম ভয়ে পালিয়ে যান। এ সময় আল বাসাসীরীর বিদ্রোহও তুলি দমন করেন।
তুগ্রিলের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে খলিফা তাকে প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের সুলতান উপাধি দিয়ে আব্বাসীয় সাম্রাজ্যের শাসনভার তার হাতে ন্যস্ত করেন। এভাবে আব্বাসীয় খিলাফতে সেলজুক সালতানাত প্রতিষ্ঠা লাভ করে ।
৫. সেলজুদের কার্যাবলি : সেলজুকদের অবদান আব্বাসীয় আমলে স্মরণীয়। কেননা মধ্যে এশিয়ায় তারা এসে ইসলাম ধর্ম প্রচার করেন এবং সুন্নি মতবাদ প্রচারের ব্যবস্থা করেন।
বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কাজে তাদের আগ্রহ ছিল অনেক বেশি। সওদাগর ও মুসাফিরদের নিরাপত্তার জন্য বাণিজ্য ও হজ যাত্রায় পথের পার্শ্বে বিশ্রামাগার ও প্রহরীগৃহ নির্মাণ করা হয়।
৬. অবদান : সেলজুক সুলতানের শিক্ষা, সংস্কৃতি, জ্ঞানবিজ্ঞানে অবদান ছিল বলাবাহুল্য। রাজ্যের সংহতি বিধান সাহিত্য ও ললিতকলার পৃষ্ঠপোষকতায় এক চরম পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেন। স্থাপত্যশিল্পে সেলজুকরা ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে মালেক শাহের রাজত্বে খুব দ্রুত প্রসার লাভ করে।
৭. সেলজুকদের রাজ্য প্রতিষ্ঠা : সেলজুকরা এগারো শতকের শুরুতে তাদের আদি নেতা সেলজুক বিন বায়হাকের পুত্র শিশু আরসালানের নেতৃত্বে পূর্ব পারস্যে বসতি স্থাপন করে। গজনীর সুলতান মাহমুদ তাদেরকে সম্ভাব্য শত্রু মনে করে আজারবাইজানে নির্বাসিত করেন।
কিন্তু সুলতান মাহমুদের মৃত্যুর পর তার পুত্র মাসুদকে ১০৩৭ সালে হিস্টের যুদ্ধে পরাজিত করে সেলজুকরা খোরাসানে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন। এ সময় তারা সেলজুকের পৌত্র তুগ্রিল বেগকে দলপতি নির্বাচিত করে।
এই তুলি বেগ সেলজুক বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি ১০৪০ সালে গজনীর সুলতান মাসুদকে পরাজিত করে নিশাপুর, মার্ভ, তাবারিস্থান, হামদান, রাই, ইস্পাহান প্রভৃতি স্থান অধিকার করেন ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আব্বাসীয় শাসনামলে সেলজুকদের উত্থান তাদের নিকট আশীর্বাদ স্বরূপ। এর মূল কারণ হলো আব্বাসীয়দের আসন্ন বিপদের হাত থেকে সেলজুকরাই তাদের মুক্ত করেছিল এবং পরবর্তীকালে এ বংশটি প্রতিষ্ঠা করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সন্তুষ্ট ছিল।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সেলজুকদের পরিচয় তুলে ধর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সেলজুকদের পরিচয় তুলে ধর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।