সাফারীদের সাথে কেন্দ্রীয় খলিফার সম্পর্ক আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সাফারীদের সাথে কেন্দ্রীয় খলিফার সম্পর্ক আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সাফারীদের সাথে কেন্দ্রীয় খলিফার সম্পর্ক আলোচনা কর ।
সাফারীদের সাথে কেন্দ্রীয় খলিফার সম্পর্ক আলোচনা কর |
সাফারীদের সাথে কেন্দ্রীয় খলিফার সম্পর্ক আলোচনা কর
উত্তর : ভূমিকা : আব্বাসীয় খলিফাদের শাসন আমলে ? ও পশ্চিম অঞ্চলে তাদের অযোগ্যতার সুযোগ গ্রহণ করে যে সকল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজবংশ গড়ে ওঠে তাদের মধ্যে সাফারী রাজবংশ ছিল অন্যতম। আব্বাসীয় খেলাফতে যেসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজবংশেই গড়ে ওঠেছে তারা সবাই ছিল খলিফাদের অনুগত।
কিন্তু সাফারীরা খলিফাদের প্রতি অনুগত থাকলেও তারা সঠিকভাবে তাদের আদেশ নিষেধ পালন করতেন না। যার জন্য তাদের সাথে আব্বাসীয় খলিফাদের মধ্যে মনমালিন্য দেখা যায়।
→ সাফারীদের সাথে কেন্দ্রীয় খলিফাদের সম্পর্ক : কেন্দ্রীয় খলিফাদের সাথে সাফফারীদের যে সম্পর্ক লক্ষ করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হলো :
১. ইয়াকুব ইবনে লায়েস ও খলিফার মধ্যে সম্পর্ক : ইয়াকুব ইবনে লায়েস সাফফারী রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করে সাথে সাথে তিনি রাজধানী পরিবর্তন করেন। তাই তিনি খলিফার চোখে ছিলেন অবৈধ অনুপ্রবেশকারী। কেননা তিনি খলিফার আদেশ অমান্য করে তাদের কাছ থেকে খোরাসান, কিরমান, ফারস ও খুজিস্থানসহ বিভিন্ন প্রদেশ জয় করেন।
যার জন্য আব্বাসীয় খলিফাগণ রাজস্ব হতে বঞ্চিত হন। অপরদিকে, ইয়াকুব ছিলেন স্বাধীনতা ও উচ্চাভিলাষী। তিনি খারেজী দ্বারা একটি সামরিক বাহিনী গঠন করেন যা ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। তারা আব্বাসীয় খলিফা আল মুতামির রাজনৈতিক কর্তৃত্বের অবমাননা করে।
শেষ পর্যন্ত ৯৭৬ খ্রি. আব্বাসীয় খলিফা সাথে টাইগ্রিস নদীর তীর দারুল আকুল নামক স্থানে তাদের মধ্যে যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে ইয়াকুব পরাজিত হয়। তাই তার সাথে আব্বাসীয় খলিফার ভালো সম্পর্ক ছিল না ।
২. আমরের সাথে খলিফার সম্পর্ক : আমর বিন লায়েস ক্ষমতা গ্রহণ করে তিনি তার ভাই ইয়াকুব ইবনে আল লায়েস এর মত করেননি। তিনি বার বার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েও সর্বদাই কেন্দ্রীয় শাসকের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখতেন। খোরাসানের কর্তৃত্ব নিয়ে আব্বাসীয় খলিফার সাথে তার লড়াই হয়।
কিন্তু আমর ছিলেন বুদ্ধিমান ব্যক্তি তাই তিনি আপস অবলম্বন করেন। তিনি কেন্দ্রীয় খলিফার সাথে সুসম্পর্ক রক্ষা করার জন্য প্রতি বছর প্রচুর ধন-সম্পদ ও উপঢৌকন প্রেরণ করেছিলেন এবং এর ফলে আব্বাসীয় খলিফার সাথে তার সুসম্পর্ক রক্ষা হয়।
৩. পরবর্তী সাফফারীদের সাথে খলিফার সম্পর্ক : আমরের মৃত্যুর পর প্রপৌত্র তাহির যারং-এ আমরের উত্তরাধিকারীরূপে শাসনভার গ্রহণ করেন। কিন্তু সিস্তানের একটি গোষ্ঠী আলী ইবনে লায়েসের পুত্রদের সিংহাসনে বসার দাবি করেন।
এর ফলে ৯০৯ খ্রি. তাদের মধ্যে যুদ্ধ হয় আল লাইস ইবনে আলী মুহাম্মদকে পরাজিত করে ক্ষমতা দখল করেন। এ সময় আব্বাসীয় খলিফাদের সাথে এদের ভালো সম্পর্ক ছিল না। অপরদিকে, ৯১০ খ্রি. সেবুকত্ররি তাকে পরাজিত করে সিজিস্তান অধিকার করেন এবং আল লায়েস-এর ভাই মুহাম্মদকে যারং এর আমিররূপে সাদরে গ্রহণ করে ।
আব্বাসীয় খলিফাদের সাথে ভালো সম্পর্ক না থাকায় এই সময় খলিফা আল মুকতাদির সামানী বংশীয় আহমদ ইবনে ইসমাঈলকে সিস্তানের গভর্নর নিযুক্ত করেন। যার ফলে সাফারী বংশের প্রথম শাখার অবসান হয়।
৪. খালাফি শাসকদের সাথে সম্পর্ক : যারা ৯২০-১০০৩ খ্রি. পর্যন্ত সিজিস্তানের শাসন করেন তারা হলেন সাফফারী রাজবংশের দ্বিতীয় শাখা। খালাফি বংশের শাসকদের ক্ষমতা গ্রহণের দ্বন্দ্বের জন্য কেন্দ্রীয় খলিফাদের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করতে পারেনি যার জন্য তারা কোনো উল্লেখযোগ্য সম্মানে ভূষিত হতে পারেননি।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আব্বাসীয় খিলাফতের এই রাজবংশের সাথে কেন্দ্রীয় খলিফাদের কোনো সম্পর্ক ছিল তা যার কারণে তারা ঠিকমতো রাজস্ব প্রদান করতো না। সেই সাথে তারা নিজ নামে মুদ্রা প্রদান, খুৎবায় নাম ঘোষণা সহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন যার জন্য আব্বাসীয় খলিফা তাদের প্রতি মনোক্ষুণ্ণ ছিলেন।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সাফারীদের সাথে কেন্দ্রীয় খলিফার সম্পর্ক আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সাফারীদের সাথে কেন্দ্রীয় খলিফার সম্পর্ক আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।