সাফারীদের পতনের কারণগুলো বর্ণনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সাফারীদের পতনের কারণগুলো বর্ণনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সাফারীদের পতনের কারণসমূহ বিস্তারিত আলোচনা কর।
সাফারীদের পতনের কারণগুলো বর্ণনা কর |
সাফারীদের পতনের কারণগুলো বর্ণনা কর
- অথবা, সাফারীদের পতনের কারণসমূহ বিস্তারিত আলোচনা কর।
- অথবা, সাফারীদের পতনের কারণগুলো ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ভূমিকা : সাফারী বংশের প্রতিষ্ঠা ছিলেন ইয়াকুব | ইবনে লায়েস। তিনি স্বীয় যোগ্যতা বলে সাফ্ফারী বংশের প্রতিষ্ঠাতা করেন। আব্বাসীয় আমলে তাদের উত্তান ঘটলেও আব্বাসীয় শাসকদের সাথে তারা ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেনি।
এছাড়া তারা, নাচ, গান ও নর্তকী নিয়ে ফুর্তিতে লিপ্ত থাকতো। যে কারণে সামানী বংশের প্রতিষ্টাতা আমর ইবনে আহমেদের আক্রমণে তাদের চূড়ান্ত পতন ঘটে।
→ সাফ্ফারীদের পতনের কারণ : বিভিন্ন কারণে সাফারী রাজবংশের পতন ঘটে। নিম্নে সাফ্ফারীদের পতনের কারণ আলোচনা করা হলো :.
১. শাসকদের অযোগ্যতা : সাফ্ফারী বংশের পতন প্রধান কারণ | হলো শাসকদের অযোগ্যতা। এ বংশের প্রতিষ্ঠাতা ইয়াকুব ইবনে লায়েস ও তাহির ইবনে মুহাম্মদ ছাড়া অধিকাংশ শাসকগণ ছিলেন দুর্বল, অযোগ্য ও অদক্ষ। দুর্বল শাসকদের কারণে বেশি দিন সাম্রাজ্য ঠিকে রাখা সম্ভব হয় নি। যার ফলে সাফ্ফারী বংশের পতন ঘটে।
২. বিলাসিতা : সাফারী বংশের পতনের আরেকটি কারণ হলো শাসকদের বিলাসিতা। অধিকাংশ সাফারী শাসক বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন। যার ফলে সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে। এ কারণে সাফারী বংশ পতনের দিকে ক্রমান্বয়ে দিকে ধাপিত হয় ।
৩. খলিফাদের অসন্তোষ্ট : সাফ্ফারী বংশের পতনের মূল | কারণ হলো খলিফাদের অসন্তোষ্টি। সাফ্ফারীয় পেশায় তাম্রকার ছিলেন। যে কারণে তাদের মধ্যে উগ্রতা বিরাজমান ছিল। যার ফলে বাগদাদের খলিফার সাথে তাদের ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে নি। খলিফাদের অসন্তোষ্টি কারণেই সাফ্ফারীয়রা ক্ষমতায় বেশি দিন ঠিকে থাকতে পারেনি।
৪. আমরের অহংকার : আমরের অতিরিক্ত অহংকার সাফারী বংশের পতনকে ত্বরান্বিত করেছিল। খলিফা আমরকে খোরাসান ও রায়সহ আমরের অধীনস্থ সমস্ত রাজ্যের শাসন ক্ষমতা ন্যস্ত করলেও তিনি খোরাসানের বৈধ গভর্নর হওয়ার সুবাদে ট্রান্স অক্সিয়ানায় প্রতিষ্ঠিত স্থানীয় সামানী বংশীয়দের উপর সার্বভৌমত্ব দাবি করেন।
এ দাবির প্রতি খলিফা আল মুতামিদ সমর্থন দিলেন। এ দাবি জাহির করার মানসে আমর স্বসৈন্যসহ তুখরিস্তানে প্রবেশ করেন। কিন্তু ইসমাঈল ইবনে আহমদ কর্তৃক পরাজিত ও বন্দি হয়ে বাগদাদে প্রেরিত হন। খলিফা আল মুতামিদের মৃত্যুর পর পরই আমরও নিহত হয়। আমরের মৃত্যুর পর তাদের বিশাল সামরিক সাম্রাজ্যে কিছুটা সংকুচিত হয়।
৫. বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজবংশের উত্থান : সাফারী রাজবংশের পতনের আরেকটি প্রধান কারণ হলো বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজবংশের উত্থান। এ রাজবংশের সময়ে সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজবংশের উদ্ভব ঘটে যা সাফারী রাজবংশের পতনকে ত্বারান্বিত করে।
এ সময় পূর্ব আফগানিস্তানে গজনবী বংশ প্রতিষ্ঠিত হয়। তাদের প্রতিষ্ঠাতা পুরুষ সবুক্তগিন ৯৮৮ সালে বসত অধিকার করে নেন। দশম শতকে সামানী শক্তির বিরুদ্ধে তিনি খোরাসানে স্বীয় কর্তৃত্ব জাহির করতে লাগলেন।
খালাফ ট্রান্সঅক্সিয়ানায় কারখানিদেরকে সবুক্তগিন ও তদীয় পুত্র মাহমুদের বিরুদ্ধে রাগান্বিত করার চেষ্টা করে। কিন্তু মাহমুদ গায়নার সিংহাসনের সুপ্রতিষ্ঠিত হলে সিস্তানের অভ্যন্তরীণ গোলযোগ ও বিদ্রোহে হস্তক্ষেপ করতে সক্ষম হন।
শেষ পর্যন্ত ১০০৩ সালে আবু আহমদ খালাফ সিংহাসনচ্যুত হন এবং কয়েক বছর পর গারদিজে বন্দি অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। খালাফের পতনের পর সাফ্ফারী বংশের চূড়ান্ত অবসান ঘটে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আব্বসীয়দের সাথে সাফ্ফারীগণের ভালো সম্পর্ক না থাকার কারণে সাফ্ফারী বংশের পতন ঘটে। ফলে সাফারীদের প্রথম শাখা লায়সি (৮৬৭-৯০৮ খ্রি.) এবং দ্বিতীয় শাখা খালফি (৯২৩-১০০৩ খ্রি.) শাসন করার পর সাফারী রাজবংশের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সাফারীদের পতনের কারণগুলো ব্যাখ্যা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সাফারীদের পতনের কারণগুলো ব্যাখ্যা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।