পশ্চিমাঞ্চলের ইদ্রিসীয় রাজবংশের পতন সংক্ষেপে লিখ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো পশ্চিমাঞ্চলের ইদ্রিসীয় রাজবংশের পতন সংক্ষেপে লিখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের পশ্চিমাঞ্চলের ইদ্রিসীয় রাজবংশের পতন সংক্ষেপে লিখ ।
পশ্চিমাঞ্চলের ইদ্রিসীয় রাজবংশের পতন সংক্ষেপে লিখ |
পশ্চিমাঞ্চলের ইদ্রিসীয় রাজবংশের পতন সংক্ষেপে লিখ
উত্তর : ভূমিকা : পৃথিবী সৃষ্টি শুরু হতে কোনো কিছুর সৃষ্টি বা ধ্বংস এটা প্রাকৃতিক নিয়ম। 'যার সৃষ্টি আছে তার ধ্বংস আছে' এটা ইতিহাসের এক ধারাবাহিক নিয়ম যার ধারাবাহিকতায় উত্তর আফ্রিকার ইদ্রিসীয় রাজবংশের পতন ঘটেছিল।
উত্তর আফ্রিকার প্রতিষ্ঠিত ইদ্রিসীয় রাজবংশ ছিল মুসলমানদের ইতিহাসের প্রথম শিয়া রাজবংশ। তারা প্রায় দুইশত বছর শাসনকার্য পরিচালনা করেন (৭৮৮-৯৭৪ খ্রি.)। কিন্তু এর পরবর্তীতে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, ফাতেমীয়দের ও স্পেনে উমাইয়া শাসকদের শাসক পড়ে তাদের পতন হয় শেষপর্যন্ত।
স্পেনের বিখ্যাত শাসক দ্বিতীয় হাকামের জনৈক সেনাপতির আক্রমণে এ বংশের সলিল সমাধি রচিত হয়।
→ ইদ্রিসীয় বংশের পতন নিয়ে ইদ্রিসীয় বংশের পতন সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
১. আব্বাসীয় খলিফাদের সাথে বৈরী সম্পর্ক : এই বংশের পতনের কারণ হিসেবে আব্বাসীয় খলিফারা দায়ী ছিলেন। কারণ | ইদ্রিসীয় বংশের শাসকদের সাথে আব্বাসীয় বংশের শাসকদের | বিরূপ সম্পর্ক ছিল। এই বংশ প্রতিষ্ঠার পূর্ব থেকেই তারা মদিনায় বিদ্রোহ ঘোষণা করে।
এরপর তারা মরক্কোতে পলায়ন করে। খলিফা হারুন সেখানে একজন গোয়েন্দা প্রেরণ করে। সে ইদ্রিসকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করে। শুরু থেকেই খলিফার সাথে এ মনোমালিন্যতা ইদ্রিসীয় রাজবংশকে পতনের দিকে ধাবিত করে।
২. প্রাকৃতিক কারণ : ইদ্রিসীয় বংশের ক্ষেত্রে ইবনে খালদুনের মতবাদ যথা যোগ্যভাবে প্রযোজ্য হয়েছে। তিনি বলেছিলেন, “কোনো রাজবংশের স্থিতিকাল বড়জোর একশত বছর এরপর পরই তাদের পতনের যাত্রা শুরু হয়।"
৩. অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব : ইদ্রিসীয় রাজবংশের শাসকদের নিজের মধ্যে দ্বন্দ্বের জন্য এদের পতন হয়। ইদ্রিসীয় রাজবংশের দ্বিতীয় ইদ্রিসের ৯ পুত্রের মধ্যে ক্ষমতা গ্রহণের জন্য পরস্পরের মধ্যে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়। যা এই সাম্রাজ্যকে অভ্যন্তরীণভাবে দুর্বল করে পতনের দিকে নিয়ে যায় ।
৪. অত্যাচারী শাসনব্যবস্থা : ইদ্রিসীয় রাজবংশ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর কয়েক জন শাসক রাজ্যকে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে দেয়। এছাড়া বাকি সকল শাসক ছিলেন অত্যাচারী। এদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন দ্বিতীয় ইয়াহিয়া। তিনি অত্যাচারের ফলে জনসাধারণের দ্বারা বিতাড়িত হয়ে স্পেনে পলায়ন করেন এবং সেখানে মৃত্যুবরণ করেন।
৫. ফাতেমীয়দের আক্রমণ : ফাতেমীয়দের সাম্রাজ্য বিস্তার নীতির কারণে তারা সাম্রাজ্য বিস্তার করতে করতে উত্তর আফ্রিকার ইদ্রিসীয় রাজ্যের পাশাপাশি চলে আসে, এতে করে এই রাজবংশের পতনকে ত্বরান্বিত করে। কারণ পরবর্তী শাসকগণ ছিলেন দুর্বল।
৬. স্পেনের উমাইয়া শাসকদের প্রভাব : ইদ্রিসীয় রাজবংশের পতনের অন্যতম কারণ ছিল স্পেনের উমাইয়া শাসকদের প্রভাব । কারণ ইদ্রিসীয় রাজবংশ তখন স্পেন ও মিশরের মধ্যবর্তী অঞ্চলে পড়ে।
যার ফলে তাদের চাপের মুখে এই রাজবংশের পতন হয় এবং শেষ পর্যন্ত স্পেনের বিখ্যাত শাসক দ্বিতীয় হাকামের জনৈক সেনাপতির আক্রমণে ইদ্রিসীয় বংশের পতন সংগঠিত হয়।
৭. শাসকদের দুর্বলতা : ইদ্রিসীয় বংশের শাসকদের পতনের আরেকটি কারণ ছিল শাসকদের দুর্বলতা। ইদ্রিসীয় রাজবংশের কয়েকজন শাসক ব্যতীত বাকি শাসকগণ প্রশাসনিক ও প্রাদেশিক ক্ষমতায় ছিল দুর্বল । যার জন্য তাদের পতন হয়েছে বলে মনে করা হয় ।
৮. অন্যান্য কারণ : উপরে উল্লিখিত কারণ ছাড়া এই রাজবংশের পতনের বিভিন্ন কারণ লক্ষ করা যায়। রাজনৈতিকভাবে দুর্বল, শাসকদের অযোগ্যতা, বহিঃশত্রুদের আক্রমণ ইত্যাদি ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ইদ্রিস ইবনে আব্দুল্লাহ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এই বংশ পতনের প্রধান কারণ ছিল ফাতেমীয় রাজবংশ ও স্পেনের উমাইয়া রাজবংশ যাদের আক্রমণে এই প্রথম শিয়া রাজবংশের পতন সংগঠিত হয়।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ পশ্চিমাঞ্চলের ইদ্রিসীয় রাজবংশের পতন সংক্ষেপে লিখ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম পশ্চিমাঞ্চলের ইদ্রিসীয় রাজবংশের পতন সংক্ষেপে লিখ। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।