মার্কসের অর্থনৈতিক নারীবাদ কী
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মার্কসের অর্থনৈতিক নারীবাদ কী জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মার্কসের অর্থনৈতিক নারীবাদ কী।
মার্কসের অর্থনৈতিক নারীবাদ কী |
মার্কসের অর্থনৈতিক নারীবাদ কী
উত্তর : ভূমিকা : বিংশ শতাব্দীর শেষ দিক থেকে Feminism বা নারীবাদ প্রত্যয় বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে । ফলে বিভিন্ন সমাজ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী নিজস্ব বিশ্বাস ও চিন্তার আলোকে এই নারীবাদ প্রত্যয়টি ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেন।
তন্মধ্যে মার্কসীয় সমাজবিজ্ঞানী কার্ল মার্কস নারীবাদের আলোচনায় অর্থনৈতিক নারীবাদ প্রত্যয়টি সংযোজন করেছেন। নিম্নে প্রশ্নালোকে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
১. উদ্বৃত্ত মূল্য : কার্ল মার্কস নারী নির্যাতনের একটা বড় কারণ হিসেবে উদ্বৃত্ত মূল্যের ধারণাকে দায়ী করেছেন। মালিক প্রায় পণ্যের পেছনে শ্রমিককে দেয়া অর্থের উপর যা বেশি নেন তাই হলো তার মুনাফা। তার এই উদ্বৃত্ত মুনাফা সমাজে ধনবৈষম্যের সূচন করে । যা পরোক্ষভাবে নারী নির্যাতনের মাত্রা বাড়ায় ।
২. শ্রেণি সচেতনতা : মার্কস তার অর্থনৈতিক নারীবাদ আলোচনা করতে গিয়ে নারীদের মধ্যে শ্রেণি সচেতনতা বৃদ্ধির উপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন সারা বিশ্বে নির্যাতিত নিপীড়িত নারী সমাজ আন্দোলনের এক বৃহৎ প্লাটফরম তৈরি করতে পারেন তবেই নারী নির্যাতনের মাত্রা হ্রাস পাবে।
৩. শ্রমিকের স্বাধীনতা : পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থায় মিল কলকারখানায় মালিকগণ কৌশলে শ্রমিকদের মধ্যে শ্রেণি বিন্যাস করেন। কেউ পুরষ শ্রমিক আর কেউ নারী শ্রমিক।
এই শ্রেণি বিভাগ তৈরি করে মালিক নারী শ্রমিকদের অধিক খাটিয়েও কম মজুরি গ্রহণে বাধ্য করে । যদিও মজুরি ও কাজের ধরন নির্ধারণে শ্রমিকের স্বাধীনতা থাকা উচিত ।
৪. নারীমুক্তি : কার্ল মার্কস তার অর্থনৈতিক নারীবাদের আলোচনায় নারীমুক্তির পথ নির্দেশ করেছেন । তিনি নারী মুক্তির প্রধান ও অব্যর্থ উপায় হিসেবে নারীদের মাঝে আত্মসচেতনতা বৃদ্ধির উপর জোর দিয়েছেন।
নারীরা যদি নিজেদের অধিকার ও মর্যাদা সম্পর্কে সচেতন ও আত্মপ্রত্যয়ী হন তবে নারী মুক্তি ঘটবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন ।
৫. রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ : নারীবাদের অর্থনৈতিক মতবাদ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে কার্ল মার্কস রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব বা নিয়ন্ত্রণারোপের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেন কল-কারখানায় কাজের ধরন অনুযায়ী শ্রমিকের মজুরি কত হবে তা যদি রাষ্ট্র নির্ধারণ করে দেয় তবে মজুরির ক্ষেত্রে নারী শ্রমিকরা আর বঞ্চিত হবে না।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বিশ্বব্যাপী নারীবাদ প্রত্যয়টি ঝড় তোলার পর যে কয়েকটি উপনারীবাদী প্রত্যয় জনপ্রিয়তা লাভ করেছে তন্মধ্যে কার্ল মার্কসের অর্থনৈতিক নারীবাদ একটি। পুঁজিবাদের হাতিয়ার উদ্বৃত্ত মূল্য প্রতিরোধ ও নারীর আত্মসচেতনতা বৃদ্ধিই হলো অর্থনৈতিক নারীবাদ সফল করার উপায় ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ মার্কসের অর্থনৈতিক নারীবাদ কী
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মার্কসের অর্থনৈতিক নারীবাদ কী। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।