কৃষ্ণাঙ্গ নারীবাদ কি
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো কৃষ্ণাঙ্গ নারীবাদ কি জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের কৃষ্ণ নারীবাদ কি।
কৃষ্ণাঙ্গ নারীবাদ কি |
কৃষ্ণাঙ্গ নারীবাদ কি
- অথবা, কৃষ্ণ নারীবাদ কাকে বলে?
- অথবা, কৃষ্ণাঙ্গ নারীবাদ বলতে কি বুঝ?
- অথবা, কৃষ্ণ নারীবাদ সম্পর্কে তুমি কি জান?
উত্তর : ভূমিকা : নারীর অধিকার নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে যখন আন্দোলনের জোয়ার বইছিল ঠিক তখন কৃষ্ণাঙ্গ নারীরা তাদের অধিকারের দাবি নিয়ে সামনে আসে। তারা আওয়াজ তুলতে থাকে সকল নারী অভিন্ন হলে কৃষ্ণাঙ্গ নারীরা কেন তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। মূলত শ্বেতাঙ্গদের অবহেলা ও হীনমন্যতাই কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে প্রণোদনা দেয় ।
→ কৃষ্ণ নারীবাদ : তাত্ত্বিকভাবে যে সকল নারীবাদের উদ্ভব হয়েছে কৃষ্ণ নারীবাদ তাদের মধ্যে অন্যতম। কৃষ্ণাঙ্গ নারীবাদীরা মূলত বর্ণবাদ, শ্রেণিবাদ ও যৌনবাদের বিরুদ্ধে স্পষ্টত সোচ্চার। শ্বেতকায় নারীবাদের প্রভাবিত বিভিন্ন পদ্ধতি ও চর্চার মাধ্যমে বিশেষ করে শ্বেতাঙ্গ নারীবাদী মতাদর্শের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতেই কৃষ্ণ নারীবাদী ধারার সৃষ্টি করেছেন।
এলিস ওয়াকারের ‘Womenism' বা ‘রমণীবাদ' কৃষ্ণাঙ্গ নারীবাদের তাত্ত্বিকভিত্তি রচনা করে দিয়েছে। এছাড়াও টনি মরিসনের ‘সুলা’ উপন্যাসও কৃষ্ণ নারীবাদের প্রধান উপজীব্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কৃষ্ণ নারীবাদ প্যান-আফ্রিকীয় কৃষ্ণাঙ্গদের পরিচয় তুলে ধরার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে চলেছে।
বিট্রেনে কৃষ্ণাঙ্গদের রাজনৈতিক পরিচয় তুলে ধরতে গিয়েই এই পরিভাষাটি ব্যবহার করা হয়। অশ্বেতকার নারীবাদের বিরুদ্ধে এই নারীবাদের তাত্ত্বিক অবস্থান, নারীবাদীদের নিকট একে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে।
তবে আমেরিকান নারীবাদীরা উক্ত তাত্ত্বিক অবস্থান থেকে এশিয় বা অপশ্চিম অন্যান্য দেশের নারীরা বাদ পড়েছে বলে এই শব্দটির ব্যবহার পরিহার করে ‘বর্ণরঞ্জিত নারী' বা (Women of Colour) পরিভাষাটির ব্যবহার করেন ।
এই শব্দটি পরিভাষাটি শুধু কৃষ্ণাঙ্গ নয় বরং অশ্বেতকার সকল নারীকে অন্তর্ভুক্ত করে বলে তারা মনে করেন ।কৃষ্ণাঙ্গ নারীবাদীরা বর্ণবাদ, শ্রেণিবাদ ও যৌনবাদের অবসানের মাধ্যমে সকল বৈষম্যের অবসানের মাধ্যমে সকল শ্রেণির মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চায়।
তবে ভ্যালোরি স্মিথ মনে করেন এই নারীবাদের বিভিন্ন মাত্রা রয়েছে। কৃষ্ণ নারীবাদ আধিপত্যবাদী সংস্কৃতির বিরুদ্ধে মতাদর্শিকভাবে অবস্থান গ্রহণ করে। একইসাথে বর্ণবাদ ও জেন্ডার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের নানান প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি এ নারীবাদেই পাওয়া যায়।
কিম্বালির ক্রেনশো বলেন, “এসব ছাড়াও কৃষ্ণ নারীবাদ নাগরিক ও শিক্ষাগত অধিকারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন।” কৃষ্ণ নারীবাদের রাজনৈতিক তৎপর্যও নেহায়েত কম নয় । ১৯৭০ সালের দিকে কৃষ্ণ নারীবাদের বিভিন্ন সংগঠনের জন্ম হয়। এসব সংগঠনকে বিভিন্ন প্রকার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয় যা তিন ভাগে বিভক্ত :
(i) অন্যান্য নারীবাদের নিকট এটা প্রমাণ করতে হয় যে, নারীবাদ কেবল শ্বেতাঙ্গ নারীদের বিষয় নয় ।
(ii) স্বেতাঙ্গ নারীবাদের বৈচিত্র্যমুখী ক্ষমতায় কৃষ্ণ নারীবাদের অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা ।
(iii) কৃষ্ণ জাতীয়তাবাদীদের নারী বিদ্বেষী প্রবণতার অবসান করা/রোধ করা।
গত শতকের আশির দশকে কৃষ্ণ নারীবাদ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিল। ফলে সমালোচকরা কৃষ্ণ নারীবাদের পরিচয়সূচক তাত্ত্বিকতা নিয়ে আপত্তি তোলেন। অতি সম্প্রতি কৃষ্ণ নারীবাদ ও উত্তর-আধুনিকতার সম্পর্ক নিয়ে অনেকেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন।
অবশ্য অস্বীকার করার কিছু নেই যে উত্তর-আধুনিকতার সাথে কৃষ্ণ নারীবাদ সম্পর্কহীন। বরং কৃষ্ণ নারীবাদী তত্ত্বকে নতুন করে সমৃদ্ধ করেছে উত্তর-আধুনিক নারীবাদের তত্ত্ব। বিশেষত কৃষ্ণ নারীবাদ নারীর সামাজিক অবস্থান, আত্মপরিচয় এবং রাজনীতি সম্পর্কে যে গুরুত্বারোপ করে তার উৎসই উত্তর-আধুনিক নারীবাদ।
প্রকৃতপক্ষে যৌনতা, জেন্ডার ও বর্ণবাদের ব্যাখ্যা দিয়েই কৃষ্ণ নারীবাদের আলোচনার সূত্রপাত হয়। কৃষ্ণাঙ্গ নারী ও পুরুষের জেন্ডার সম্পর্ক নির্ণয়ে কৃষ্ণাঙ্গ নারীবাদ অত্যন্ত সহায়ক। কৃষ্ণ নারীবাদের বৈশিষ্ট্য : নিম্ন কৃষ্ণ নারীবাদের বৈশিষ্ট্যসমূহ তুলে ধরা হলো:
(i) কৃষ্ণ নারীবাদীরা জেন্ডার বর্ণবাদ, শ্রেণিবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার।
(ii) শ্বেতাঙ্গ নারীবাদী মতাদর্শের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থানকে সুস্পষ্ট করা।
(iii) কৃষ্ণ নারীবাদ আধিপত্যবাদী সংস্কৃতির বিরুদ্ধে মতাদর্শিকভাবে কৃষ্ণ নারীবাদ অবস্থান গ্রহণ করে ।
(iv) কৃষ্ণ নারীবাদ নাগরিক ও শিক্ষাগত অধিকারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, অন্যান্য নারীবাদের ন্যায় কৃষ্ণ নারীবাদও নারীর মুক্তির বার্তা নিয়ে আবির্ভূত হয়। এই নারীবাদ জেন্ডার, বর্ণবাদ, শ্রেণিবাদ ও যৌনবাদের বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান তুলে ধরে।
তবে বর্ণবাদ ব্যতীত অন্য সকল বিষয় অন্যান্য নারীবাদের আলোচ্য বিষয় হওয়ায় এবং কৃষ্ণ-নারীবাদের সাথে উত্তর-আধুনিকতার সম্পর্ক থাকায় কৃষ্ণ নারীবাদের পরিচয় সূচক তাত্ত্বিকতাও এর গুরুত্ব কিছুটা বিতর্কিত ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ কৃষ্ণাঙ্গ নারীবাদ বলতে কি বুঝ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম কৃষ্ণ নারীবাদ সম্পর্কে তুমি কি জান। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।