ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে সালাউদ্দিন আইয়ুবীর সংগ্রামের বর্ণনা দাও
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে সালাউদ্দিন আইয়ুবীর সংগ্রামের বর্ণনা দাও জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে সালাউদ্দিন আইয়ুবীর সংগ্রামের বর্ণনা দাও ।
ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে সালাউদ্দিন আইয়ুবীর সংগ্রামের বর্ণনা দাও |
ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে সালাউদ্দিন আইয়ুবীর সংগ্রামের বর্ণনা দাও
উত্তর : ভূমিকা : সালাহউদ্দিন আইয়ুবী ইসলামের ইতিহাসে : একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি দ্বাদশ শতাব্দীতে সংঘটিত ক্রুসেডের নেতৃত্ব দিয়ে নিজের শৌর্যবীর্য ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন।
১১৭৬ খ্রিস্টাব্দে তুর্কি সুলতান নুরুদ্দিন জঙ্গি কর্তৃক মিশরীর ফাতেমীয় খলিফা আল আজিজের সাহায্যে প্রেরিত আসাউদ্দিন শিরকুর নেতৃত্বাধীন বাহিনীর সাথে মিশরীর সংগ্রামে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে তার সরাসরি রাজনৈতিক জীবনে পদার্পণ শুরু হয় ।
→ ক্রুসেডারদের আক্রমণ থেকে মুসলিম সাম্রাজ্য রক্ষায় সালাহউদ্দিনের কার্যাবলি : নিয়ে ক্রুসেডারদের আক্রমণ থেকে মুসলিম সাম্রাজ্য রক্ষায় গাজী সালাহউদ্দিনের কার্যাবলি আলোচনা করা হলো :
১. ক্রুসেডে অংশগ্রহণ : ১৯৭১ সালে সর্বপ্রথম সালাহউদ্দিন তৃতীয় ক্রুসেডে অংশগ্রহণ করে মুসলমানদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ অবতীর্ণ হন। তিনি ১১৮১ খ্রিস্টাব্দ হতে ১১৯৩ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১২ বছর যাবত ক্রুসেডের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করে মুসলিম হৃতরাজ্যগুলো পুনর্দখল করেন এবং মুসলমানদের গৌরব ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন।
২. হিট্রিনের যুদ্ধ : সুলতান সালাহউদ্দিন ক্রুসেডারদের মূলে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন ক্রুসেডারদের ধর্মযুদ্ধের প্রতি যে স্পৃহা আছে সেটা ধ্বংস করে দিতে পারলে তারা অচিরেই পরাজয় বরণ করতে বাধ্য হবে।
এ লক্ষে সুলতান সালাহউদ্দিন ১১৮৭ খ্রিস্টাব্দে ২০ হাজার ফরাসি সৈন্য দ্বারা গঠিত শত্রবাহিনীর মোকাবিলা করে শত্রুপক্ষকে শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেন।
৩. তৃতীয় ক্রুসেড মোকাবিলা : জেরুজালেমের পতনের খবরে ইউরোপের খ্রিস্টান জগত আতংকিত হয়ে উঠে। এর ফলে তৃতীয় ক্রুসেডকে অনিবার্য করে গেলে । জার্মানির রাজা ফ্রেডারিক বার্বারোসা, ইংল্যান্ডের রাজা প্রথম রিচার্ড এবং ফ্রান্সের রাজা ফিলিপ অগাস্টাস একত্রিত হয়ে খ্রিস্টানদের এক বিশাল বাহিনী গড়ে তোলেন এবং জেরুজালেম উদ্ধারকল্পে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে যা তৃতীয় ক্রুসেড নামে পরিচিত।
পারস্য অভিমুখে যাত্রা করে একটি নদী পার হওয়ার সময় ফ্রেডারিক পানিতে ডুবে মারা যান। ফিলিপ ও রিচার্ড ঐক্যবদ্ধভাবে অধিকার করলেও জেরুজালেম আক্রমণের পূর্বেই ফিলিপ স্বদেশে ফিরে যায়। রিচার্ড একাই জেরুজালেম অবরোধ করেন। কিন্তু দীর্ঘ দুবছর অবরোধ করে রেখেও তিনি জেরুজালেম দখল করতে ব্যর্থ হন।
অবশেষে ১১৯২ খ্রিস্টাব্দে সালাহউদ্দিনের সাথে সন্ধি করে খ্রিস্টানগণ স্বদেশে ফিরে যান। সন্ধির শতানুযায়ী সালাহউদ্দিনের ভাই মোল-মানিক-উস আদিলের সাথে রিচার্ডের বোনের বিবাহ হয় এবং বিয়ের যৌতুক হিসেবে আদিল জেরুজালেম লাভ করেন। এভাবে সালাহউদ্দিন মুসলিম সাম্রাজ্যকে ক্রুসেডের আক্রমণ থেকে রক্ষা করেন ।
৪. শান্তি চুক্তি স্থাপন : জেরুজালেমের পতনে সমগ্র খ্রিস্টান | ইউরোপ অনুশোচনা ও আতঙ্কের সৃষ্টি করে এবং এর ফলেই তৃতীয় ক্রুসেড শুরু হয়। জার্মানি সম্রাট ফরাসি রাজা এবং ইংল্যান্ডের রাজা মিলে সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে ক্রুসেড ঘোষণা করেন কিন্তু বহু চেষ্টা সাধনার পরও খ্রিস্টানদের পক্ষে জেরুজালেম দখল করা সম্ভবপর হয়নি।
অবশেষে ১১৯২ খ্রিস্টাব্দে রিচার্ড একটি শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। তবে দুই | শান্তি শর্তাবলিতে ১১৯২ খ্রিস্টাব্দে খ্রিস্টান তীর্থযাত্রীদের বিনা বাধায় জেরুজালেম গমনের ব্যবস্থাও চুক্তির অন্তর্ভুক্ত ছিল।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবী তার সমর কৌশল একক নেতৃত্ব নিরলস প্রচেষ্টা ও কূটনৈতিক কলাকৌশলের মাধ্যমে মুসলিম সাম্রাজ্যকে ক্রুসেডের আক্রমণ হতে রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
তিনি যেভাবে তৎকালীন বৃহৎ ইউরোপীয় শক্তিবর্গকে পরাজিত করতে সক্ষম হয়ে ছিলেন তেমনি তিনি মুসলিম সাম্রাজ্যকে বৃহৎ রাজ্যে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ ক্রুসেডারদের আক্রমণ থেকে মুসলিম সাম্রাজ্য রক্ষায় গাজী সালাহউদ্দিনের কার্যাবলি মূল্যায়ন কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম ক্রুসেডারদের আক্রমণ থেকে মুসলিম সাম্রাজ্য রক্ষায় গাজী সালাহউদ্দিনের কার্যাবলি মূল্যায়ন কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।