খলিফা আল মামুনের পরিচয় দাও
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো খলিফা আল মামুনের পরিচয় দাও জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের খলিফা আল মামুনের পরিচয় দাও।
খলিফা আল মামুনের পরিচয় দাও |
খলিফা আল মামুনের পরিচয় দাও
উত্তর : ভূমিকা : খলিফা আল মামুন আব্বাসীয় খিলাফতের মধ্যে একজন শাসক ছিলেন। ৮১৩ সালে আব্বাসীয় সাম্রাজ্যের এক সংকটজনক মুহূর্তে আব্বাসীয় সিংহাসনে আরোহণ করেন।
সিংহাসনে আরোহণ করে মামুন রাজ্যবিস্তারের চেয়ে জ্ঞান চর্চায় মনোযোগী হন। তাই রাষ্ট্রের শাসনভার প্রধানমন্ত্রী ফজল বিন সাহলের উপর ন্যস্ত করে খোরাসানের রাজধানী মার্ভে দর্শন বিষয়ে পড়ালেখায় আত্মনিয়োগ করেন ।
→ খলিফা আল মামুনের পরিচয় : নিম্নে খলিফা আল মামুনের পরিচয় বর্ণনা করা হলো :
১. জন্ম ও পরিচয় : খলিফা আল মামুন ৭৮৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল খলিফা হারুন অর রশীদ এবং মাতার নাম ছিল মারাজিল।
তার প্রকৃত নাম আব্দুল্লাহ কুনিয়াত এবং পিতা প্রদত্ত উপাধি আল মামুন। আবু ইসহাক মুতাসিম বিল্লাহ উপাধি ধারণ করে পরবর্তী খলিফা হিসেবে খিলাফতের সিংহাসন লাভ করেন ।
২. শিক্ষাজীবন : আল মামুন বাল্যকাল থেকে বিদ্যানুরাগী ছিলেন। তিনি ব্যাকরণ বিশারদ খলিল বসরীর নিকট ভাষাতত্ত্ব, ইমাম মালিকদের নিকট হাদিস ও সাহিত্যিকদের কাছ থেকে আরবি ভাষা শিক্ষালাভ করেন ।
৩. সিংহাসনে আরোহণ : খলিফা আল মামুন ভ্রাতা আল আমিনকে গৃহযুদ্ধে পরাজিত করে ৮১৩ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেন। তার শাসনকালকে দুটি ভাগে বিভক্ত করা হয়।
৮১৩-৮১৯ সাল পর্যন্ত প্রথম ৬ বছর শাসন করে মার্ভে থেকে রাজধানী বাগদাদ ৮১৯-৮৩৩ সাল পর্যন্ত পরবর্তী ১৪ বছর শাসন করেন।
৪. বিদ্রোহ দমন : খলিফা আল মামুন ব্যক্তি হিসেবে খুব দয়ালু এবং শান্তিপ্রিয় ছিলেন। ৮২২ খ্রি. মেসোপটেমিয়ায় নসর উকায়লী বিদ্রোহ ঘোষণা করলে মামুন কর্তৃক নিযুক্ত আব্দুল্লাহ বিন-তাহির নসর উকায়লীকে পরাজিত ও বন্দি করে খলিফার নিকট পাঠিয়ে দেন।
মেসোপটেমিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠা করে আব্দুল্লাহ বিন-তাহির মিশরের দিকে রওনা হলেন এবং সেখানকার বিদ্রোহ দমন করে সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা করলেন ।
৫. চরিত্র : খলিফা আল মামুন অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের ছিল। ন্যায়নিষ্ঠ, মহানুভব, বিদ্যোৎসাহী, ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ও উদারতার জন্য অধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি একজন ধর্মভীরু খলিফা ছিলেন। তিনি প্রতি রমজানে ৩৩ বার কুরআন খতম করতেন ।
৬. মৃত্যু : রোমান আক্রমণ প্রতিহত করার পর খলিফা মামুন টুরসের ৭০ মাইল উত্তরে তারানা নামক স্থানে একটি সুরক্ষিত দুর্গ নির্মাণের আদেশ দেন।
এশিয়া মাইনরে অবস্থানকালে তিনি বাদানদুল নদীর তীরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ৮৩৩ সালে মাত্র ৪৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
উসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, খলিফা আল মামুন সকল ধর্মের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন ছিলেন যে কারণে তিনি এতোটা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাছাড়া তিনি ছিলেন অত্যন্ত দক্ষ শাসক, বিশিষ্ট বিজেতা ও কৌশলী রাজনীতিবিদ।
তিনি রাজ্যের বিশৃঙ্খলা দমন করে সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেও মুসলিম মনীষীদের সহযোগিতায় দেশকে অর্থনৈতিক ও জ্ঞানবিজ্ঞানের দিক থেকে উন্নতি বিধান করেন।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ খলিফা আল মামুনের পরিচয় দাও
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম খলিফা আল মামুনের পরিচয় দাও। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।