হারুন অর রশিদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো হারুন অর রশিদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের হারুন অর রশিদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধর।
হারুন অর রশিদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধর |
হারুন অর রশিদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধর
উত্তর : ভূমিকা : আব্বাসীয় সাম্রাজ্যের উল্লেখযোগ্য শাসক ছিলেন হারুন অর রশীদ। রূপকথার রাজা, ইতিহাসের গৌরব, ইসলামের মুকুটমণি খলিফা হারুন অর রশীদ দীর্ঘ তেইশ বছর ছয় মাস আব্বাসীয় খিলাফতে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
তার চরিত্রে কোমলতা, ধার্মিকতা যেমন প্রশংসার পালক হিসেবে শোভিত হয়েছে তেমনি ধৈর্যহীনতা ও সন্দেহপরায়ণতা তার চরিত্রকে ঐতিহাসিকদের সমালোচনার জ্বালানি তৈরি করেছে। তবে সার্বিক বিচারে তাকে একজন যোগ্য শাসকের মর্যাদা প্রদান করা যায়।
→ হারুন-অর-রশিদের চরিত্র বিশ্লেষণ : নিম্নে খলিফা হারুন- অর-রশিদের চরিত্র বর্ণনা করা হলো :
১. কঠোরতা ও কোমলতার সংমিশ্রণ : খলিফা হরুন-অর রশিদের চরিত্রে কঠোরতা ও কোমলতার অপূর্ব সংমিশ্রণ ঘটেছিল। অন্যায়কারী ও বিদ্রোহীদের প্রতি তিনি যেমন ছিলেন কঠোর, গরিব-দুঃখীদের প্রতি তিনি ছিলেন তেমনি পুষ্পের মত কোমল। তাঁর মত ন্যায়পরায়ণ, মহানুভব, দানবীর ও বিচক্ষণ নরপতি সে যুগে ছিল না বললেও অত্যুক্তি হয় না।
২. ধর্মভীরুতা : হারুন-অর-রশীদ ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন দয়ালু, দানবীর এবং ধর্মভীরু । দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ ছাড়াও তিনি প্রত্যেক রাত্রিতে একশ রাকাত নফল নামাজ পড়তেন।
তাঁর তেইশ বছরের শাসনামলে তিনি নয়বার হজব্রত সমাপণ করেছিলেন। যে বছর তিনি হজ করতে পারতেন না সে বছর তিনি নিজ খরচে ৩০০ লোককে হজে পাঠাতেন।
৩. ধৈর্যহীনতা ও সন্দেহপরায়ণতা : খলিফা হারুনের চরিত্রে | নানাবিধ গুণাবলীর সমাবেশ সত্ত্বেও তিনি বংশানুক্রমিক ধৈর্যহীনতা এবং সন্দেহপরায়ণতা দোষ হতে মুক্ত ছিলেন না।
আলীর বংশের মুসা আল-কাজিমের প্রতি তাঁর সন্দেহপরায়ণতা এবং বার্মেকী পরিবারের প্রতি তার জঘন্য নিষ্ঠুরতা তাঁর মহানুভব চরিত্রের উপর কলঙ্ক কালিমা লেপন করেছে।
আনুগত্য স্বীকারের পর বিদ্রোহী ইয়াহিয়ার প্রতি তাঁর ব্যবহারও সমর্থনযোগ্য নয়। তবে তাঁর পক্ষে এটুকু বলা যায় যে, সন্দেহপ্রবণতা বা স্বভাবের প্রচণ্ড বহিঃপ্রকাশ এক ব্যক্তিত্বাধীন সীমাহীন ক্ষমতা তথা স্বৈরাচারের স্বাভাবিক ফল।
৪. মহানুভবতা : খলিফা হারুনের আত্মসংযমী, প্রজাহিতৈষী এবং সাহিত্য ও শিল্পানুরাগী গুণের পাশাপাশি মহানুভবতা ছিল তার চরিত্রের অন্যতম গুণ। পরাজিত শত্রুর প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শনেও তিনি কুণ্ঠিত ছিলেন না ।
৫. শ্রেষ্ঠ শাসক : খলিফা হারুন সুকুমারবৃত্তির অধিকারী ছিলেন। চরিত্রবলেও বুদ্ধির মাহাত্ম্যে সে যুগে কেউ তাকে অতিক্রম করতে পারেনি। ঐতিহাসিক গীবন তাঁকে আব্বাসীয় বংশের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিভাবান খলিফা বলে অভিহিত করেছিলেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আব্বাসীয় খলিফা হারুন- অর-রশীদ তার চারিত্রিক গুণাবলির দরুন সেই যুগের শ্রেষ্ঠ শাসকে ভূষিত হয়েছিলেন।
তার প্রশংসায় ঐতিহাসিক আমির আলী বলেছেন যে, “তিনি ধর্মীয় কর্তব্য পালনে নিষ্ঠাবান, জীবনযাপনে মিতভাষী, সাধুতা এবং দানশীলতায় অনাড়ম্বর ছিলেন; অথচ রাজকীয় আড়ম্বর ও জাঁকজমক পরিবেশে থাকতে পছন্দ করতেন।”
আর্টিকেলের শেষকথাঃ হারুন অর রশিদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম হারুন অর রশিদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।