গনোরিয়া রোগের লক্ষণ কি কি | গনোরিয়া রোগের লক্ষণ সমূহ বর্ণনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো গনোরিয়া রোগের লক্ষণ কি কি | গনোরিয়া রোগের লক্ষণ সমূহ বর্ণনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের গনোরিয়া রোগের লক্ষণ কি কি | গনোরিয়া রোগের লক্ষণ সমূহ বর্ণনা কর ।
গনোরিয়া রোগের লক্ষণ কি কি গনোরিয়া রোগের লক্ষণ সমূহ বর্ণনা কর |
গনোরিয়া রোগের লক্ষণ কি কি | গনোরিয়া রোগের লক্ষণ সমূহ বর্ণনা কর
উত্তর : ভূমিকা : গনোরিয়া যৌন সংক্রমিত Sexualhy Transmitted Disease (STD) রোগগুলোর মধ্য এটি একটি মারাত্মক ব্যাধি। বাংরাদেশে এ রোগটি প্রমেহ নামে পরিচিত। সাধারণভাবে আমাদের মাঝে গনোরিয়া সম্পর্কে নানা রকম ধারণা আছে।
যেগুলো ভুল যেমন- প্রস্রাবে সামান্য জ্বালাপোড়া হলো বা মূত্রপথ থেকে প্রস্রাবের সঙ্গে বা পরে পিচ্ছিল মিশ্রণ বা দুধের মত সাদা রস বের হলেই গনেরিয়া হয়েছে বলে এসব কথা আর কাউকে বলতে চায় না। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিলেই এ রোগ ভালো হয়ে যাবে ।
গনোরিয়া রোগের লক্ষণ : নিম্নে গনোরিয়া রোগের লক্ষণগুলো আলোচনা করা হলো :
(ক) তীব্র সংক্রমণ : রোগাক্রান্ত সঙ্গী বা সঙ্গীনীর সাথে সঙ্গমের পর থেকে গনোরিয়ার প্রকাশ কাল ৩ থেকে ১০ দিন।
পুরুষের ক্ষেত্রে মূত্রপথের সম্মুখ অংশে জীবাণু সংক্রমণ শুরু হয় এবং যথাসময়ে চিকিৎসা না নিলে ক্রমে তা প্রস্টেট গ্রন্থি এমনকি মূত্রথলি তথা উপাণ্ড বা শুক্রাশয় (epidymis) পর্যন্ত ছড়ায় পরে।
প্রথমে মূত্রনলের বহিদ্বারে লালচে ও আটালো চটচটে ভাব দেখা যায়। দু একদিনের মাঝে প্রস্রাবের সময় জালাপোড়া শুরু হয়।
রোগীর সাধারণত চিকিৎসকের কাছে বলেন, আমার আগুনের মত প্রস্রাব হয়। ঘনঘন প্রস্রাব পায় । মুখপাত্র থেকে সাধারণত হলুদ ক্ষরণ বের হয় । জ্বর জ্বর ভাব বা হালকা জ্বর থাকতে পারে। কখনও কখনও কুচকির লসিকা ফুলে ওঠে এবং চাপলে ব্যথা পাওয়া যায় ।
(খ) স্থানীয় উপসর্গ/ লক্ষণসমূহ : এছাড়াও যেসব স্থানীয় উপসর্গ/ লক্ষণ দেখা যায় তা হলো :
১. মূত্রপথের সম্মুখভাগ প্রদাহ বা এন্টেরিয়র ইউরেথ্রাইটিস : লিটার গ্রন্থিসমূহে জীবাণু দূষণ ঘটে। শীর্ণ - শীর্ষ প্রদাহ (balanits) হয়। পুরুষাঙ্গ ধনুকের মত বেঁকে যায়।
একে কার্ডি বলে। ফলে উত্তেজিত অন্যথায় উত্থিত হলে অত্যন্ত বেদনাদায়ক হয় । কখনও কখনও বা উপরে গ্রন্থিতে প্রদাহ হয় ।
২. মূত্রপথের পশ্চাদভাগ প্রদাহ : সময়মতো চিকিৎসা না করালে বিশেষত রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রস্রাব পথে কোনো যন্ত্রণা বা মূত্রশলাকা অর্থাৎ ক্যাথেটার প্রবেশ করালে জীবাণু স্বাভাবিকভাবেই ঊর্ধ্বদিকে বিস্তার লাভ করে।
ফলে ঘন ঘন প্রস্রাব পায়। রোগী প্রস্রাব ধরে রাখতে পারে না। গৃহ্যদ্বারের পাশ্ববর্তী এলাকায় অর্থাৎ মেরিনিয়ামে ব্যথা হয় ।
৩. তীব্র প্রস্টেট প্রদাহ : এ ক্ষেত্রে রোগীর কাপিয়ে জ্বর আসে (১০২°) পিঠের নিম্নাংশে এবং গুহ্যদ্বারের পাশের এলাকায় ব্যথা হয়। রোগী চেয়ারে বসতে পারে না।
ইনফ্লুয়েঞ্জা হয়েছে বলে ভুল হতে পারে। প্রস্রাব করার সময় যন্ত্রণা হয়, ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। পায়ু পথে আঙ্গুল ঠুকিয়ে পরীক্ষা করলে প্রস্টেট ফোলা অনুভূত হয় এবং তীব্র স্পর্শকাতরতা বিদ্যমান থাকে। চিকিৎসা না করালে অন্ডকোষে ছড়িয়ে যেতে পারে।
৪. পুরনো প্রস্টেট প্রদাহ : যদি ধৈর্যের সাথে তীব্র প্রদাহ চিকিৎসা না করানো হয় তবে তা পুরনো হয়ে পড়ে। প্রস্টেটের নিঃসরণে পুঁজ থাকলেও এ সময় রোগ সৃষ্টিকারী জীবণুকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে যায়।
এক্ষেত্রে পিঠের নিম্নাংশ, পায়ু ও পায়ুর পাশে এমনকি পায়ের পেছনের অংশে ব্যথা হতে পারে। এমনকি শরীর ম্যাজম্যাজ, অকাল স্থলন ও পুরুষত্বহীনতাও দেখা দিতে পারে ।
৫. মূত্রথলির প্রদাহ : মূত্রথলির প্রদাহ, ঘনঘন প্রস্রাবের বেগ এবং প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া হয় এবং তলপেট ব্যথা থাকে ।
৬. উপাণ্ড প্রদাহ : রোগীর সবচেয়ে বড় সমস্যা রোগী বন্ধ্যা হয়ে যেতে পারে, উপাণ্ড থেকে বীর্যনলে রোগ বিস্তার লাভ করার ফলে তলপেট ও কঁচকি অঞ্চলে ব্যথা শুরু হয়। রোগী বন্ধ্যা হয়ে যেতে পারে ।
৭. মূত্রপথের পাথর সংকোচন : প্রায় শতকরা ৭০ ভাগ ক্ষেত্রে মূত্রপথের কুন্ডবৎ (Bulbous) অংশে সংকোচন হয়ে থাকে এছাড়া শিশ্ন ও মুণ্ড বা অণ্ডথলির সংযোগস্থল এবং অভ্যন্তর অংশেও তা ঘটতে পারে।
তবে ঝিল্লিময় অংশ ও প্রস্টেটগত অংশ গনোরিয়াজাত সংকোচন থেকে মুক্ত থাকে। নিম্নে এ রোগের বর্ণনা দেয়া হলো :
রাগের বিবরণ :
১. পুরুষের ক্ষেত্রে : এ রোগের ফলে প্রস্রাব ক্রমেই সরু হয়ে যায় এবং ফোঁটা ফোঁটা করে প্রস্রাব হওয়া শুরু করে। যদি চিকিৎসা না করানো হয় তবে পুরনো সংক্রমণের ক্ষেত্রে সকালে মূত্রপথ দিয়ে ঘন সাদাটে ক্ষরণ বের হয়ে আসে। যদি কেউ হাত | দিয়ে শিশুদণ্ড অনুবব করে দেখবে যে সংকুচিত মূত্রপথটিকে দড়ির মত শক্ত মনে হচ্ছে। মাঝে মাঝে মনে হয় প্রস্রাব বেরই হবে না। মূত্রথলির মাঝে তা আটকা পড়ে থাকে ।
২. নারীর ক্ষেত্রে সাধারণত Gonococcus মহিলাদের মূত্রাশয়, জরায়ুর গ্রীবা ও বার্থেলিন গ্রন্থিকে আক্রান্ত করে এবং শুরুতেই প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া হয়। এমনকি যোনি থেকে ক্ষরণ এবং বহির্যোনি প্রদাহ ইত্যাদি দেখা দেয়। এ রোগে মহিলাটি বন্ধ্যা হয়ে যেতে পারে ।
৩. পায়ুনল প্রদাহ : মহিলা ও পুরুষ দুজনেরই এ রোগ হতে পারে। পুরুষদের সাধারণত সমকামিতার জন্য এবং মহিলাদের সংক্রমণ যোনি থেকে পিছনের দিকে বিস্তৃত হওয়ার জন্য এটা হতে পারে।
৪. নবজাতকের চক্ষুপ্রদাহ : গনোরিয়া গ্রস্ত মায়ের জন্মনল থেকে নবজাতকের চোখ সহজেই জীবাণু আক্রান্ত হয়।
ফলে চোখ দিয়ে প্রচুর পুঁজ রক্ত ঝরে, এমনকি দৃষ্টি শক্তির ক্ষতি হতে পারে, | রক্তের মাধ্যমেও এ রোগ দেহের অন্যান্য অংশে চড়িয়ে যেতে পারে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, যে সমস্ত যৌন রোগ (STD) রয়েছে তার মধ্যে গনোরিয়া রোগ খুবই ভয়াবহ রোগ যা Neisseria gonorrhoe নামক এক প্রকার জীবাণুর মাধ্যমে হয়ে | থাকে। Gonococcus গ্রাম, অরঞ্জিত এবং ডিম্বাকৃতি। এর প্রকাশকাল সঙ্গমের পর ৩-১০ দিন।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ গনোরিয়া রোগের লক্ষণ কি কি | গনোরিয়া রোগের লক্ষণ সমূহ বর্ণনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম গনোরিয়া রোগের লক্ষণ কি কি | গনোরিয়া রোগের লক্ষণ সমূহ বর্ণনা কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।