ফাতেমীয় আন্দোলনের সফলতার কারণ কি
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো ফাতেমীয় আন্দোলনের সফলতার কারণ কি জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের ফাতেমীয় আন্দোলনের সফলতার কারণ কি।
ফাতেমীয় আন্দোলনের সফলতার কারণ কি |
ফাতেমীয় আন্দোলনের সফলতার কারণ কি
উত্তর : ভূমিকা : ৯০৯ খ্রি. ওবায়ুদুল্লাহ আল মাহদী কর্তৃক উত্তর আফ্রিকার তিউনিসিয়ায় ফাতেমীয় খেলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়। এই খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা হয় মূলত আব্বাসীয় খিলাফতের বিরুদ্ধে। ফাতেমীয় খিলাফতের শাসন প্রতিষ্ঠা লাভ করে ইসমাঈলীয় শিয়াদের দ্বারা।
আর এই মতবাদের প্রধান ধারক ও বাহক ছিলেন আব্দুল্লাহ বিন মায়মুন যার প্রচেষ্টায় বিভিন্ন অঞ্চলে দ্রুত প্রেরণ করেন এবং ধারাবাহিকতায় ওবায়দুল্লাহ আল মাহদী ৯০৯ খ্রিস্টাব্দে ফাতেমীয় রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন ।
→ ফাতেমীয় খিলাফতের সফলতার কারণ : ফাতেমীয় আন্দোলন সফলতার পিছনে তাদের যে অবদান রয়েছে, নিম্নে তা আলোচনা করা হলো :
১. আব্দুল্লাহ বিন মায়মুনের প্রচার : উত্তর আফ্রিকায় ফাতেমীয় আন্দোলন প্রতিষ্ঠায় আব্দুল্লাহ বিন মায়মুনের অবদান অপরিসীম । তিনি সর্বপ্রথম ফাতেমীয় শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জোর প্রচারণা চালান। আব্বাসীয় সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে যাতে করে তিনি তার শিয়া মতবাদের অনুসারী বৃদ্ধি করে ফাতেমীয় খিলাফত প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।
২. আবু আবদুল্লাহ আল হুসাইন : মায়মুনের মৃত্যুর পর তার প্রদর্শিত শিয়া মতবাদ প্রচার করার দায়িত্ব শুরু করেন তার শিষ্য আবু আব্দুল্লাহ হুসাইন। আৰু আব্দুল্লাহ হজের সময় শিক্ষক বেশে ইফ্রিকিয়ায় গমন করতে থাকেন। তিনি মাহদীর অলৌকিক শক্তি সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেন।
যার ফলে কাতামা গোত্রের প্রায় সকলে এবং দলপতি তার মতবাদ বিশ্বাস করেন। অতঃপর তিনি কাতামাহ দলপতি হাসানের সহায়তায় তারুত ও মিনার জয় করেন। পরবর্তীতে তিনি ৯০৯ সালে জিয়াদাতুল্লাহকে যুদ্ধে পরাজিত করেন।
৩. আবু আবদুল্লাহ আশশীঈ : ফাতেমীয় বংশের প্রচারক আবদুল্লাহর অপর এক শিষ্য আবু আবদুল্লাহ আশশীঈ ৯০০ খ্রি. ফেব্রুয়ারি মাসে প্রচার কার্যে নিয়োজিত হন । তিনি শুধু প্রচারকেই দিলেন না সেই সাথে তিনি ছিলেন একজন ধর্ম প্রচারক। যার ফলে তিনি ফাতেমীয় মতদর্শন প্রচার করেন এবং দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে আব্বাসীয় খিলাফতে ।
৪. কাতামা গোত্রের সমর্থন : আবু আব্দুল্লাহ আশশীঈ উত্তর আফ্রিকায় ফাতেমীয় খেলাফতের প্রচার চালাতে থাকেন। তাঁর এ ধর্ম প্রচার নিয়ে বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে সংঘর্ষ চলতে থাকে।
এই সংঘর্ষ দমনের জন্য তাকে পার্বত্য অঞ্চলের কাতামা গোত্রের দলপতি ও গোত্রের বার্বাররা তাকে সাহায্য করতে থাকে। সেই সাথে তারা সর্বদা সকল প্রকার সাহায্য হাসান আশশীঈকে করবে বলে ওয়াদা প্রদান করেন।
৫. মাহদীর কূটনৈতিক তৎপরতা : আল হাবিবের পুত্র ছিলেন ওবায়দুল্লাহ আল মাহদী। তাকে ফাতেমীয়দের উত্তরাধিকারী মনোনীত করা হয়। অপরদিকে, আবু আব্দুল্লাহ তাকে প্রতিশ্রুতি মাহদী উপাধি দিয়ে তার নামে অনেক অলৌকিক কাহিনি প্রচার করতে থাকেন।
এ সময় কায়রোয়ানের অধিকাংশ লোক ছিল গোড়া মুসলিম যার জন্য কুটকৌশলী মাহদীর কৌশল গ্রহণ করে নিজে গোড়া মুসলিম হয়ে যান আর বিরোধীদের শাস্তি প্রদান করেন ।
ফাতেমীয় খিলাফত প্রতিষ্ঠা : আব্দুল্লাহ মাহদীকে কায়রোয়ানে প্রতিষ্ঠিত করেন। তার কার্যকলাপের ওপর কাতামা গোত্র প্রধান এবং স্বয়ং তিনি সন্দেহ পোষণ করেন। যার ফলে আবু জাকিরের গৃহে নেতৃবৃন্দের এক গোপন বৈঠক বসে।
মাহদী এটি প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল্লাহকে ও সেই সাথে তার ভ্রাতা আব্বাস ও জাকিরকে হত্যা করে কায়রোয়ানে শিয়া ইসমাঈলীয় ফাতেমীয় খিলাফত প্রতিষ্ঠা করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, যদিও ওবায়দুল্লাহ আল মাহদীকে বলা হয় ফাতেমীয় বংশের প্রতিষ্ঠাতা কিন্তু তিনি প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন না।
তার ফাতেমীয় আন্দোলনকে সফল করেন মূলত মায়মুন, আল হুসাইন, মাহদী ও আশশীঈর। তাই আমরা বলতে পারি ফাতেমীয় রাজবংশ প্রতিষ্ঠায় এদের অবদান কোনো অংশে কম ছিল না ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ ফাতেমীয় আন্দোলনের সফলতার কারণ কি
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম ফাতেমীয় আন্দোলনের সফলতার কারণ কি। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।