বুয়াইয়া রাজারা যেসব কার্যাবলি সম্পাদন করেন তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও
বুয়াইয়া রাজারা যেসব কার্যাবলি সম্পাদন করেন তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও |
বুয়াইয়া রাজারা যেসব কার্যাবলি সম্পাদন করেন তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও
উত্তর : ভূমিকা : আব্বাসীয় শাসনামলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজবংশ গড়ে উঠেছিল। খলিফাদের দুর্বল শাসননীতি অযোগ্যতা, শাসনকার্যের অবহেলার ফলে এ রাজবংশগুলো গঠিত হয়েছিল। তার মধ্যে অন্যতম একটি বুয়াইয়া রাজবংশ।
বুয়াইয়াদের শাসনক্ষমতায় আরোহণ আব্বাসীয় ইতিহাসে দুর্ভাগ্যজনক হলেও তাদের অবদান ও কার্যাবলি ইসলামের ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছে। নিম্নে বুয়াইয়া কার্যাবলি তুলে ধরা হলো :
বুয়াইয়াদের কার্যাবলি : ৯৪৬ সালে জানুয়ারি মাসে আজাদ-উদ-দৌলা খলিফাকে অন্ধ করবে মুকতাদিরের অপর পুত্র আল মুতি (৯৪৬-৯৭৪ খ্রি.) উপাধি দান করে নামেমাত্র খলিফা নিযুক্ত করেন। এইবার আজাদ-উদ-দৌলা প্রকাশ্য সর্বাত্মক ক্ষমতার অধিকারী ছিল।
তিনি শিয়া সম্প্রদায়ের লোক ছিলেন। তিনিই এই সময় কারবালার হত্যাকাণ্ডকে স্মরণ করে সাধারণের দুঃখপ্রকাশ করার জন্য মহরমের ১০ তারিখকে শোক দিবস বলে ঘোষণা করেন। ৯৬৭-৯৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত আজাদ উদ দৌলা আব্বাসীয় সাম্রাজ্য শাসন করেন ।
→ বুয়াইয়ারা পরবর্তীতে কিছু কার্যাবলি পরিচালনা করেন। তা নিম্নরূপ :
১. বাগদাদ নগরীকে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ সুন্দর নগরীতে রূপান্তর করেন ।
২. সরে যাওয়া হাজারো খাল ও পুকুরগুলো জনসাধারণের ব্যবহারের উপযোগী করে তোলার জন্য সংস্কার করেন।
৩. ধর্মীয় অনুষ্ঠান পরিচালনার নগরীতে অনেক মসজিদ নির্মাণ করেন।
৪. আল বিরামিস্তান আল আজুদি নামে তিনি একটি হাসপাতাল নির্মাণ করেন । এতে সর্বসাধারণের জন্য চিকিৎসা নেওয়ার সুব্যবস্থা ছিল।
৫. শিক্ষা বিস্তার অধিক হারে প্রসারের জন্য ৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে একটি শিক্ষায়াতন নির্মাণ করা হয় এবং তাতে প্রায় দশ হাজার বইয়ের গ্রন্থাগার নির্মাণ করা হয়।
৬. জ্যোতির্বিজ্ঞানে বিশেষ অবদান রাখার জন্য আল মামুনের অনুকরণে মানমন্দির নির্মাণ করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বুয়াইয়াদের উত্থান খিলাফতের হুমকিস্বরূপ হলেও তারা জনসাধারণের মঙ্গল সাধনের জন্য অনেক কার্যাবলি করেছিলেন। তা আজও ইসলামের ইতিহাসের অমর হয়ে আছে।