বায়তুল হিকমা বলতে কি বুঝায় | বায়তুল হিকমা সম্পর্কে লিখ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বায়তুল হিকমা বলতে কি বুঝায় | বায়তুল হিকমা সম্পর্কে লিখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বায়তুল হিকমা বলতে কি বুঝায় | বায়তুল হিকমা সম্পর্কে লিখ।
বায়তুল হিকমা বলতে কি বুঝায় | বায়তুল হিকমা সম্পর্কে লিখ |
বায়তুল হিকমা বলতে কি বুঝায় | বায়তুল হিকমা সম্পর্কে লিখ
উত্তর : ভূমিকা : আব্বাসীয় যুগে খলিফা মামুনের শাসনকালে জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চা ও অনুশীলনে গৌরবময় যুগ। খলিফা আর মামুন বায়তুল হিকমা বা House of wisdom নামে একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন।
জ্ঞানবিজ্ঞান, শিক্ষাদীক্ষা, কৃষ্টি ও সভ্যতার চরম উৎকর্ষ সাধন করে আব্বাসীয়রা স্বর্ণ যুগের সূচনা করেন এবং বিশ্বের জ্ঞানবিজ্ঞাণের ধারক বাহক হিসেবে ভূমিকা রাখেন। এজন্য খলিফা আল মামুনের শাসনকালকে ইসলামি স্বর্ণযুগ বলা হয় ।
→ বায়তুল হিকমার পরিচয় : আব্বাসীয় খলিফা আল মামুন ছিলেন একজন জ্ঞানী ব্যক্তিত্ব। তিনি অনুধাবন করেছিলেন, জ্ঞানবিজ্ঞান ও শিল্প সাহিত্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের মাধ্যমেই মুসলমানগণ বিশ্বের বুকে তাদের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত রাখতে সক্ষম।
অনুধাবন থেকে তিনি জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চা ও শিক্ষা বিস্তারের জন্য ৮৩০ খ্রি. বাগদাদ নগরীতে বায়তুল হিকমাহ প্রতিষ্ঠা করেন।
বায়তুল হিকমার বিভাগ : বায়তুল হিকমাতে তিনটি বিভাগ ছিল-
(ক) গ্রন্থকার বিভাগ,
(খ) শিক্ষা বিভাগ ও
(গ) অনুবাদ ব্যুরো বিভাগ
(ক) গ্রন্থকার বিভাগ : বায়তুল হিকমার তিনটি শাখার গ্রন্থাকার শাখা অন্যতম। গ্রিক জ্ঞানভান্ডার থেকে উপকরণ সংগ্রহের জন্য খলিফা মামুন ইবনে মাসাওয়া এবং হুনাইন ইবনে ইসহাকের নেতৃত্বে কনস্টান্টিনোপল ও সিসিলি থেকে গ্রিক ভাষায় লিখিত পাণ্ডুলিপি বায়তুল হিকমায় নিয়ে আসেন।
গ্রিক ভাষা ছাড়াও ফারসি, সংস্কৃতি, সিরীয় ইত্যাদি ভাষায় লিখিত পুস্তকাদি তিনি দূত ও প্রতিনিধি মারফত সংগ্রহ করতেন।
(খ) শিক্ষা বিভাগ : শিক্ষায়তন বায়তুল হিকমার আরেকটি বিভাগ। আল মামুনের রাজত্বকালে বাগদাদ নগরী শিক্ষার নগরীতে পরিণত হয়েছিল।
খলিফা আল মামুন এ সময় পারসিক, গ্রিক, হিন্দু, খ্রিস্টান, আরবীয় প্রভৃতি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মনীষী শিক্ষা ও গবেষণার জন্য বাগদাদে নিয়ে আসেন। এ সকল মনীষীর সান্নিধ্যে এসে মানুষ জ্ঞানবিজ্ঞানের শিক্ষালাভ করার সুযোগ লাভ করে ।
(গ) অনুবাদ ব্যুরো বিভাগ : বায়তুল হিকমার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ হলো অনুবাদ ব্যুরো বিভাগ। পৃথিবীর বিখ্যাত বিজ্ঞানী, দার্শনিক, গণিতবিদ, জ্যোতির্বিদ ও চিকিৎসাশাস্ত্রবিদদের প্রণীত গ্রন্থসমূহ আরবি ভাষায় অনুবাদ করা হয়।
খলিফা মামুনের পৃষ্ঠপোষকতায় গ্যালেন, ইউক্সিড, টলেমি পীথাগোরাস প্রমুখ মনীষীর বৈজ্ঞানিক গ্রন্থাবলি অনুবাদ করা হয়। এছাড়া দার্শনিক বিশ্ববিখ্যাত দার্শনিক যেমন প্লেটো, এরিস্টটল প্রমুখ ব্যক্তিদের গ্রিক গ্রন্থগুলো আরবিতে অনুবাদ করে বায়তুল হিকমা নিজেকে সমৃদ্ধ করেছে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আব্বাসীয় খলিফা আল মামুন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বায়তুল হিকমা হলো নিশ্বর শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপঠিগুলোর অন্যতম। ঐতিহাসিক PK Hitti বলেছেন অনুবাদ ব্যুরো হিসেবে ব্যবহৃত হওয়া ছাড়াও বায়তুল হিকমাহ একটি পাঠাগার হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
এই সময়ের বিখ্যাত কয়েকজন ব্যক্তির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ইবনে ইসহাক, টলেমি, পল, গ্যালেন মুখ। সর্বোপরি বলা যায় যে, বায়তুল হিকমার অবদান অনবদ্য ও গৌরবান্বিত।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ বায়তুল হিকমার পরিচয় দাও
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বায়তুল হিকমা সম্পর্কে যা জান লেখ। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।