বার্মাকিদের পতনের কারণগুলো আলোচনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বার্মাকিদের পতনের কারণগুলো আলোচনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বার্মাকিদের পতনের কারণগুলো আলোচনা কর।
বার্মাকিদের পতনের কারণগুলো আলোচনা কর |
বার্মাকিদের পতনের কারণগুলো আলোচনা কর
উত্তর : বার্মাকিগণ ৭৮৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৮০৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ১৭ বছর যাবৎ অবিচলিত আনুগত্যের সাথে কঠোর পরিশ্রম করে হারুন অর রশীদের রাজত্বকে গৌরবোজ্জ্বল এবং শ্রীসম্পদে ভরপুর করে তোলে এবং যে বার্মাকিগণ মঙ্গলজনক কার্যাবলির দ্বারা সাম্রাজ্যের জনগণের মনে অধিষ্ঠিত হয়েছিল।
কিন্তু ৮০৩ খ্রিস্টাব্দে তাদের আকস্মিক পতন ইতিহাসে একটি বিস্ময়কর ঘটনা হিসেবে পরিচিত। এ ঘটনা শুধু রশীদের রাজত্বকালের উজ্জ্বলতাকেই ম্লান করেনি, তার ভবিষ্যৎ জীবনকেও অনুশোচনা ও কৃতঘ্নজনিত বিবেকানুভূতি দ্বারা সমাচ্ছন্ন করে রেখেছিল ।
→ বার্মাকিদের পতনের কারণ : বার্মাকিদের পতন সম্পর্কে ভিন্ন ঐতিহাসিক ভিন্ন মত প্রকাশ করেন। নিম্নে বার্মাকিদের পতনের কয়েকটি কারণ তুলে ধরা হলো :
১. অগণিত ধনরত্ম, প্রভাব ও সুখ্যাতি : ঐতিহাসিক ইবনে খালদুনের মতে, তাদের অপরিমেয় প্রভাব, তাঁদের সুখ্যাতি এবং তাদের অগণিত ধনরত্ন তাদের পতনের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায় । প্রয়োজনের সময় স্বয়ং খলিফাকেও অর্থের জন্য বার্মাকিদের মুখাপেক্ষী হতে হতো।
হারুন অর রশীদের ন্যায় স্বেচ্ছাচারী এবং দৃঢ়চেতা খলিফার নিকট তাঁদের অত্যধিক প্রভাব প্রতিপত্তি এবং অপরিসীম জনপ্রিয়তা অসহ্য হয়ে ওঠে এবং তিনি তাদের পতন ঘটানোর জন্য অধীর হয়ে ওঠেন।
২. খলিফার ভগ্নীর সাথে গোপন বিবাহ : কোনো কোনো ঐতিহাসিকের মতে রশীদের ভগ্নী আব্বাসার সাথে জাফর ইবনে ইয়াহিয়ার গোপন বিবাহই বার্মাকিদের পতনের একমাত্র কারণ। কিন্তু ঐতিহাসিক ইবনে খালদুনের মতে উক্ত ঘটনা একেবার নিছক ভিত্তিহীন অমূলক ঘটনা মাত্র।
৩. শিয়া ও সুন্নি দ্বন্দ্ব : পারসিক বার্মাকিগণ ছিল শিয়া সম্প্রদাভুক্ত আর আব্বাসীয় খলিফাগণ এবং আরব আমিরগণ সকলেই ছিলেন সুন্নি সম্প্রদায়ভুক্ত। কাজেই শিয়াদের প্রাধান্য সুন্নি মুসলমানগণ কোনোভাবেই বরদাস্ত করতে পারছিলেন না।
৪. আলী বংশীয়দের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ : ঐতিহাসিক জুরসি যায়দান বলেন যে, সে সময় বার্মাকিগণ আলী বংশীয় লোকদের সাথে ঘনিষ্ঠ মেলামেশা শুরু করেন। তাঁরা জাফরের বাসভবনে গোপনে মিলিত হয়ে নানাপ্রকার গোপনীয় আলাপ আলোচনা চালাতো।
এতে অবগত হয়ে ঈর্ষাকাতর ফজল বিন-রাবি খলিফাকে জানান যে, বার্মাকিগণ হারুনকে পদচ্যুত করে আলী বংশীয়দেরকে খিলাফত প্রদান করার জন্য ষড়যন্ত্র করছেন। এই অভিযোগে খলিফা হারুন অধৈর্য হয়ে ওঠেন এবং তাদের ধ্বংস সাধন করেন ।
৫. সাম্রাজ্যের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিগণের মনে হিংসার উদ্রেক : তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি, সম্মান ও পদমর্যাদা শুধু খলিফাই নন, সভাসদগণ এবং সাম্রাজ্যের উচ্চপদস্থ সকল ব্যক্তির মনে হিংসার উদ্রেক হয়।
এ প্রসঙ্গে ইবনে খালদুন মন্তব্য করেন যে, তাদের এমন কতকগুলো মিত্র ছিল যারা জ্বলন্ত ঈর্ষার বংশ আত্মীয়তার বন্ধন পর্যন্ত বিস্মৃত হয়েছিল।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, বার্মাকিদের প্রভাব প্রতিপত্তি বৃদ্ধিই তাদের পতনের অন্যতম কারণ ছিল। প্রতিভাসম্পন্ন বার্মাকি পরিবারের এরূপ শোচনীয় পরাজয়ের মাধ্যমে আব্বাসীয় সাম্রাজ্যে পারসিকদের প্রাধান্য নষ্ট হয়ে যায় এবং আরবগণের আধিপত্যের সূচনা হয় ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ বার্মাকিদের পতনের কারণগুলো আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বার্মাকিদের পতনের কারণগুলো আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।