আজাদ উদ দৌলা সেই সময়ের সবচেয়ে উজ্জ্বল নামক ছিলেন। উক্তিটি বিশ্লেষণ কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো আজাদ উদ দৌলা সেই সময়ের সবচেয়ে উজ্জ্বল নামক ছিলেন। উক্তিটি বিশ্লেষণ কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের আজাদ উদ দৌলা সেই সময়ের সবচেয়ে উজ্জ্বল নামক ছিলেন। উক্তিটি বিশ্লেষণ কর ।
আজাদ উদ দৌলা সেই সময়ের সবচেয়ে উজ্জ্বল নামক ছিলেন। উক্তিটি বিশ্লেষণ কর |
আজাদ উদ দৌলা সেই সময়ের সবচেয়ে উজ্জ্বল নামক ছিলেন। উক্তিটি বিশ্লেষণ কর
উত্তর : ভূমিকা : আজাদ-উদ-দৌলাকে বুয়াইয়াদের সর্বপ্রথম শাসক বলে কোন ঐতিহাসিক অভিহিত করেন। মূলত আজাদ-উদ-দৌলা বুয়াইয়দে সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন। বুয়াইয়া বংশের প্রতিষ্ঠাতা মুইজদৌলার বড় ভাই এর পুত্র ছিলেন আজাদ-উদ-দৌলা ।
বুয়াইয়া শাসক আজাদ-উদ-দৌলার সময়ে বুয়াইয়া রাজশক্তি সর্বোচ্চ শিখরে উপনীত হয়। নিজ অধ্যবসায়, কর্মদক্ষতা ও বিচক্ষণতায় তিনি কেবল এক বুয়াইয়া আমিরই ছিলেন না সেই সময়কালের বিখ্যাত শাসকদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন।
→ বুয়াইয়া শাসক আজাদ-উদ-দৌলা সর্বশ্রেষ্ঠ বলার কারণ : নিম্নে বুয়াইয়া শাসক আজাদ-উদ-দৌলাকে সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক বলার কারণ বর্ণনা করা হলো :
১. সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা ও ক্ষমতারোহণ : আব্বাসীয় শাসকদের দুর্বলতার সুযোগে আজাদ-উদ-দৌলা ও তার পূর্ববর্তী শাসকগণ ক্ষমতায় আরোহণ করেছিলেন। ৯৬৭ সাল ইজাজ-দৌলাকে পরাজিত করে আজাদ-উদ-দৌলা ক্ষমতায় আরোহণ করেন।
আজাদ-উদ-দৌলার সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি ছিল খলিফা হারুনের ন্যায় ক্ষুদ্র রাজবংশগুলোর সমন্বয় একটি সমৃদ্ধশালী রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তার শাসনামলে বুয়াইয়ারা সর্বোচ্চ শক্তিশালী জাতিতে পরিণত হন।
২. হামাদানীয় সম্প্রদায়কে দমন : আজাদ-উদ-দৌলা শাসক হিসেবে সুনিপুণ, রণকৌশলী ছিলেন। তার শাসনামলে হামদানী সম্প্রদায় সাম্রাজ্যের দীয়ারে বরক, রাবিয়া, মুজার অঞ্চলে শাসন কয়েম করে বিদ্রোহ শুরু হয়।
আজাদ-উদ-দৌলা কাল বিলম্ব না করে তাদের বিদ্রোহ দমন করেন এবং তিনটি অঞ্চলে পুনরায় দখল করেন।
৩. সুলতান শাহান শাহ উপাধি গ্রহণ : বুয়াইয়া আমির আজাদ-উদ-দৌলা পৃথিবীর তথা ইসলামের ইতিহাসে একজন শাসক সুলতান এবং শাহান শাহ উভয়ই উপাধি গ্রহণ করেন। তার পূর্ববর্তী সুলতানগণ শুধু সুলতান উপাধি গ্রহণ করেছিলেন।
৪. আজাদ-উদ-দৌলার উচ্চাবিলাসি মনোভাব : আজাদ-উদ- দৌলা একজন উচ্চাবিলাসী শাসক ছিলেন। তার বাস্তব প্রমাণ পাওয়া যায় বাগদাদ নগরী আক্রমণের মধ্যদিয়ে। কিন্তু তার এ আক্রমণ সফল হয়নি।
আজাদ-উদ-দৌলার বাগদাদ জয়ের প্রবল ইচ্ছা ছিল এবং তা কারামাতিদের দমন করার জন্য বখতিয়ার আজাদ-উদ- দৌলার সাহায্য কামনা করলে তার বাস্তব প্রমাণ পাওয়া যায় ।
৫. রাজতন্ত্রের সূচনা : আব্বাসীয় শাসনামলে আজাদ-উদ-দৌলা প্রথম রাজতন্ত্রের প্রচেষ্টা চালান। মূলত তার রাজতন্ত্রের কার্যাবলি শুরু হয় ৯৫২ সালের শাহান শাহ উপাধি গ্রহণের মধ্যেদিয়ে। আর তা বাস্ত বায়িত ৯৮০ খ্রিস্টাব্দে বুয়াইয়া কনফেডারেসি প্রতিষ্ঠার মধ্যেদিয়ে।
৬. আস্থাহীন শাসক : বুয়াইয়া সুলতান আজাদ-উদ-দৌলা ছিলেন একজন আস্থাহীন শাসক। তিনি জনসাধারণের উপর এবং এমন কি নিজ আত্মীয়স্বজনের উপর ও বিশ্বাস স্থাপন করতে পারতেন না, তার প্রমাণ হলো তার বড় ছেলে আবুল ফারাসিকে শাসক বানালেও তা ছিল নামেমাত্র ।
৭. রাজ্যবিস্তার ও কিরমান দখল : রাজ্য সম্প্রসারণ নীতিতে আজাদ-উদ-দৌলা বিশ্বাসী ছিলেন। কিরমান শহরটি উত্তর পশ্চিম ও দক্ষিণ পূর্ব এ দুভাগে বিভক্ত ছিল। রাজ্য জয়ের আশায় এবং সাম্রাজ্য সুদৃঢ় করার স্বার্থে ৯৭২ খ্রি. কিরমান দখল করেন ।
৮. আজাদের শাসননীতি : সুষ্ঠু সুন্দরভাবে শাসন পরিচালনা করার জন্য আজাদ-উদ-দৌলা এক বিশাল শাসননীতি কায়েম করেন। তার আমলে অদখলকৃত এলাকা পুনরায় দখল করার জন্য তিনি আক্রমণ পরিচালনা করেন। বড় রাজ্যগুলোর মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন ও তার নীতির মধ্যে অন্যতম একটি নীতি ছিল ।
৯. আমিরাত ও খিলাফতকে একত্রীকরণ : বুয়াইয়া আমিরদের | সুবিধার্থে তিনি আমিরাত ও খিলাফত ব্যবস্থাকে একত্রীকরণের ব্যবস্থা করেন। যেন পরবর্তীকালে তার বংশের খলিফা যেন সহজে 'খিলাফত ব্যবস্থায় বসতে পারেন সেদিকে লক্ষ রেখে আমিরাত ও খিলাফতকে একত্রীকরণ করেন।
১০. খলিফার সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন : বুয়াইয়া | রাজপুত্রকে আব্বাসীয় খিলাফতে বসানোর জন্য আজাদ-উদ্- দৌলা খলিফা আত-তাইয়ের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। তার সাথে নিজ কন্যাকে বিবাহ দেন এবং নিজেও খলিফার এক কন্যাকে বিবাহ করেন ।
১১. সাম্রাজ্য স্থিতিশীলতা আনয়ন : তার শাসনামলে সাম্রাজ্যের স্থিতিশীলতা আনয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। কেননা সাম্রাজ্যের বিশৃঙ্খলা ঘটাতে এমন কোন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে তা তিনি কঠোরহস্তে অতিদ্রুততার সাথে দমন করতেন এবং সাম্রাজ্যের স্থিতিশীলতা অনিয়ম করতেন।
১২. মুদ্রায় নিজের অঙ্কিতকরণ : খলিফার নামের সাথে আজাদ- উদ-দৌলার যেন নাম থাকে এইজন্য মুদ্রায় নিজের নাম রাখার ব্যবস্থা করেন । যা সার্বভৌমত্বকে ধ্বংসের সম্মুখীন করেছিল।
১৩. জুমার নামাজে নাম পাঠ : আব্বাসীয়দের দুর্বলতার সুযোগে আজাদ-উদ-দৌলা মুদ্রাঙ্কিত করার পাশাপাশি জুমার খুৎবায় নাম পাঠের ব্যবস্থা করেন।
১৪. স্থাপত্যশিল্পে পৃষ্ঠপোষকতা : সুলতান আজাদ-উদ- দৌলা স্থাপত্যশিল্পের একনিষ্ঠ পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। সিরাজ নগরীতে রাজধানী স্থাপন করলেও আজাদ-উদ-দৌলা বাগদাদ | নগরীর প্রভূত উন্নয়ন সাধিত করেছিলেন।
১৫. শিক্ষা ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক : আজাদ-উদ-দৌলা | নীতিজ্ঞান শূন্য হলেও একজন বিদ্যোৎসাহী শাসক হিসেবে ইসলামের ইতিহাস তার ব্যাপক ভূমিকা ছিল।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আজাদ-উদ-দৌলা আজাদ ধর্মনিরপেক্ষ শাসনব্যবস্থার প্রবক্তা। আব্বাসীয়দের রক্ষা করতে এসে ভক্ষক সেজে আব্বসীয়দের হাত থেকে ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছিলেন।
যার ফলে পরবর্তী আব্বাসীয়দের চরম সংকটের সম্মুখীন হতে হয়। বুয়াইয়া সুলতান আজাদ-উদ-দৌলার অবদান ছিল অপরিসীম।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ আজাদ উদ দৌলা সেই সময়ের সবচেয়ে উজ্জ্বল নামক ছিলেন। উক্তিটি বিশ্লেষণ কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম আজাদ উদ দৌলা সেই সময়ের সবচেয়ে উজ্জ্বল নামক ছিলেন। উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে