এইডস কিভাবে ছড়ায় | এইডস রোগ প্রতিরোধের উপায়
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো এইডস কিভাবে ছড়ায় | এইডস রোগ প্রতিরোধের উপায় জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের এইডস কিভাবে ছড়ায় | এইডস রোগ প্রতিরোধের উপায় ।
এইডস কিভাবে ছড়ায় এইডস রোগ প্রতিরোধের উপায় |
এইডস কিভাবে ছড়ায় | এইডস রোগ প্রতিরোধের উপায়
- এইডস এর প্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা কর।
- এইডস ব্যাধির বিস্তার কিভাবে ঘটে? তা প্রতিকারের ব্যবস্থাসমূহ বিশ্লেষণ কর ।
- এইডস এর বিস্তার এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থা পর্যালোচনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : বর্তমানে HIV এবং AIDS নিয়ে পৃথিবীর সকল নাগরিক যে আতঙ্কগ্রস্ত অতিতে কখনই এ রকম আতঙ্ক হয়নি। মাত্র ২৫ বছরে পরাজিত করেছে সাড়ে চার কোটি মানুষকে এবং ধ্বংস করেছে ৪০ লক্ষাধিক মানুষ।
পৃথিবীর মানুষের এ এক রুদ্ধশ্বাস লড়াই । বর্তমান বিশ্বে (HIV/AIDS এইচআইভি/এইডস এর কারণে এক বিপর্যয়ের সম্মুখীন।
এইডস কিভাবে ছড়ায় বা বিস্তার লাভ করে : সুস্থ মানুষের দেহে HIV থাকে না এটি বাইরে থেকে শরীরে ধোকে।
ড. মো. আসাদুল ইসলাম (Bsmmu) অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় বলেন, এইচ আইভি ঝুঁকি রক্তের মাধ্যমে বিস্তার লাভ করে ৯০% ব্লাড ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে -৫% যৌনসঙ্গমে ৭০% থেকে ৮০% গর্ভধারণের মাধ্যমে ৫ থেকে ১০% মাদক গ্রহণের মাধ্যমে ৫ থেকে ১০% এবং মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট যেমন : সিরিঞ্জ ইত্যাদির মাধ্যমে ০.০১% এইডস রোগ ছড়াতে পারে (প্রথম আলো ৭ নভেম্বর ২০০৪)।
→ নিম্নে কিভাবে এইডস ছড়াই তা আলোচনা করা হলো :
১. যৌন সঙ্গম : যৌন সঙ্গমের মাধ্যমে দেহ নিঃসৃত তরল পদার্থ যথা : বীর্য, মূত্র, মল, যোনির নিঃসরণ ইত্যাদির মাধ্যমে HIV ভাইরাস সংক্রমিত দেহ থেকে সুস্থ দেহে স্থানান্তরিত হয় ।
যারা একাধিক ব্যক্তির সাথে যৌন মিলনে অভ্যস্ত তাদের HIV পজেটিভ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তার সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ যারা পায়ুকাম অভ্যস্ত ।
২. দূষিত সুচ ব্যবহার : যেসকল সুচ এইডস ভাইরাস দ্বারা দূষিত যা দিয়ে শিরাভ্যন্তরে ঔষধ দেওয়ার কাজে ব্যবহার হয় তা · অপরের সাথে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করলে।
যারা নেশাজাতীয় ঔষধ সুচের মাধ্যমে শরীরের ঢোকায় তা ভাগাভাগী করে ব্যবহার করলেও এ রোগ ছড়াই ।
৩. HIV পজিটিভ মায়ের বাচ্চা : এটা একটি নবজাতকের দুর্ভাগ্য যে তার মা HIV পজেটিভে আক্রান্ত, পিতা বা মাতা তারা জ্ঞাতসারের বা অজ্ঞাতসারে যাদি HIV পজেটিভ হয় তবে তাদের সন্তান HIV পজেটিভ হওয়ার অধিক সম্ভাবনা থাকে।
সাধারণতভাবে HIV পজেটিভ মায়ের সন্তান শতকরা ২৫% মৃতগর্ভে থেকে HIV পজেটিভ হয়। HIV পজেটিভ মায়ের দুধের মাধ্যমে ও সন্তান HIV পজেটিভ আক্রান্ত হয় ।
৪. রক্ত পরিসঞ্চালন : গ্রহীতা যদি HIV পজেটিভ শরীরের রক্ত গ্রহণ তবে তিনি অব্যশ্যই HIV তে আক্রান্ত হবেন। বর্তমানে রক্ত গ্রহণ করার পূর্বে রক্তে HIV আছে কিনা তা পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু ভারত ও বাংলাদেশে ব্যবস্থাভিত্তিক ব্লাডবংশগুলো কদাচিৎ টেস্ট করে।
৫. এইডস ছড়ানোর অন্যান্য মাধ্যমে : যৌন কমী সহবাস মাদক দ্রব্যসহ বিভিন্ন কারণে একথা থেকে অন্য মানুষে এবং এক দেশ থেকে অন্যদেশে স্থানান্তরিত হয়।
এইডস আক্রান্ত রোগীর ব্যবহৃত সুচ, ব্লেড, বেজার, ক্ষুর সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্ত না করে পুনরায় অন্য ব্যক্তির ব্যবহার করলে HIV তে আক্রান্ত হয় ।
ঘ এইডস AIDS প্রতিরোধ ব্যবস্থা : আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত মায়ানমার, থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এইডস আক্রান্তের সংখ্যা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। | বাংলাদেশে পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নিম্নে এইডস প্রতিরোধের উল্লেখ করা হলো ।
১. যারা HIV বহনকারী তারা যাতে এ ভাইরাস ছড়াতে না পারে সে তাদেরকে পরামর্শ দান তথা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে ।
২. পায়ুকাল ত্যাগ করা উচিত কেননা পায়খানার রাস্তার আবরণী যোনি দেয়াল থেকে ও পাতলা বলে এগুলো দ্রুত ছিঁড়ে যায়।
৩. যৌন আচরণে সংযত হতে হবে, যৌন সঙ্গীর সংখ্যাতে কমাতে হবে। যতবেশি যৌনসঙ্গী হবে ততবেশি এ রোগের আশঙ্কা প্রত্যেকের একজন বিশ্বস্ত অসংক্রমিক মঞ্চি যথেষ্ট।
৪. যৌন সঙ্গমের সময় কনডম ব্যবহার করা। সঙ্গম শেষে কনডম খুলতে হবে কিন্তু সাবধান থাকতে হবে যেন বীর্য শরীরে না লাগা অথবা কনডম ফেটে না যায় ।
৫. শুধুমাত্র বিশ্বস্ত স্বামী বা স্ত্রীর সাথে যৌন মিলনে সীমিত থাকতে হবে ।
৬. রক্ত দেওয়া বা নেবার সময় রক্ত পরীক্ষা করে দেখতে হবে যেন রক্তে HIV না থাকে। HIV তাকলে তা গ্রহণ বা দানে বিরত থাকতে হবে।
৮. জনসাধারণকে (AIDS) এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করে তোলার জন্য পাড়ায় এ জাতীয় ভিত্তিতে এইডস কমিটি গড়ে তুলতে হবে।
৯. সমাজে পতিতাদের পতিতাবৃত্তি থেকে মুক্ত করে অন্য উপায়ে বা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
১০. বিদেশি কুরুচিপূর্ণ প্রদর্শন ও বাজারজাত ও বিক্রি বন্ধ করতে হবে। মানসিক বিকারগ্রস্ত ব্যক্তিদের সুস্থ করে তুলতে হবে।
১১. এইডস এ আক্রান্ত নারীকে গর্ভধারণে বিরত থাকতে হবে।
১২. শিরাপথে মাদক গ্রহণ বন্ধ করতে হবে এবং সবধরনের মাদক গ্রহণ ত্যাগ করতে হবে।
১৩. সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা করতে হবে।
১৪. পুরুষ ও নারী সবার রঙ্গগামিতা হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে ।
১৫. সমকামিতা বন্ধ করতে হবে।
১৬. Who ঘোষণা করেছে যে, এইডস প্রতিরোধে ধর্মীয় শিক্ষাদান এবং যথাযথ নির্মল আচরণ প্রবর্তনের চেয়ে আর কোনো কিছুই সহায়ক হতে পারে না ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, এইডস পৃথিবীর সবচেয়ে ঘাতক ব্যাধির অন্যতম একটি ব্যাধি। এ HIV ভাইরাস পৃথিবীকে প্রায় গ্রাস করে ফেরছে এর চিকিৎসার আজও আবিষ্কৃত হয়নি।
তাই এ রোগ প্রতিরোধের হিসেবে আমরা উপরিউক্ত ব্যবস্থাগুলো গ্রহণ করতে পারি। তবে যদি বিয়ের আগে কনে এবং বরের HIV আছে কি না তা আমরা পরীক্ষা করে নিই তবে তাও এইডস এর প্রতিরোধ হিসেবে কাজ করবে।
সুতরাং সকল নাগরিকের এইডস সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা উচিত নতুবা যেকোনো সময় তা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ এইডস কিভাবে ছড়ায় | এইডস রোগ প্রতিরোধের উপায়
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম এইডস কিভাবে ছড়ায় | এইডস রোগ প্রতিরোধের উপায় । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।