আঘলাবী বংশের পতনের কারণ সংক্ষেপে বর্ণনা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো আঘলাবী বংশের পতনের কারণ সংক্ষেপে বর্ণনা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের আঘলাবী বংশের পতনের কারণ সংক্ষেপে বর্ণনা কর ।
আঘলাবী বংশের পতনের কারণ সংক্ষেপে বর্ণনা কর |
আঘলাবী বংশের পতনের কারণ সংক্ষেপে বর্ণনা কর
উত্তর : ভূমিকা : আব্বাসীয় সাম্রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে যে সকল রাজবংশের উত্থান হয়েছিল তার মধ্যে আঘলাবী রাজবংশ ছিল অন্যতম। আঘলাবীয়রা আব্বাসীয়দের আনুগত্য স্বীকার করে স্বাধীনভাবে রাজ্যশাসন করেন। কিন্তু এক শতাব্দীর শাসনের পর তাদের পতন হয়। (৮০০-৯০৯ খ্রি.)।
তাদের পতন হচ্ছে ইতিহাসের ধারাবাহিকতা। পৃথিবীতে যার সৃষ্টি আছে তার ধ্বংস অনিবার্য। সেই ধারাবাহিকতায় আঘলাবী রাজবংশ এক শতাব্দীর পর ৯০৯ খ্রিস্টাব্দে মিশরের ফাতেমীয় রাজবংশের কাছে পরাজিত হয়।
→ আঘলাবী রাজবংশের পতনের কারণ : আঘলাবী রাজবংশের পতনের যেসব কারণ রয়েছে, তা নিম্নে আলোচনা করা হলো :
১. ঐতিহাসিক নিয়ম : ঐতিহাসিক নিয়ম অনুসারে যে কোনো রাজবংশ ১০০ বছরের বেশি শৌর্য বীর্যের সাথে রাজ্য শাসন করতে পারে না। এ সম্পর্কে ঐতিহাসিক ইবনে খালদুন বলেছেন, “কোন রাজবংশ বড়জোর একশত বছরের কর্মশক্তি বজায় রাখতে পারে। তারপরেই শুরু হয় এর পতনের পালা।" আঘলাবী রাজবংশের ক্ষেত্রে আমরা এই নিয়মটি দেখতে পাই।
২. সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি : আঘলাবী সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি ইতালি, রোম এবং সিসিলির কিছু অংশসহ ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত বিস্তার লাভ করেছিল। কিন্তু আফ্রিকার এই ক্ষুদ্র রাজবংশের শাসকদের অত বিশাল সাম্রাজ্য তাদের পক্ষে শাসন করা দুরূহ ব্যাপার হয়ে পড়ে।
৩. শাসকদের স্থায়িত্ব : সাম্রাজ্যের স্থায়িত্ব বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন শাসকদের স্থায়িত্ব। কিন্তু আঘলাবী রাজবংশের দুই থেকে তিন জন শাসক ছাড়া বাকি সব শাসক ছিল অস্থায়ী। যার জন্য তাদের পতনের গতি ত্বরান্বিত হয়।
৪. অভ্যন্তরীণ দল : অভ্যন্তরীণ দল আঘলাবী বংশের পতনের আরেকটি অন্যতম কারণ। আঘলাবী রাজবংশে ক্ষমতা | গ্রহণ নিয়ে নিজের মধ্যে বিভিন্ন দলের সৃষ্টি হয় যার ফলে পিতারা পুত্র কর্তৃক খুন হয় । যার জন্য এই রাজবংশের পতন দ্রুত হয়।
৫. শাসকদের দুর্বল নীতি : আঘলাবী রাজবংশের শাসকগণ | বৈদেশিক নীতির দিক থেকে ছিল দুর্বল। যার জন্য তাদের সাম্রাজ্য বিভিন্ন দেশের রাজাগণ আক্রমণ করে।
৬. পরবর্তী শাসকদের দুর্বলতা : পরবর্তী আঘলাবীয় শাসক ছিল দুর্বল প্রকৃতির। এটি আঘলাবীয় বংশের পতনের প্রধান কারণ | ছিল। প্রথম জিয়াদাতুলাহ-এর পরবর্তী যে সকল শাসক আঘলাবী রাজবংশ শাসন করেন তারা ছিলেন দুর্বল প্রকৃতির শাসক। যার জন্য তারা বহিঃশত্রুর হাত থেকে নিজেদের সাম্রাজ্য রক্ষা করতে পারেনি।
৭. ফাতেমীয়দের আক্রমণ : ফাতেমীয়দের আক্রমণ আঘলাবীয় বংশের পতনের জন্য অনেকটা দায়ী। কেননা ফাতেমীয়দের আক্রমণ প্রতিহত করার মতো সাহস আঘলাবীদের ছিল না।
সে কারণে ফাতেমীয় রাজবংশের আক্রমণে আঘলাবী শাসক আৰু সুজা সহ্য করতে না পেরে ৯০৯ খ্রিস্টাব্দে পলায়ন করে। যার ফলে আঘলাবী রাজবংশের পরিসমাপ্তি ঘটে।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আঘলাবী রাজবংশের প্রথম দিকের কয়েকজন শাসক ছিল তারা অত্যন্ত দক্ষ কূটকৌশলী ছিলেন। যার ফলে এই রাজবংশ এক শতাব্দীকাল পর্যন্ত টিকেছিল।
কিন্তু পরবর্তী শাসকদের অযোগ্যতা ও অদক্ষতার জন্য এই রাজবংশের পতন হয় ফাতেমীয়দের হাতে। এই সম্পর্কে ঐতিহাসিক Brockelmann বলেছেন- "From 800 on Africa under the rule of the Aghlabids was absoluttely." (History of the Islamic People-p-156)
আর্টিকেলের শেষকথাঃ আঘলাবী বংশের পতনের কারণ সংক্ষেপে বর্ণনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম আঘলাবী বংশের পতনের কারণ সংক্ষেপে বর্ণনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।