আব্দুল্লাহ বিন তাহির কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত তাহিরী বংশের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস লিখ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো আব্দুল্লাহ বিন তাহির কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত তাহিরী বংশের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস লিখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের আব্দুল্লাহ বিন তাহির কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত তাহিরী বংশের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস লিখ।
আব্দুল্লাহ বিন তাহির কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত তাহিরী বংশের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস লিখ |
আব্দুল্লাহ বিন তাহির কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত তাহিরী বংশের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস লিখ
উত্তর : ভূমিকা : আব্বাসীয় রাজবংশের ইতিহাসে পূর্বাঞ্চলের রাজবংশের মধ্যে তাহিরি রাজবংশ ছিল অন্যতম। এই রাজবংশ পারস্য কেন্দ্রীয় ছিল। ইরানের যে সকল সংস্কৃতি রয়েছে তা এই তাহিরি রাজবংশে প্রভাব ফেলে।
প্রবল পরাক্রমশালী আব্বাসীয় খলিফা আল মামুনের খিলাফতে এদের আগমন ও প্রতিষ্ঠা হলেও স্বীয় ক্ষমতা ও যোগ্যতার ফলে আব্বাসীয় সাম্রাজ্যে তারা প্রবল প্রভাব রাখতে সক্ষম হয়।
তারা খুতবায় নিজের নাম প্রবর্তন করে খুতবা পাঠ করে কিন্তু তারা শাসনের ব্যাপারে ছিল সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং অন্যান্য ব্যাপারে যেমন রাজস্ব, কর ইত্যাদি ব্যাপারে তারা আব্বাসীয় খিলাফতের উপর আনুগত্য প্রকাশ করে।
→ তাহিরিদের পরিচয় : তাহিরি রাজবংশ পারস্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তাহির ইবনে হুসাইন। তিনি ৮২০ সালে তাহিরি রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করেন । এই রাজবংশ ঈনের উত্তরাংশ তথা খোরাসান,
আফগানিস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান ইত্যাদি অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এই রাজবংশের রাজধানী প্রথমে মার্ভে ছিল পরবর্তীতে শাসকগণ নিশাপুরে রাজধানী স্থানান্তর করেন। এটি একটি স্বাধীন রাজবংশ ছিল 1
→ রাজবংশ প্রতিষ্ঠা : খলিফা মামুনের রাজত্বকালে তাহির ইবন-আল হুসাইন খোরাসানে খারিজী বিদ্রোহ দমন করে সমগ্র পারস্যে অঞ্চলে স্বীয় প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করেন। ৮২০ খ্রিস্টাব্দে পূর্বাঞ্চলীয় শাসককর্তা নিযুক্ত হয়ে মার্ভ হইতে স্বাধীনভাবে রাজত্ব করতে থাকেন।
খুত্বা হতে খলিফাদের নাম বাতিল করে নিজ নামে খুৎবা পাঠ করেন। তাঁর নামানুসারে এই রাজবংশের নামকরণ করা হয় তাহিরি রাজবংশ। তাহির নিজ নামে খুৎবা পাঠ করলেও খলিফা আল মামুনের প্রতি তিনি অনুগত ছিলেন।
১. তাহির ইবনে হুসাইন : তাহিরী বংশের প্রতিষ্ঠাতা তাহির ইবনে হুসাইন। তাহির ইবনে হুসাইন ছিলেন আব্বাসীয় খিলাফতের একজন জেনারেল এবং গভর্নর। তিনি ইরানের হিরাত প্রদেশের বুশানজ শহরের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ৭৭৫-৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
এটি ছিল প্রাচীন বিরাট শহরের একটি গ্রাম। তিনি ৮২২ খ্রিস্টাব্দে শুক্রবারের খুতবায় আল মামুনের পরিবর্তে নিজের নাম ঘোষণা দেন এবং সেই রাতে মৃত্যুবরণ করেন ।
২. তালহা ইবনে তাহির : তাহির ইবনে হুসাইনের পর ক্ষমতা গ্রহণ করেন তালহা ইবনে তাহির। খলিফা আল মামুন প্রথমত : আব্দুল্লাহ ইবনে তাহির খোরাসানীকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে আল জাজিরায় শত্রুদের সাথে সম্পর্ক থাকায় তার পরিবর্তে তালহা ইবনে তাহিরকে গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দান করেন । তিনি ৮২৮ খ্রিস্টব্দ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন ।
৩. আলী ইবনে তালহার : ৮২৮ সালে তালহা ইবনে তাহিরের ইন্তেকালের পর তার পুত্র আলী ইবনে তালহা তাহিরি রাজবংশের সিংহাসনে আরোহণ করেন। তার রাজত্বকালে বেশ কয়েকটি বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল যা তিনি কঠিন হস্তে দমন করেছিলেন। তবে নিশাপুরে একটি বিদ্রোহ দমন করতে গিয়ে তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হন।
৪. আব্দুল্লাহ ইবনে তাহির : ৮২৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে আব্দুল্লাহ ইবনে তাহির খোরাসানের আমৃত্যু গভর্নর ছিলেন। আব্দুল্লাহ ইবনে তাহির ছিলেন এই তাহিরি রাজবংশের সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক। | তিনি তার চাকরি জীবন শুরু করেন পিতা হুসাইনের সময় থেকে।
আমিন ও মামুনের যুদ্ধে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার মাধ্যমে তার পিতা আল জাজিরায় গভর্নর হন এবং শত্রু নাসির দিন সাবাহকে পরাজিত করেন। যার ফলে আন্দালুসিয়া, বাইজান্টাইন দখল করেন। তার পিতার মৃত্যু পর্যন্ত অত্যন্ত দক্ষতার সাথে গভর্নরের এর পদে দায়িত্ব পালন করেন ।
৫. তাহির বিন আব্দুল্লাহ : ৮৪৫ খ্রিস্টাব্দে পিতার মৃত্যুর পর তাহির বংশের পঞ্চম গভর্নর হিসেবে তাহির বিন আব্দুল্লাহ ক্ষমতা গ্রহণ করেন। তার পিতা মৃত্যুর সময়ে আব্বাসীয় খলিফা ছিলেন, আল ওয়াসিম, তিনি প্রকৃতপক্ষে তাহির দ্বিতীয়কে গভর্নর করতে ইচ্ছুক ছিলেন না তথাপি তার যোগ্যতা ও বাগ্মীকতা, মুগ্ধতায় খলিফা তাকে পরবর্তীতে শাসক নিয়োগ করেন ।
৬. মুহাম্মদ ইবনে তাহির খোর।গানী : তাহির দ্বিতীয়-এর সন্তান মুহাম্মদ ইবনে তাহির খোরাসানী তিনি পিতার মৃত্যুর পর গভর্নর নিযুক্ত হন এবং তাকে পরাজয়ের মাধ্যমে এই বংশের সলিল সমাধি | রচিত করেন সাফফারি বংশের প্রতিষ্ঠাতা ইয়াকুব ইবনে সাফফারি ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, তাহিরি রাজবংশের ৬ জন শাসকের কথা আমরা জানতে পারি তারা তাদের নিজ নিজ যোগ্যতার, দক্ষতা, বাগ্মীতা বলে আব্বাসীয় খলিফা তুর্ক গভর্নর নিযুক্ত হয়ে শাসনব্যবস্থার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত রচনা করেছেন তাহিরিদের শাসনকাল আব্বাসীয় খিলাফতের একটি গুরুত্বপূ অধ্যায়। কিন্তু পরবর্তীতে আব্বাসীয় খলিফাদের জন্য হুমকিস্বরূপ হওয়ার কারণে তাদের পতন সংগঠিত হয়েছে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ আব্দুল্লাহ বিন তাহির কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত তাহিরী বংশের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস লিখ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম আব্দুল্লাহ বিন তাহির কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত তাহিরী বংশের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস লিখ। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।