আব্বাসীয়দের পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে লেখ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো আব্বাসীয়দের পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে লেখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের আব্বাসীয়দের পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে লেখ ।
আব্বাসীয়দের পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে লেখ |
আব্বাসীয়দের পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে লেখ
উত্তর : আব্বাসীয় খলিফাদের বৈদেশিক নীতি ছিল সম্মান, শান্তি ও সুসম্পর্কের উপর নির্ভরশীল। আব্বাসীয় খলিফাগণ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নৃপতি বিশেষত ফান্সের সম্রাট শার্লিনের। চীনের সম্রাট ফাগফুর ও বাইজাইন্টাইন সম্রাট নাইসিফোরাসের সাথে বৈদেশিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল।
তবে বাইজান্টাইন সম্রাটের সাথে সম্পর্ক কিছুটা খারাপ হলেও অন্যান্য সম্রাটদের সাথে সম্পর্ক ভালো ছিল।
আব্বাসীয় আমলের পররাষ্ট্রনীতি : নিম্নে আব্বাসীয়দের পররাষ্ট্রনীতি বর্ণনা করা হলো :
১. বাইজাইন্টাইনদের সাথে সম্পর্ক : আমির আলি বলেন, আব্বাসীয় খলিফা হারুনুর রশীদের সাথে বাইজান্টাইনদের যুদ্ধবিগ্রহ তার রাজত্বকালের সর্বাপেক্ষা চমকপ্রদ ঘটনা। নিম্নে বাইজাইন্টাইনদের সাথে হারুনর রশীদের সম্পর্ক আলোচনা করা হলো :
(ক) পিতার আমলে বাইজাইন্টাইনদের সাথে সম্পর্ক : খলিফা আল মাহদীর শাসনামলে বাইজাইন্টাইন সম্রাট প্রথম কনস্টান্টাইন আর্মেনিয়া ও এশিয়া মাইনরের মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলে হঠাৎ হামলা চালালে যুবক হারুন পরাজিত হয়, কিন্তু এতে প্রচুর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
(খ) খলিফা হারুনের অভিযান : আব্বাসীয় খলিফা হারুনের সময়ে সাম্রাজ্য আইরিন কর প্রদান বন্ধ করে দিলে হারুন একটি বিশাল সৈন্যবাহিনী প্রেরণ করে আনসিরা ও ইফিসাস দখল করেন। পরবর্তীতে আইরিন করদানে স্বীকৃতি দিয়ে চার বছরের জন্য চুক্তি সম্পাদন করে।
(গ) নাইসিফোরাস ও হারুনের পত্র বিনিময় : বাইজাইন্টাইন সম্রাজ্ঞী আইরিনের কোষাধ্যক্ষ নাইসিফোরাস আইরিকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করেন এবং কোষাধ্যক্ষ নাইসিফোরাস অজ্ঞতার পরিচয় দিয়ে হারুনের নিকট অপমানজনক চিঠি দিলে উভয়ের মধ্যে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে নাইসিফোরাসকে দমনের জন্য হারুন সামরিক অভিযান প্ররণ করেন।
নাইসিফোরাস যুদ্ধে আহত হয়ে তিনটি ক্ষতচিহ্নে নিয়ে পলায়ণ করে। পরে করদানে সম্মতি দিয়ে সন্ধির প্রস্তাব দিলে হারুন আবেদন গ্রহণ করেন। কিন্তু কপটতার মূর্ত প্রতীক হিসেবে সে আবার চুক্তিভঙ্গ করলে হারুন তৃতীয়বার অভিযান প্রেরণ করলে যুদ্ধে পরাজয় হলে হারুন তার পরিবারের উপর মাথাপিছু ও অতিরিক্ত কর ধার্য্য করে দেন।
অবশেষে পরবর্তী আবার চুক্তি ভঙ্গ করলে হারুন রাজ্যের গোলযোগের কারণে চতুর্থ বার অভিযান প্রেরণ করে নি। অবশেষে ৮০৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি মৃত্যুবরণ করলে বিষয়টি অমিমাংশিত থেকে যায় ।
২. ফ্রান্সের শার্লিমেন এর সাথে আব্বাসীয়দের সম্পর্ক : আব্বাসীয় খলিফা হারুনুর রশীদের সুনাম বহিঃবিশ্বে ছড়িয়ে পড়লে ফান্সের নৃপতি শার্লিমেন তার সাথে বন্ধুত্বে লাভের জন্য বাগদাদে দূত পাঠান। এতে হারুন শার্লিমেন দূতকে সাদরে আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।
পরবর্তীতে গ্রিকদের দমন করার জন্য উভয়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নত করতে একত্রিত হতে হয় এবং শার্লিমেন ও হারুনের মধ্যে বন্ধুত্ব আরো অটুট হয়ে তারা একে অপরকে উপটোকন পাঠাতে থাকে।
৩. চীনা সম্রাটের সাথে সম্পর্ক : আব্বাসীয় খলিফা হারুনের যশ খ্যাতি বহিঃবিশ বিশেষ করে দূরপ্রাচ্যে ছাড়য়ে পড়লে চীনের সম্রাট ফাগফুর হারুনের উদ্দেশ্যে বাগদাদে দূত প্রেরণ করেন। হারুন চীনা দূতকে সাদরে গ্রহণ করে এবং উভয়ের মধ্যে | সুসম্পর্ককে তৈরি হয়।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, আব্বাসীয় খিলাফতের সময় বৈদেশিক সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ও শান্তি প্রবণ। বহিঃবিশ্বের বিভিন্ন দেশ খলিফাদের সুনামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বন্ধুত্বের হাত প্রসারিত করে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ আব্বাসীয়দের বৈদেশিক নীতি আলোচনা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম আব্বাসীয়দের বৈদেশিক নীতি আলোচনা কর। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।