ভাষা আন্দোলন কি | ভাষা আন্দোলনের কারণ ব্যাখ্যা কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো ভাষা আন্দোলন কি | ভাষা আন্দোলনের কারণ ব্যাখ্যা কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের ভাষা আন্দোলন কি | ভাষা আন্দোলনের কারণ ব্যাখ্যা কর ।
ভাষা আন্দোলনের কারণ ব্যাখ্যা কর |
ভাষা আন্দোলন কি | ভাষা আন্দোলনের কারণ ব্যাখ্যা কর
- ভাষা আন্দোলন কাকে বলে
- ভাষা আন্দোলন কী?
- অথবা, ভাষা আন্দোলন বলতে কি বুঝ ?
- অথবা, ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে ধারণা দাও ৷
- অথবা, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন কী?
- ভাষা আন্দোলন কি
- ভাষা আন্দোলনের কারণ ব্যাখ্যা কর
উত্তর : ভূমিকা : বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশের মূলে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে ধর্মভিত্তিক পাকিস্তানি জাতীয়তাবাদের পরিবর্তে ভাষাভিত্তিক বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রকাশ ঘটে। পূর্ব বাংলার জনগণের স্বাধিকার আন্দোলনের প্রথম বলিষ্ঠ পদক্ষেপই ছিল ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। ৫২-এর এ ভাষা আন্দোলন সারা বিশ্বের ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত ।
ভাষা আন্দোলন : পাকিস্তান সৃষ্টির পরপরই বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। ফলে বাঙালি জনগণ বিশেষ করে ছাত্র ও যুবসম্প্রদায় বাংলা ভাষা; সাহিত্য ও সংস্কৃতি রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এটাই 'ভাষা আন্দোলন' নামে খ্যাত ।
ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত : ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত হয় ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের ঘোষিত প্রতিবাদ দিবসে এ আন্দোলন তীব্রতর হয়ে উঠে এবং রক্তঝরার মাধ্যমে এ আন্দোলন বৈপ্লবিক আকার ধারণ করে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি। সাবেক পাকিস্তান গণপরিষদের বাংলা ভাষা বিরোধী সিদ্ধান্ত ও সরকারি দলের বাংলা ভাষা বিরোধী কার্যকলাপের ফলে ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত হয় ।
ভাষা আন্দোলনের পটভূমি : ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক জনসভায় মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা করেন, “উর্দু এবং উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা।” তার এ ঘোষণাই ভাষা আন্দোলনের ধূম্রজাল সৃষ্টি হয় এবং চারদিকে তীব্র প্রতিবাদের ঝড় উঠে। ১৯৫০ সালের মূলনীতি কমিটির রিপোর্টে পূর্ব পাকিস্তানি জনগণের প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি এবং ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের দাবি না থাকায় বাঙালি জনমত এর | প্রতি বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং তা প্রত্যাখ্যাত করে। ১৯৫২ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন আবারও ঘোষণা করেন যে, “উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এর প্রতিবাদে ছাত্র জনতা সমগ্র দেশব্যাপী ধর্মঘট আহ্বান করে এবং ধর্মঘটের প্রতি বিপুল জনসমর্থন পাওয়া যায়। এ অবস্থায় ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ পরিগ্রহ করলে তখনকার সরকার ভাষা আন্দোলনকে বানচাল করার জন্য এদেশের ছাত্রসমাজকে অস্ত্র ও গোলাবারুদের ভয় দেখায়। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সমগ্র ঢাকা নগরীতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। কিন্তু বাংলার নির্ভীক ও দামাল ছাত্রসমাজ ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে পড়ে। পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি অনুসারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলাভবন থেকে মিছিল বের হয়। কিন্তু কিছু দূর অগ্রসর হতে না হতেই মিছিলের উপর পাক পুলিশের নির্বিচার গুলিবর্ষণ শুরু হয়। ফলে ঘটনাস্থলেই শহিদ হন বরকত, সালাম, জব্বার ও রফিকসহ আরও নাম না জানা অনেকে। পশ্চিমা শাসকগোষ্ঠীর এ বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সারা বাংলায় বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠে এবং তারা এক প্রবল ও অপ্রতিরোধ্য আন্দোলন গড়ে তোলে। এর ফলে শুরু হয় মাতৃভাষার অধিকার আদায় ও বাঙালি জাতির অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম। এ আন্দোলনের তীব্রতায় পাকিস্তান সরকার বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্র ভাষা বলে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। এভাবে রক্তের বিনিময়ে বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা লাভ করে ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ‘১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন বিশ্বের ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা হিসেবে বিখ্যাত। সারাবিশ্বে ভাষার জন্য বাঙালিদের মতো আর কোনো জাতিকে এতো রক্ত দিতে হয়নি। এ জন্যেই বর্তমানে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা পেয়েছে। ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে যেমন অগ্রগামী আন্দোলন, তেমনি বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশে এটি একটি মাইলফলক।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ ভাষা আন্দোলন কি | ভাষা আন্দোলনের কারণ ব্যাখ্যা কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম ভাষা আন্দোলন কি | ভাষা আন্দোলনের কারণ ব্যাখ্যা কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ