উষ্ট্রের যুদ্ধ সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো উষ্ট্রের যুদ্ধ সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের উষ্ট্রের যুদ্ধ সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ টি।
উষ্ট্রের যুদ্ধ সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ |
উষ্ট্রের যুদ্ধ সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ
উত্তর : ভূমিকা : হযরত আলী (রা.)-এর খিলাফত আমলে | যে কয়েকটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল তার মধ্যে উষ্ট্রের যুদ্ধ অন্যতম । ইসলামের ইতিহাসে এটি প্রথম গৃহযুদ্ধ। এই যুদ্ধ ৬৫৬ সালে সংঘটিত হয়েছিল ।
উষ্ট্রের যুদ্ধের কারণ : চতুর্থ খলিফা হজরত আলী (রা.)-এর হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে এ যুদ্ধের প্রথম আলামত দেখা দেয়। হজরত আলী (রা.) খলিফা হওয়ার পরই তালহা (রা.) এবংযুবায়ের তার নিকট হজরত ওসমান (রা.)-এর হত্যার বিচারের দাবি করেন। কিন্তু প্রতিকূল অবস্থার জন্য হজরত আলী (রা.)-এর পক্ষে সে সময় ওসমান (রা.)-এর হত্যাকারীদের বিচার করা অসম্ভব ছিল। তাই তালহা ও যুবায়ের হজরত আলী (রা.)-এর প্রতি মনক্ষুণ্ণ হন। মহানবি (সা.)-এর স্ত্রী হজরত আয়েশা ও ওসমান (রা.)-এর হত্যার বিচার দাবি করেন। প্রতিকূল অবস্থার প্রেক্ষিতে এটা সম্ভব হবে না বলে হজরত আলী (রা.) মতামত ব্যক্ত করেন। ফলে হজরত আয়েশা ও আলীর প্রতি বিরূপ মনোভাবাপন্ন হন এবং খলিফা ওসমান (রা.)-এর হত্যাকারীদের শাস্তি প্রদানের উদ্দেশ্যেই ভালহা ও যুবায়েরের সাথে যোগদান করেন ।
→ যুদ্ধের ঘটনা : হজরত ওসমান (রা.)-এর হত্যাকারীদের শাস্তি বিধানের উদ্দেশ্যে মক্কা ও মদিনা হতে ৩ হাজার সৈন্যসহ তালহা ও যুবাইর বসরায় আগমন করে শহরটি দখল করেন। হজরত আয়েশা (রা.) বিদ্রোহীদের দলে যোগদান করেন। এরূপ অবস্থায় হজরত আলী (রা.) ২০ হাজার সৈন্যের এক বাহিনী নিয়ে বসরার দিকে রওয়ানা হন। হজরত আলী (রা.) বসরায় উপস্থিত হয়ে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন । কিন্তু বিদ্রোহীগণ নাশকতামূলক কার্যকলাপকে অব্যাহত রাখার জন্য ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দের ৯ ডিসেম্বর হজরত আলী (রা.)-এর অজ্ঞাতসারে বসরার উপকণ্ঠে কারবালা নামক স্থানে রাত্রির অস্ত্রকারে উভয় পক্ষের উপর আক্রমণ করে। এতে উভয় পক্ষ মনে করে যে, একপক্ষ অপর পক্ষকে আক্রমণ করেছে। হজরত আলী (রা.) অশ্বপৃষ্ঠে এবং হজরত আয়েশা উষ্টপৃষ্ঠে আরোহণ করে যুদ্ধক্ষেত্রে গমন করে যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানান। কিন্তু যুদ্ধ বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। বিবি আয়েশা উষ্ট্র পৃষ্ঠে আরোহণ করে যুদ্ধপরিচালনা করেন বলে এ যুদ্ধকে উষ্ট্রের যুদ্ধ বলা হয় ।
→ উষ্ট্রের যুদ্ধের ফলাফল : উষ্ট্রের যুদ্ধে তালহা ও যুবাইর আততায়ী কর্তৃক নিহত হন। হজরত আয়েশা (রা.) কে হজরত আলী (রা.)-এর ভ্রাতা মুহাম্মদ বিন আবু বকর (রা.)-এর পাহারাধীনে ৪০ জন মহিলাসহ সসম্মানে নিরাপদে মদিনার পাঠিয়ে দেন। এ যুদ্ধে উভয়পক্ষে প্রায় সাড়ে চার হাজার লোকের প্রাণহানি ঘটেছিল । এছাড়া উষ্ট্রের যুদ্ধের ফলে মক্কা, বসরা ও কুফার মুসলমানদের মধ্যে মতবিরোধের অবসান হয় এবং এই অঞ্চলে আলী (রা.)-এর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। হযরত আলী (রা.) বিদ্রোহ সমূলে ধ্বংস করার জন্য প্রশাসনিক ক্ষেত্রে রদবদল করেন। কায়েস ইবনে সাদকে মিসরে, সাহল ইবনে হানিফকে হিজাজে এবং আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাসকে বসরার শাসনকর্তা নিযুক্ত করা হয় ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, হজরত আলী (রা.)-এর খেলাফতকালে যে তিনটি গৃহযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল তার মধ্যে উষ্ট্রের যুদ্ধ সর্বপ্রথম মুসলিম গৃহযুদ্ধ। এ যুদ্ধেই প্রথম মুসলমানরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করেন এবং ভুল বোঝা বুঝির কারণে নিজেদের মধ্যে বিভেদ ও অনৈক্যের সৃষ্টি হয়।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ উষ্ট্রের যুদ্ধ সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম উষ্ট্রের যুদ্ধ সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ টি। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।