বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রচনা | বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রচনা
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রচনা | বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রচনা জেনে নিবো। তোমরা যদি বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রচনা | বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রচনা টি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রচনা | বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রচনা টি।
বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রচনা | বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রচনা |
বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রচনা
ভূমিকা: ২৬ মার্চ, ২০২১ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্ব মানচিত্রে নতুন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দিয়েছিল একটি ভূখণ্ড, যার নাম বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য সংগ্রাম করে যাওয়া ব্যক্তির নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস একটি ঐতিহাসিক ও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ দিবস। পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণের নাগপাশ থেকে নিজেদের মুক্ত করার জন্য এবং আপন পরিচয় খোঁজার নিমিত্তে বাঙালি গর্জে উঠেছিল। দীর্ঘদিনের শোষণ ও নিপীড়ন ভেঙে আবহমানকালের গৌরবময় সাহসিকতার ইতিহাস যেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল জাতির ভেতরে। তাই সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করে বাঙালি অর্জন করেছিল স্বাধীনতার সোনালি সূর্য। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা সমগ্র বাঙালি জাতিকে নিয়ে উদযাপন করলেন 'স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী'।
সুবর্ণজয়ন্তী কী: ‘সুবর্ণজয়ন্তী' মূলত কোনো ঘটনার ৫০ বছর পূর্তিকে নির্দেশ করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী বলতে স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছর পূর্তিকে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬শে মার্চ পর্যন্ত স্বাধীনতা ঘোষণার পঞ্চাশ বছর পূর্তিকে বোঝানো হয়েছে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন: ১৭ মার্চ, ২০২১ থেকে ২৬ মার্চ, ২০২১ পর্যন্ত ১০ দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিদ্যমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে দেশি-বিদেশি অতিথিরা অংশগ্রহণ করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে 'মুজিব চিরন্তন' প্রতিপাদ্যে ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানমালায় প্রতিদিন পৃথক থিমভিত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, অডিও ভিজুয়াল পী এবং অন্যান্য বিশেষ পরিবেশনার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন য়ে করা হয়। ১০ দিনের অনুষ্ঠানমালার থিমগুলো হলো— ১৭ মার্চ 'ভেঙেছ
দুয়ার এসেছো জ্যোতির্ময়', ১৮ মার্চ 'মহাকালের তর্জনী', ১৯ মার্চ 'যতকাল প্রায় রবে পদ্মা যমুনা', ২০ মার্চ 'তারুণ্যের আলোকশিখা', ২১ মার্চ 'ধ্বংসস্তূপে তি জীবনের গান', ২২ মার্চ 'বাংলার মাটি আমার মাটি', ২৩ মার্চ 'নারীমুক্তি, এটি সাম্য ও স্বাধীনতা', ২৪ মার্চ 'শান্তি-মুক্তি ও মানবতার অগ্রদূত', ২৫ মার্চ াই ‘গণহত্যার কালরাত্রি ও আলোকের অভিযাত্রা' এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতার দি পঞ্চাশ বছর ও অগ্রগতির সুবর্ণরেখা'। এই আয়োজনে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও এবং সরকার প্রধানগণ সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। প্রণ অতিথিরা হলেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ্, শ্রীলংকার বং প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজা পাকসে, নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারী, 2. ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং এবং ২৬ মার্চ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী - নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিদে সুগা ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশকে শুভেচ্ছায় সিক্ত করেছেন। তাঁরা অভিনন্দিত করেছেন বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রাকে। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সীমিত আকারে ৫০০ জন আমন্ত্রিত অতিথি উপস্থিত ছিলেন । এছাড়াও অনুষ্ঠানমালায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার প্রধান, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ধারণকৃত বক্তব্য প্রদর্শন করা হয়। প্রত্যেক দিনের অনুষ্ঠান টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। শুধু বাংলাদেশে নয় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে উৎসব উদযাপিত হয় বিশ্বের নানা প্রান্তে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অবস্থিত বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন বুর্জ আল খলিফায় আয়োজন করা হয় ঘণ্টাব্যাপী ছবি প্রদর্শন ও আলোকসজ্জার ।
বঙ্গবন্ধু টানেল স্থাপনের মতো মেগা প্রকল্পের কাজ এক যোগে চলছে সম্পন্ন হয়েছে প্রমত্তা পদ্মা নদীর ওপর স্বপ্নের পদ্মাসেতু নির্মাণের কাজ। পাশাপাশি চলছে মহাসড়কগুলো প্রশস্তকরণের কাজ। এসব কর্মযজ্ঞ বাংলাদেশকে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
আগামীর সম্ভাবনা: বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে। তবে এখানেই শেষ নয়, ‘ভিশন-২০৪১'-এর মাধ্যমে আমরা আধুনিক ও উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। এ সবকিছুই সম্ভব হবে যদি দেশের বিশাল জনসংখ্যা জনশক্তিতে রূপান্তরিত হয়। আজ আমাদের মাথাপিছু আয় ২,২২৭ ডলার। আমাদের রয়েছে ক্রমবর্ধমান জিডিপি, যা এদেশকে খুব শীঘ্রই উন্নত দেশের কাতারে দাঁড় করাবে। কৃষি ও শিল্পের ক্রমাগত উন্নয়নের মাধ্যমে আমদানি হ্রাস করে রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা একসময় স্বনির্ভর, সুখী-সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে বিশ্বে আত্মপ্রকাশ করব।
সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ: আগামীতে বাংলাদেশের যেমন রয়েছে নানাবিধ সম্ভাবনা; তেমনি আমাদের সম্মুখীন হতে হবে নানা চ্যালেঞ্জের। এসবের মধ্যে 'অন্যতম হলো— দুর্নীতিকে সমূলে উৎপাটন, এসডিজি অর্জন, নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি, পরিবেশদূষণ রোধ, মাদকমুক্ত দেশ গড়া, ভূমিকম্প ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে দেশকে রক্ষা করা, কার্যকর শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন, সুনাগরিক গড়ে তোলা, দেশের সর্বস্তরের প্রযুক্তিগত শিক্ষা যুগোপযোগী করা, বেকারত্ব নির্মূল, নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র গড়ে তোলা, দক্ষ ফ্রিল্যান্সার গড়ে তুলতে দেশের সর্বত্র কার্যকর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা প্রভৃতি। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা যদিও কঠিন, তবুও তা অসম্ভব নয়; দরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ।
জাতীয় জীবনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রভাব: স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন জাতির মাঝে দেশপ্রেমের সঞ্চার ঘটায়। দেশের মানুষ নতুন করে লাভ করে সঞ্জীবনী শক্তি। আর সুবর্ণজয়ন্তী হলো স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরের এক মাইলফলক। এটি দেশের মানুষের মনে আরও কার্যকর প্রভাব রাখতে সক্ষম। কাজেই বলা যায় জাতীয় জীবনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রভাব সুদূরপ্রসারী ।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: ২০২০ সালের ১৭ মার্চ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ পূর্ণ হয়। ২০২১ সালের ২৬শে মার্চ পূর্ণ হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর। কাজেই দুটি তাৎপর্যময় ঘটনা বাঙালি জাতির কাছে নিয়ে আসে উৎসবের উপলক্ষ। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ যে একে অপরের পরিপূরক তা প্রকাশ করতেই যেন দিবস দুটির সহাবস্থান।
উপসংহার: নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জন্ম নিয়েছে বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্র। ত্রিশ লক্ষ শহিদ ও দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। কাজেই স্বাধীনতার এই পঞ্চাশ বছর পূর্তি আমাদের জীবনে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। করোনা মহামারির প্রকোপে আমাদের এই উৎসব ব্যাপকভাবে উদ্যাপনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলেও বাঙালির প্রাণের আবেগকে দমাতে পারেনি। তাই বিরূপ পরিবেশের মধ্যেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এদেশবাসীর কাছে এক মহা -আনন্দের উৎস হয়ে উঠেছে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রচনা | বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রচনা
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রচনা | বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রচনা টি। যদি তোমাদের আজকের এই বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রচনা | বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী রচনা টি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।