সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ৫টি দাবি উল্লেখ কর
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ৫টি দাবি উল্লেখ কর জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ৫টি দাবি উল্লেখ কর ।
সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ৫টি দাবি উল্লেখ কর |
সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ৫টি দাবি উল্লেখ কর
- অথবা, সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ বলতে কি?
- অথবা, ১৯৬৯ সালের ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ সম্পর্কে কি জান?
- অথবা, ১৯৬৯ সালের ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ সম্পর্কে একটি টীকা লিখ ।
উত্তর : ভূমিকা : পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাসে ছাত্রদের ১১ দফা দাবি বা কর্মসূচি এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এগারো দফা ছিল ছাত্রসমাজের গৃহীত রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মসূচি। এ কর্মসূচি ১৯৬৮-৬৯ সালের গণ- অভ্যুত্থানে এক বিরাট ভূমিকা পালন করে। পরবর্তীকালে তা ছয় দফা কর্মসূচির সাথে মিলিতভাবে বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি ও স্বাধিকার আন্দোলনকে উৎসাহিত করে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১১ দফা : সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ১৯৬৯ সালের ৫ জানুয়ারি ১১ দফা দাবি সংবলিত একটি দাবি ঘোষণা করে। এর মধ্যে ৫টি দাবি আলোচনা করা হলো।
১. সচলে কলেজসমূহৰে৷ প্রাদেশিকীকরণের নীতি পরিত্যাগ করতে হবে। শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের জন্য সর্বত্র বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে স্কুল কলেজ স্থাপন করতে হবে এবং বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত স্কুল কলেজসমূহকে অতিসত্বর অনুমোদন দিতে হবে। ছাত্রদের বেতন শতকরা ৫০ ভাগ হ্রাস করতে হবে।
হল, হোস্টেলের ডাইনিং হল ও ক্যান্টিন খরচের শতকরা ৫০ ভাগ সরকার কর্তৃক সাবসিডি হিসেবে প্রদান করতে হবে। মাতৃভাষার মাধ্যমে সর্বস্তরে শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। অফিস আদলতে বাংলা ভাষা চালু করতে হবে। নারী শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটাতে হবে। ট্রেন, স্টিমার ও লঞ্চে ছাত্রদের পরিচয়পত্র দেখিয়ে শতকরা ৫০ ভাগ কনসেশনে টিকেট দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। চাকরির নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। কুখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স বাতিল করতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দিতে হবে।
২. পর্ব পাকিস্তানের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন প্রদান করতে হবে। দেশের শাসনতান্ত্রিক কাঠামো হবে ফেডারেশন শাসনতান্ত্রিক রাষ্ট্রসংঘ এবং আইন পরিষদের ক্ষমতা সার্বভৌম হবে। ফেডারেল সরকারের ক্ষমতা, দেশ রক্ষা, বৈদেশিক নীতি ও মুদ্রা এই কয়টি বিষয় সীমাবদ্ধ থাকবে। অন্যান্য সব বিষয়ে অঙ্গরাষ্ট্রগুলোর ক্ষমতা হবে নিরঙ্কুশ। দুই অঞ্চলের জন্য একই মুদ্রা থাকবে। এই ব্যবস্থায় মুদ্রা কেন্দ্রের হাতে থাকবে কিন্তু শাসনতন্ত্রে এমন বিধান থাকতে হবে যাতে পূর্ব পাকিস্তানের মুদ্রা পশ্চিম পাকিস্তানের পাচার না হয়ে যায়। এ বিধান অনুসারে পাকিস্তানে একটি ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থাকরে। দুই অঞ্চলে দুটি পৃথক রিজার্ভ ব্যাংক থাকবে এবং পূর্ব পাকিস্তানে জন্য পৃথক অর্থনীতি প্রবর্তন করতে হবে। সকল প্রকার ট্যাক্স, খাজনা, কর ধার্য ও আদায়ে ক্ষমতা থাকবে আঞ্চলিক সরকারের হাতে। ফেডারেশনের প্রতিটি রাষ্ট্র বহির্বাণিজ্যের পৃথক হিসাব রক্ষা করতে এবং বহির্বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্জিত মুদ্রা অঙ্গরাষ্ট্রগুলোর এখতিয়ারাধীন থাকবে। পূর্ব পাকিস্তানকে মিলিশিয়া বা প্যারামিলিটারি রক্ষীবাহিনী গঠনের ক্ষমতা দিতে হবে।
৩. প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটাধিকার ও সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বাক স্বাধীনতা হতে, ব্যক্তি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হতে এবং দৈনিক ইত্তেফাকের উপর হতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে।
৪. ব্যাংক বিমা, পাট ব্যবসায় ও বৃহৎ শিল্পকারখানাগুলোর জাতীয়করণ করতে হবে।
৫.পূর্ব পাকিস্তানের বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং জল সম্পদের পূর্ণ সদ্ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে হবে।
উপসংহার : আলোচ্য আলোচনা শেষে বলা যায় যে, ১৮৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান এবং ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামে হাত্রদের ১১ দফা দাবির গুরুত্ব ছিল সুদূরপ্রসারী। এ ১১ দফা কর্মসূচি পূর্ববাংলার আপামর জনগণের মধ্যে নবচেতনা সৃষ্টি করে এবং তাদেরকে জাতীয়বাদে উদ্বুদ্ধ করে তোলে। এর ফলে বাঙালি জাতি আইয়ুব সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত হয় এবং আইয়ুব সরকারের পতন ঘটাতে সক্ষম হয় ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ৫টি দাবি উল্লেখ কর
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ৫টি দাবি উল্লেখ কর । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।