নজরুল জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে প্রতিবেদন
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো নজরুল জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে প্রতিবেদন জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের নজরুল জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে প্রতিবেদন টি।
নজরুল জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে প্রতিবেদন |
নজরুল জয়ন্তী উপলক্ষ্যে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের বিবরণ দিয়ে একটি প্রতিবেদন রচনা করো
নজরুল জয়ন্তী উদযাপন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ঢাকা ॥ ২৮ মে, ২০২২ ॥ গত ২৪ মে, ২০২২ ছিল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জয়ন্তী। এ উপলক্ষ্যে নটরডেম কলেজ মিলনায়তনে সেমিনার, আবৃত্তি ও নজরুলসংগীতের আয়োজন করা হয়। কলেজ অধ্যক্ষ মহোদয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মহোদয়। বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি নির্মলেন্দু গুণ ও কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন ।
আলোচনায় অংশ নেন কবি আসাদ উল্লাহ, কবি রোকসানা আফরীন, বাংলা বিভাগের প্রভাষক মো. আবুল কাশেম প্রমুখ। প্রধান অতিথির ভাষণে ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, 'নজরুলের কবিতা বিশৃঙ্খল নয় বরং তা সাধনালব্ধ। কবিতাই তাঁর নন্দনতাত্ত্বিক পরিমাপের একান্ত উপকরণ। নজরুলের বহুখ্যাত অভিধা 'বিদ্রোহী'। তাঁর বিদ্রোহ চিহ্নিত হয়েছে সামাজিক ও রাজনৈতিক বিদ্রোহ হিসেবে। পাশাপাশি, তাঁর বিদ্রোহ বিষয়ানুগ ও প্রেরণাদায়ী। তিনি আরও বলেন, 'নজরুল এমন একটি কাব্যভাষা নির্মাণ করেছিলেন যা তাঁর অন্তপ্রবাহী বিষয়ের প্রায় অবিকৃত গঠনভঙ্গির প্রতিনির্মাণ। "বিদ্রোহী'র নির্মাণ নকশাও অসাধারণ। তাঁর কোনো প্রতিপক্ষ এখন পর্যন্ত নেই, ভবিষ্যতে থাকবে বলেও মনে হয় না। নজরুল আমাদের জাতিসত্তার উৎসমূলে নিহিত রয়েছেন বলেই তিনি আমাদের জাতীয় কবি। তাঁর কবিতা, সংগীত, গদ্যরচনা বাংলাসাহিত্য ও সংস্কৃতিতে নতুন চলমানতা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ অতিথি কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেন, 'মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় নজরুলের অবদান অনস্বীকার্য। সামাজিক ভণ্ডামির বিশাল ছদ্মবেশ ছিঁড়ে নজরুল মানুষের সার্বিক মুক্তি ঘটাতে চেয়েছিলেন। মানুষকে দানবদৃষ্টির কবল থেকে রক্ষা করার জন্য নজরুল তাঁর কবিখ্যাতিকে, শিল্পের সুষমাকে, অমর হওয়ার সৌভাগ্যকে নির্দ্বিধায় বিসর্জন দিতেও কুণ্ঠিত ছিলেন না। নজরুলের কবিতা ও সংগীতে এ সত্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে যে, শাসক ও শোষক শ্রেণির লোভ মানুষের অধিকার, বিবেক, জ্ঞান ও উপচিকীর্ষা হরণ করছে। সেই লুণ্ঠিত অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন তিনি।' তিনি আরও বলেন, 'নজরুলের কবিতার প্রতি পাঠকের সমর্থন তাঁর জীবিতকালেই এসেছে অজস্র ধারায়। সেই সঙ্গে তাঁর কবিতার প্রতি কটূক্তিও কম হয়নি। এ প্রশংসা ও প্রতিবাদ, অভিনন্দন ও তিরস্কার তাঁর কবিতার স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, 'নজরুলের কবিতায় রয়েছে আত্মসম্বোধন ও আত্মঘোষণা। নজরুলের কবিতার বলিষ্ঠতা তাঁর স্বকীয়তা ও শক্তিকে প্রমাণ করেছে। তাঁর কবিতায় রয়েছে চড়া গলায় রাজনৈতিক বক্তৃতার ঢং। এর মধ্য দিয়েই নজরুলের কবি ব্যক্তিত্বের ও কবিতার চারিত্র্যের সন্ধান করা যেতে পারে।' তিনি আরও বলেন, ‘কাজী নজরুল ইসলাম রুপার চামচ মুখে দিয়ে না জন্মালেও সোনার কাঠি হাতে নিয়ে এসেছিলেন । যার প্রমাণ আমরা পাই তাঁর সৃষ্ট সাহিত্যে, সংগীতে। সোনার কাঠি দিয়ে তিনি দেশের মানুষকে জাগাতে চেয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন জাগ্রত মানুষ গড়ে তুলুক শ্রীমণ্ডিত দেশ এবং সেই সঙ্গে জাতি হয়ে উঠুক শক্তিমান।' তিনি আরও বলেন, 'নজরুলের কবিতা ও গানে ছড়িয়ে আছে যে জীবনবোধ, তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে না পারলে আমরা সবল জাতি হয়ে উঠব না। এ সহজ সত্যটি আমাদের স্বীকার করে নিতেই হবে। প্রাণবান জাতির স্বপ্ন তিনি আমাদের দেখিয়েছেন। নজরুল জয়ন্তী তাই আমাদের প্রাণের মিলন উৎসব।'
আসাদ উল্লাহ বলেন, ‘নজরুল নিজে আত্ম-অনুশীলনে ব্রতী এবং পাঠক কবির এ আত্ম-অভিজ্ঞানের প্রবহমানতা লাভ করেছে।'
রোকসানা আফরীন বলেন, 'নজরুলের কবিতায় রয়েছে 'Hero worship' বা 'বীরপূজা।'
এরপর সভাপতির ভাষণে কলেজ অধ্যক্ষ জনাব কামরুন ইসলাম বলেন, 'নজরুলের কবিসত্তা সময়ের দাবিতেই আমাদের জন্য প্রেরণার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
সেমিনার শেষে বিশিষ্ট আবৃত্তিকার শফি কামাল নজরুলের কবিতা আবৃত্তি করেন। অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষণ ছিল প্রখ্যাত নজরুল সংগীত শিল্পী শবনম মুশতারীর একক নজরুলসংগীত সন্ধ্যা।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ নজরুল জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে প্রতিবেদন
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম নজরুল জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে প্রতিবেদন টি। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।