মাওয়ালি কারা | মাওয়ালি শব্দের অর্থ কি | মাওয়ালি কাদের বলে | মাওয়ালি কি
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো মাওয়ালি শব্দের অর্থ কি | মাওয়ালি কাদের বলে | মাওয়ালি কি জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের মাওয়ালি কারা টি।
মাওয়ালি কারা |
মাওয়ালি শব্দের অর্থ কি | মাওয়ালি কাদের বলে | মাওয়ালি কি
উত্তর : ভূমিকা : হজরত মুহাম্মদ (সা.) ও খোলাফায়ে রাশেদীনের আমলে মাওয়ালিরা ইসলামের পূর্ণ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতো। কিন্তু ইসলামি খিলাফতের পতনের পর উমাইয়া বংশ প্রতিষ্ঠিত হলে তারা মাওয়ালিদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। উমাইয়ারা মাওয়ালিদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ শুরু করলে মাওয়ালিরা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। যা পরবর্তীতে উমাইয়া বংশ পতনে সাহায্য করে।
→ মাওয়ালিদের পরিচয় : মাওয়ালি শব্দটি বহুবচন। একবচনে মাওলা । এর অর্থ অভিভাবক বা আশ্রিত ব্যক্তি । প্রাচীন আরব সমাজে আশ্রিত জনগোষ্ঠীকে মাওয়ালি বলা হতো। কিন্তু পরবর্তীতে বিজিত অঞ্চলের নওমুসলিমরাও মাওয়ালির অন্তর্ভুক্ত হয়। মাওয়ালিরা প্রথমদিকে কোনো আরব গোত্রের সাথে একত্রিত হয়ে বসবাস করতো। কিন্তু পরবর্তীতে মাওয়ালিদের সংখ্যা অত্যধিক বেড়ে গেলে গোত্রভিত্তিক প্রথার পরিবর্তে তারা সাধারণ মাওয়ালির মর্যাদা লাভ করে। ইসলামের প্রথমদিকে মাওয়ালিদেরকে উঁচু মর্যাদা দেওয়া হতো। কিন্তু পরবর্তীতে ইসলামের সীমা আরব পেরিয়ে বহির্বিশ্বে প্রসার লাভ করে। ফলে আরবের বাইরে অনারব মুসলমানদের মাওয়ালি বলা হতো। এ সময় গোত্রীয় মাওয়ালির পরিবর্তে মাওয়ালি আল ইসলাম বা ইসলামের মাওয়ালি হিসেবে পরিচিত লাভ করে। ঐতিহাসিক শেখ লুৎফর রহমান তার “ইসলামি রাষ্ট্র ও সমাজ " গ্রন্থে তিন প্রকার মাওয়ালির কথা বলেছেন। যথা-
১. ইসলামের প্রাথমিককালে আরবদের মধ্যে গোত্রীয় যুদ্ধ সংগঠিত হতো। এ গোত্রীয় যুদ্ধে পরাজিত গোত্রের বন্দিরা বিজিতদের অধীনে চলে আসে। তাদের মুক্তির শর্ত ছিল, তারা আরবের কোনো গোত্রের সাথে বসবাস করতে পারবে, কিন্তু দেশে ফিরে যেতে পারবে না। সাধারণত যে যে গোত্রের অধীনে থাকতো তাকে সে গোত্রের মাওয়ালি বলা হতো ।
২. অনেক সময় মুক্তিপ্রাপ্ত কোনো দাস তার মনিবের আশ্রয়ে থেকে যেতো। তখন তাকে ঐ পরিবারের মাওয়ালি হিসেবে বিবেচনা করা হতো।
৩. কোনো আগন্তুক যদি আরবের কারো বাড়িতে আশ্রয় নিতো এবং উক্ত পরিবারে থেকে যেতো। তবে তাকে ঐ পরিবারের মাওয়ালি হিসেবে গণ্য করা হতো। আর এ ধরনের মাওয়ালিকে ‘মাওয়ালি আদ্-দাখিল' বলা হতো ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, ইসলামের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সাম্রাজ্য বিস্তারে মাওয়ালিদের অবদান চিরস্মরণীয়। কিন্তু উমাইয়াদের নির্যাতনের শিকার হয়ে মাওয়ালিদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। তাই মাওয়ালিরা উমাইয়াদের পতনে আব্বাসী আন্দোলনে যোগদান করে এবং উমাইয়াদের পতন ঘটিয়ে আব্বাসীয় বংশ প্রতিষ্ঠা করতে সহায়তা করে। কিন্তু তার পরও মাওয়ালিদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ মাওয়ালি শব্দের অর্থ কি | মাওয়ালি কাদের বলে | মাওয়ালি কি
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম মাওয়ালি কারা টি। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।