খলিফা আবুল আব্বাস কে ছিলেন | খলিফা আবুল আব্বাসের পরিচয়
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো খলিফা আবুল আব্বাস কে ছিলেন জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের খলিফা আবুল আব্বাস কে ছিলেন।
খলিফা আবুল আব্বাস কে ছিলেন |
খলিফা আবুল আব্বাস কে ছিলেন | খলিফা আবুল আব্বাসের পরিচয়
উত্তর : ভূমিকা : প্রথম আব্বাসীয় খলিফা ছিলেন আবুল আব্বাস আস সাফফাহ ইবনে মুহাম্মদ। তিনি ছিলেন একজন ন্যায়পরায়ণ শাসক। তার রাজত্ব ছিলো নৃশংসতা ও রাহাজানিতে ভরপুর। তিনি যে-কোনো বিদ্রোহ কিংবা অন্যায় দমন করতেন অত্যন্ত সতর্কতার সাথে।
→ আবুল আব্বাসের পরিচয় : নিম্নে আবুল আব্বাসের পরিচয় তুলে ধরা হলো :
১. প্রাথমিক পরিচয় : আব্বাসীয় বংশের প্রথম খলিফা আবুল আব্বাস আস সাফফাহ মহানবি (সা.)-এর চাচা আল আব্বাসের বংশধর ছিলেন। তার পিতার নাম ছিল ইবনে আব্বাস আব্দুল মুত্তালিব। তিনি উমাইয়াদের অধার্মিকতার বিরুদ্ধে আক্রমণ করে ৭৪৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার ইব্রাহিম ও জাফর নামে দুই ভাই ছিল ।
২. সিংহাসন আরোহণ : জাবের যুদ্ধে ৭৫০ খ্রিস্টাব্দে উমাইয়া খলিফা দ্বিতীয় মারওয়ানকে পরাজিত করে তিনি ন্যায়ভিত্তিক খিলাফতের সূচনা করেন । তিনিই ছিলেন আব্বাসীয়দের মধ্যে প্রথম খলিফা।
৩. আস-সাফফাহ উপাধি গ্রহণ : জাবের যুদ্ধে পরাজিত উমাইয়াদের প্রতি প্রতিহিংসা বশত তিনি নির্বিচারে উমাইয়াদের হত্যা করেন। মিশরের বুশির নামক স্থানে ৭৫০ খ্রিস্টাব্দে উমাইয়া খলিফা দ্বিতীয় মারওয়ান বন্দির পর তাকে হত্যা করে তার ছিন্ন মাথা আবুল আব্বাসের সামনে আনলে তিনি গর্বের সাথে “আস-সাফফাহ বা রক্ত পিপাসু” এই উপাধি গ্রহণ করেন।
৪. রাজধানী প্রতিষ্ঠা : খলিফা আবুল আব্বাস আস-সাফফাহ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে কুফা হতে আল-হাশিমিয়ার রাজধানী স্থানান্তর করেন।
৫. বিদ্রোহ দমন : আব্বাসীয় শাসন প্রতিষ্ঠার পর ইরাকে উমাইয়া রাজ প্রতিনিধি ইয়াজিদ ইবনে হুরাইরা বিদ্রোহ করলে খলিফার আদেশে সেনাপতি আসান ইবনে কাহতাব এবং খলিফার ভ্রাতা আবু জাফর ইয়াজিদকে পরাজিত ও হত্যা করে বিদ্রোহ দমন করেন।
৬. শাসনব্যবস্থা : কঠোর হস্তে বিদ্রোহ দমনের পর খলিফা আবুল আব্বাস শাসনব্যবস্থার পুনর্বিন্যাস করেন। আবু সালামা সাল্লালকে হত্যার পূর্বে উজিরের পদ দান করেন। খালিদ ইবনে বার্মাককে অর্থমন্ত্রী ও উত্তরাধিকারী আবু জাফরকে ইরাক, আর্মেনিয় ও আজারবাইজানকে প্রাদেশিক শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন। এছাড়া পিতৃব্য দাউদ ইবনে আলীকে হেজাজের ও আবদুল্লাহ ইবনে আলীকে সিরিয়ার শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন এবং আবু মুসলিমকে খোরাসানের সেনাপতি আয়ুনকে মিশরের শাসনকর্তা হিসেবে নিযুক্ত করেন।
৭. চরিত্র : নিষ্ঠুরতা থাকা শর্তেও তিনি একজন সৎ ও ন্যায়পরায়ন শাসক ছিলেন। প্রজাকল্যাণ ছিলো তার মহান ব্রত। তার পুত্র থাকা শর্তেও নিজ ভাই আবু জাফরকে উত্তরাধিকারী মনোনীত করে এক উদার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
৮. মৃত্যু : ৭৫৪ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে বসন্তরোগে আক্রান্ত হয়ে হীরার নিকটবর্তী আম্বর নামক স্থানে তিনি মৃত্যুবরণ করেন । তিনি প্রায় সাড়ে চার বছর রাজত্ব করেন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, প্রথম আব্বাসীয় খলিফা হিসেবে তার রাজত্বকাল দুর্যোগপূর্ণ থাকা শর্তেও ছিলো বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। তিনি ইসলামের ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা গৌরবোজ্জ্বল ও দীর্ঘতম রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ইতিহাসে তার নাম স্মরণীয় হয়ে আছে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ খলিফা আবুল আব্বাস কে ছিলেন
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম খলিফা আবুল আব্বাস কে ছিলেন। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।