কারবালার মর্মান্তিক ঘটনা ব্যাখ্যা করো
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো কারবালার হত্যাকান্ড সম্পর্কে যা জান লিখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের কারবালার হত্যাকান্ড সম্পর্কে যা জান লিখ টি।
কারবালার মর্মান্তিক ঘটনা ব্যাখ্যা করো
উত্তর : ভূমিকা : ইমান হাসানের সহিত চুক্তি ভঙ্গ করে মুয়াবিয়া স্বীয় পুত্র ইয়াজিদকে ৬৭৯ খ্রিস্টাব্দে উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন। ফলে ৬৮০ খ্রি. মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পর পুত্র ইয়াজিদ সিংহাসনে আরোহণ করেন। ইয়াজিদের খেলাফতের সময়কালে তিনটি কলঙ্কজনক অধ্যায় রয়েছে। যথা- প্রথম বছর কারবালার হত্যাকাণ্ড, দ্বিতীয় বছর মদিনা লুণ্ঠন এবং তৃতীয় বছর কাবা গৃহের ধ্বংস সাধন ।
→ কারবালার হত্যাকাণ্ড : কারবালার হত্যাকাণ্ড ইসলামের ইতিহাসে একটি জঘন্যতম ঘটনা। এটি মুসলমানদের ঐক্যকে। ধ্বংস করে দিয়েছে। নিম্নে কারবালা হত্যাকাণ্ডের কারণ, ঘটনা ও ফলাফল আলোচনা করা হলো:
কারবালা হত্যাকাণ্ডের কারণ : কারবালা হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ ছিল হাসানের সাথে মুয়াবিয়ার সন্ধিচুক্তি ভঙ্গ। মুয়াবিয়ার মনোনয়ন অনুসারে ইয়াজিদ ৬৮০ খ্রিস্টাব্দে উমাইয়া খিলাফতে আরোহণ করেন। মুয়াবিয়া কর্তৃক মদিনার পরিবর্তে দামেস্কে রাজধানী স্থাপন করলে হেজাজ অপেক্ষা দামেস্কের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। মদিনার ধর্মভীরু লোকেরা উমাইয়াদের অনাচার ও অনুদার মনোভাবের তীব্র নিন্দা করেন। ইয়াজিদ ছিলেন কপটতা, বিশ্বাসঘাতক ও নৃশংসতার অধিকারী। কারবালার যুদ্ধের অপর একটি কারণ কুফাবাসীদের কপটতা, বিশ্বাসঘাতকতা ও ষড়যন্ত্রমূলক কার্যাবলি। ইমাম হুসাইন স্বীয় চাচাত ভাইমুসলিমকে কুফার পরিস্থিতি যাচাই করার জন্য কুফায় প্রেরণ করেন। মুসলিম ওবায়দুল্লাহ কর্তৃক নিহত হন। কুফাবাসীগণ ইমাম হুসাইনকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও ইয়াজিদের পক্ষ অবলম্বন করে। ইমাম হুসাইন কুফাবাসীদের বিশ্বাসঘাতকতার ব্যাপারে কিছুই জানতেন না ।
কারবালা হত্যাকাণ্ডের ঘটনা : ইমাম হুসাইন কুফাবাসীদের সাহায্যে আশ্বস্ত হয়ে ৬৮০ খ্রি. কুফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। ওবায়দুল্লাহ হুসাইন ও তার পরিবারকে অবরুদ্ধ করে । ওবায়দুল্ল- হি তাদেরকে ফোরাত নদীর পানি থেকে বঞ্চিত করলে হুসাইনের শিবিরে পানির জন্য হাহাকার পড়ে যায়। ১০ই মহররম যুদ্ধ আরম্ভ হয়। ভ্রাতুষ্পুত্র কাশেম প্রথমে শাহাদাত বরণ করেন। পরে পিপাসার্ত ইমাম হুসাইন পুত্র আসগরকে নিয়ে ফোরাত নদীতে পানি পানের জন্য অগ্রসর হলে শত্রুরা শরবিদ্ধ করে। শত্রুদের অপর একটি শরের আঘাতে তার বক্ষ বিদীর্ণ হয়ে যায় । নিষ্ঠুর ও পাপিষ্ঠ সীমার হুসাইনের মস্তক ছিন্ন করে এবং ১০ই মহররম তিনি শাহাদত বরণ করেন। একমাত্র পুত্র জয়নুল আবেদীন ব্যতীত পরিবারের সকল পুরুষই শহিদ হন। ঐতিহাসিক গীবন বলেন, “সেই দূরবর্তী যুগেও আবহাওয়া হুসাইনের মৃত্যুর শোকাবাহ দৃশ্য কঠিনতম পাঠকের অন্তরের সমবেদনা সঞ্চার করবে।
”কারবালা হত্যাকাণ্ডের ফলাফল : কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার ফলাফল ছিল সুদূরপ্রসারী। এ ঘটনার ফলে মুসলিম জগৎ দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়ে। উমাইয়া ও হাশেমীয় দ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণ করে। মক্কা মদিনা সর্বত্র ইয়াজিদ বিরোধী বিদ্রোহ শুরু হয়। কারবালার হত্যাকাণ্ডের ফলে ইসলামি খিলাফতের বিলুপ্তি ঘটে এবং রাজতন্ত্রের সূচনা হয়। বিশেষ করে এ হত্যাকাণ্ডের ফলে শিয়াদের উদ্ভব হয় এবং শিয়া সুন্নি দ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণ করে। এছাড়াও এছাড়াও পারস্যে জাতীয়তাবাদের উন্মেষ হয়। ঐতিহাসিক মুইর বলেন, “কারবালার বিয়োগান্তক ঘটনা এবং কেবল খিলাফতের ভাগ্যই নির্ধারণ করে না। ইহা খিলাফতের ধ্বংসের অনেক পরে মুসলিম জাহানের ভাগ্য নির্ধারিত করে।”
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, কারবালার এ মর্মান্তিক ঘটনা ইয়াজিদের শাসনকে কলঙ্কিত করেছে। এ হত্যাকাণ্ডের ফলাফল মুসলিম বিশ্বে আজো দেখা যায়। এ হত্যাকাণ্ডের ফলে শিয়ারা ১০ই মহররম শোকাবহ দিবস পালন করে। ঐতিহাসিক বার্নার্ড লুইস বলেন, “প্রত্যক্ষ ফল যাই হোক না কেন কারবালা হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী ফলাফল সত্যিই বিস্ময়কর।”
আর্টিকেলের শেষকথাঃ কারবালার মর্মান্তিক ঘটনা ব্যাখ্যা করো
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম কারবালার হত্যাকান্ড সম্পর্কে যা জান লিখ টি। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।