যুক্তফ্রন্টের পতনের কারণসমূহ বর্ণনা কর | যুক্তফ্রন্ট সরকার কতদিন ক্ষমতায় ছিল
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো যুক্তফ্রন্টের পতনের কারণসমূহ বর্ণনা কর | যুক্তফ্রন্ট সরকার কতদিন ক্ষমতায় ছিল জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের যুক্তফ্রন্টের পতনের কারণসমূহ বর্ণনা কর | যুক্তফ্রন্ট সরকার কতদিন ক্ষমতায় ছিল ।
যুক্তফ্রন্টের পতনের কারণসমূহ বর্ণনা কর | যুক্তফ্রন্ট সরকার কতদিন ক্ষমতায় ছিল |
যুক্তফ্রন্টের পতনের কারণসমূহ বর্ণনা কর | যুক্তফ্রন্ট সরকার কতদিন ক্ষমতায় ছিল
- যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা ভেঙে যাওয়ার কারণ গুলো বর্ণনা কর।
উত্তর : ভূমিকা : বিপুল জয়লাভের মাধ্যমে যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠন করে। কিন্তু মুসলিম লীগ নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার যুক্তফ্রন্ট সরকারকে মনে-প্রাণে গ্রহণ করতে পারেনি। প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় সরকার যুক্তফ্রন্টের বিরুদ্ধে গোপন ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেন। যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠনের পর পূর্ব বাংলায় পরিকল্পিতভাবে আইনশৃংখলার অবনতি ঘটানো হয়। ১৯৫৪ সালের ২৩ মার্চ চন্দ্রঘোনা কর্ণফুলী পেপার মিলে বাঙালি ও বিহারী শ্রমিকদের মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা সংঘটিত হয়। এতে ১৩ শ্রমিকের প্রাণহানি ঘটে। ১৯৫৪ সালের ১৫ মে কেন্দ্ৰীয় পাকিস্তান সরকারের গোপন ইঙ্গিতে নারায়ণগঞ্জ আদমজী জুট মিলে বাঙালি অবাঙালি শ্রমিক দাঙ্গা সংঘটিত হয়।
→ যুক্তফ্রন্টের পতনের কারণ : নির্বাচনের পর ১৯৫৪ সালের ৩ এপ্রিল যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা গঠন করে। অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে মন্ত্রিসভা ১৫ মে শপথ নেয় কিন্তু বাংলার মানুষের দুর্ভাগ্য যে, এ মন্ত্রিসভা টিকে ছিল মাত্র ১৫ দিন। নিম্নে মন্ত্রিসভা পতনের কারণগুলো আলোচনা করা হলো :
১. হক মন্ত্রিসভা নিয়ে অসন্তোষ : ১৯৫৪ সালের ২৫ মার্চ পূর্ব বাংলার গভর্নর চৌধুরী খালেকুজ্জামান ফজলুল হককে সরকার গঠনের আহ্বান জানান। ফজলুল হকের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্য হলেন আশরাফউদ্দিন চৌধুরী (বেসরকারি সরবরাহ ও যোগাযোগ), আবু হোসেন সরকার (বিচার, স্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকার), এবং সৈয়দ আজিজুল হক (শিক্ষা, শ্রম ও শিল্প)। এখানে উল্লেখ্য যে, আবু হোসেন সরকার অবিভক্ত বাংলার আইনসভার একজন সদস্য ছিলেন। এ. কে. ফজলুল হকের ভাগিনা সৈয়দ আজিজুল হক কৃষক পার্টির নেতা ছিলেন এবং বঙ্গীয় কংগ্রেস কমিটির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক আশরাফউদ্দিন চৌধুরী ছিলেন তখন নেজাম-ই-ইসলাম পার্টিভুক্ত। হক মন্ত্রিসভার এমন কাঠামো যুক্তফ্রন্টের অধিকাংশ শরিক দলের মধ্যে মারাত্মক অসন্তোষ সৃষ্টি করে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ তা কিছুতেই গ্রহণ করতে পারেননি এবং এর পরিণতি হয় অশুভ।
২. যুক্তফ্রন্টের বিভক্তি : নেতৃবৃন্দের মধ্যে ব্যক্তিগত রেষারেষি এবং শরিক দলগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচিগত মত ভিন্নতার কারণে যুক্তফ্রন্টে খুব শীঘ্রই বিভক্তি দেখা দেয়। যুক্তফ্রন্টের বিভক্তি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে একজন লেখক বলেন, “যুক্তফ্রন্ট ছিল একটি নির্বাচনি মোর্চা, নির্বাচন এবং মুসলিম লীগ বিরোধিতাকে কেন্দ্র করে এ মোর্চা গড়ে উঠে। কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার পর নেতাদের মধ্যে মন্ত্রিত্ব নিয়ে বিরোধ দেখা দেয় এবং অতিদ্রুত যুক্তফ্রন্ট বিভক্ত হয়ে পড়ে।”
তাছাড়াও এ. কে. ফজলুল হকের মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে আইন শৃংখলা রক্ষায় ব্যর্থতার অভিযোগও আনা হয়। একটি নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে গভর্নরের শাসন জারির মাধ্যমে আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাচারী হস্তক্ষেপের উদ্দেশ্য ছিল যুক্তফ্রন্টের ভাঙন সৃষ্টি করা।
৩. বাঙালি ও বিহারীদের সংঘর্ষ : ১৯৫৪ সালের মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে ফজলুল হক আওয়ামী লীগ সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করে তার মন্ত্রিসভাকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেন। যুক্তফ্রন্ট গণপরিষদ বিলোপ এবং অচিরেই কেন্দ্রীয় মুসলিম লীগ সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন। এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী গণপরিষদে বলেন “গণপরিষদ বিলুপ্ত করার কোনো প্রশ্নই উঠে না, কেননা এর সদস্যদের সংবিধান প্রণয়নের জন্যই ম্যান্ডেট দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া এমন কোনো সাংবিধানিক বিধানও নেই যার অধীনে গণপরিষদ বিলুপ্ত করা যেতে পারে। প্রাদেশিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রাদেশিক সরকার কি ধরনের হবে তা নির্ধারণ করার জন্য। কেন্দ্রীয় সরকার অথবা কেন্দ্রীয় আইন পরিষদ রূপ কি হবে সে সম্পর্কে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ কোনোভাবেই মতামত দেওয়ার জন্য ভোটদাতাদের আহ্বান করা হয়নি।”
ইতোমধ্যে প্রতিক্রিয়াশীল চক্র পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বাঙালি ও বিহারীদের মধ্যে সংঘাতময় সম্পর্ক সৃষ্টি করে। ফলে নারায়ণগঞ্জের আদমজী জুট মিলস এবং চট্টগ্রামের চন্দ্রঘোনা পেপার মিলে বাঙালি শ্রমিক ও অবাঙালি শ্রমিকদের সাথে দাঙ্গা সংঘটিত হয়। এতে বহু শ্রমিক নিহত হয়। কেন্দ্রীয় সরকার দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের পরিবর্তে ১৯৫৪ সালের ৩০ মে ফজলুল হক মন্ত্রিসভাকে বরখাস্ত করে এবং ১৯৩৫ সালের ভারত শাসন আইনের ৯২(ক) ধারা অনুযায়ী পূর্ব বাংলায় কেন্দ্রের শাসন জারি করে। বস্তুত পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক নেতারা অংশত কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ জনিত কারণে এবং আংশিকভাবে তাদের নিজেদের দুর্বলতার কারণে পূর্ব বাংলায় একটি গণশাসন পরিচালনার সুযোগ হাতছাড়া করেন। কেন্দ্রে শাসন জারির পর সশস্ত্র পুলিশ বেষ্টিত অবস্থায় একে ফজলুল হক নিজ বাড়িতে অন্তরীণ হন। হক মন্ত্রিসভা বাতিলের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকাসহ অন্যান্য স্থান থেকে যুক্তফ্রন্টের প্রায় ১৬শ নেতা কর্মী ও সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমানসহ প্রাদেশিক পরিষদের আরও ৩০ জন সদস্য। আওয়ামী লীগের মুখপাত্র ও দৈনিক ইত্তেফাকের উপর কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
৪. হকের রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য : ১৯৫৪ সালে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে কলকাতা সফরকালে ফজলুল হক রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য রাখেন বলে বিভিন্ন পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়। এ প্রসঙ্গে আয়ান স্টিফেনস বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ফজলুল হক কলকাতা সফরে গিয়ে অসতর্কভাবে এমন কথা বলেন যা পাকিস্তানের প্রতি রাষ্ট্রদ্রোহিতা হিসেবে আখ্যায়িত হয়।” ফজলুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো “তিনি দেশে ফিরে কেন্দ্রের সাথে পূর্ব বাংলা নিয়ে আলোচনাকালে স্বাধীনতার প্রশ্নটিকে অগ্রাধিকার দেবেন।” এ মর্মে তিনি কলকাতায় বক্তব্য রেখেছেন। মুসলিম লীগ নেতাদের মালিকানাধীন পত্রিকাগুলো তার এ বক্তব্যকে সম্পূর্ণ অবাঞ্ছিত বলে গণ্য করে। পাকিস্তান রিভিউ এর সম্পাদকীয়তে বলা হয় কোনো বিদেশি সরকারের সাথে উচ্চ পর্যায়ে নীতি সংক্রান্ত আলোচনা প্রাদেশিক মুখ্যমন্ত্রীর কাজ নয়, ঢাকায় তার আসন যত সুদৃঢ় হোক না কেন কিংবা তিনি যত জনপ্রিয় নেতাই হোন না কেন। সুতরাং বলা যায়, ফজলুল হকের বক্তব্যের মাধ্যমেও যুক্তফ্রন্টের পতন ঘটে।
৫. মার্কিনীদের স্বার্থ : অধিকন্তু হক মন্ত্রিসভার পতনে পাকিস্তানে অবস্থানরত মার্কিন কূটনীতিকদেরও হয়তো হাত ছিল। শোনা যায় যে, পূর্ববঙ্গ আইন পরিষদের ১৬২ জন সদস্য ‘যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সামরিক চুক্তির' প্রতিবাদ করে বিবৃতি দিয়েছিলেন। শীতলযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র যখন পাকিস্তানকে মস্কোর বিরুদ্ধে মার্কিন স্বার্থের একটি মজবুত ঘাঁটি হিসেবে দেখছিল, তখন পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশে বামঘেঁষা দলগুলোর শাসন নিঃসন্দেহে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অস্বস্তিকর ছিল ।
চন্দ্রঘোনা কাগজের কল ও আদমজী পাটকলে দাঙ্গার ফলে যে প্রাণহানি ঘটে এবং ব্যাপক ক্ষতিসাধিত হয় তাও এখানে বিবেচনায় আনা যায় । মার্কিন অর্থায়নে স্থাপিত কাগজের কলটির ব্যবস্থা ছিল প্রধানত অবাঙালিদের নিয়ন্ত্রানাধীন। আদমজীর মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা ছিল জনৈক অবাঙালি পুঁজিপতিদের হাতে। বাঙালি ও অবাঙালিদের মধ্যে উত্তেজনা অনেকদিন ধরেই বিদ্যমান ছিল। অনেকে সন্দেহ করেছিল যে, পশ্চিম পাকিস্তানি ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বাঙালি শ্রমিকদের শ্রেণিচেতনা ও ঐক্য বিনষ্ট করার জন্য এবং সংঘাত ঘটানোর জন্য ইন্ধন যুগিয়েছেন। উভয় কারখানাতেই বাঙালি শ্রমিকরা যুক্তফ্রন্টের কট্টর সমর্থক ছিল এবং নির্বাচনে একজোট হয়ে ফ্রন্টের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। স্বায়ত্তশাসন দাবিদার যুক্তফ্রন্ট সরকার ছিল কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন এলিট গোষ্ঠীর জন্য প্রদেশে তাদের অবাধ নিয়ন্ত্রণের প্রতি সত্যিকারের একটি হুমকি।
৬. স্বায়ত্তশাসনের দাবি : যুক্তফ্রন্ট গঠিত হওয়ার পিছনে তার একটি সাধারণ লক্ষ্য ছিল প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন অর্জন এবং আরেকটি যৌথ ও অবিচল লক্ষ্য ছিল প্রদেশে মুসলিম লীগের কর্তৃত্বের অবসান ঘটানো। স্বায়ত্তশাসনের আপোষহীন প্রবক্তা হিসেবে আবির্ভূত আওয়ামী লীগ ছাড়া জোটে অন্তর্ভুক্ত ছিল কৃষকশ্রমিক পার্টি, গণতন্ত্রী দল, নিজাম-ই-ইসলামি এবং কয়েকটি ক্ষুদ্রাকার বামপন্থি গোষ্ঠী। জোটের নেতৃত্বে ছিলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, ভাসানী এবং এ. কে. ফজলুল হকের মতো বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা এবং তরুণ ও উদ্যমী নেতা শেখ মুজিবুর রহমান, যার উপর ন্যস্ত ছিল জোটের সাংগঠনিক কাঠামো নির্মাণের কঠিন দায়িত্ব। শহর ও পল্লি উভয় অঞ্চলের প্রতিনিধিত্বের দাবিদার আওয়ামী লীগ মার্চে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে একক বৃহত্তম দল হিসেবে আবির্ভূত হয়। দ্বিতীয় স্থান দখল করেন কৃষক-শ্রমিক পার্টি। মুসলিম লীগ পায় মাত্র ৯টি আসন। নির্বাচনি প্রতীক হিসেবে নৌকা ব্যবহার করে যুক্তফ্রন্ট যে চমকপ্রদ বিজয় অর্জন করেছিলেন তা ছিল অসাধারণ এবং প্রকৃতিগত দিক দিয়ে বৈপ্লবিক মাত্রার। কারণ এ বিজয় একটি গণসমর্থনপুষ্ট সরকার গঠনে ভিত্তি গড়ে তোলে। তবে এর মাধ্যমে গঠিত যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা অচিরেই সংবিধান এবং পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসন বিষয়ে করাচির সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। ক্ষমতায় আরোহণের ছয় সপ্তাহের মধ্যে দেশদ্রোহিতা এবং পাকিস্তান রাষ্ট্র থেকে পূর্ববঙ্গকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ফজলুল হককে সরিয়ে দেয়া হয়। হতো
৭. মোহাম্মদ আলীর ধূর্ততা : প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী (বগুড়া) ফ্রন্টের ঐক্যে, বিশেষত আওয়ামী লীগ এবং কৃষক শ্রমিক পার্টির ঐক্যে ফাটল ধরাতে ফজলুল হককে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং তার বিশ্বস্ত অনুসারী হওয়ার আমন্ত্রণ জানান। | যাকে কিছুদিন পূর্বেই বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। আবু হোসেন সরকারকে মন্ত্রিসভা গঠনের সংকেত দেওয়া হয়েছিল। যদিও প্রাদেশিক সংসদে কৃষক-শ্রমিক পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল না। কৃষক শ্রমিক পার্টিতে যোগদান করলে মন্ত্রিত্ব লাভ করা যাবে এ আশায় ১৯৫৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ধারাবাহিকভাবে উচ্চাভিলাসী সদস্যগণ কর্তৃক দলত্যাগের ঘটনা ঘটে। যার ফলে আওয়ামী লীগ সংসদে সংখ্যালঘিষ্ঠে পরিণত হয়। ইতোমধ্যে ১৯৫৪ সালের ২৪ অক্টোবর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার শাসন গ্রহণের সময় মোহাম্মদ আলী সোহরাওয়ার্দীকে আইনমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণে রাজি করাতে সক্ষম হন। এর ফলে আওয়ামী লীগের প্রগতিশীল অংশ আরও দুরবস্থায় পতিত হয়। মোহাম্মদ আলী ফজলুল হকের একজন প্রতিনিধিকে মন্ত্রিসভায় স্থান দেন। করাচির গভর্নর হিসেবে ফজলুল হক ১৯৫৫ সালের জুন মাসে ঢাকায় ফিরে আসেন এবং তাড়াহুড়া করে কৃষক-শ্রমিক পার্টির নেতৃত্বে গঠিত সরকারকে শপথ গ্রহণ করান। কাজেই আওয়ামী লীগ প্রাদেশিক পরিষদে বিরোধী দলের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। ফলে শক্তিশালী যুক্তফ্রন্ট যা প্রদেশে মুসলিম লীগের নিয়ন্ত্রণের অবদান ঘটায় তা অবলুপ্ত হয়ে যায়। যদিও তার একটি খোলস আরও কিছুদিন নামে মাত্র টিকেছিল।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, এসব ঘটনার মাধ্যমে পূর্ব বাংলার প্রতি পাকিস্তানে কেন্দ্রীয় সরকারের চরম বৈরী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা বাতিলের মাধ্যমে এক অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ঘন ঘন সরকার পরিবর্তন এবং দমন পীড়ন ছিল এ সময়কালের প্রধান বৈশিষ্ট্য। এ ঘটনা পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর প্রতি বাঙালিদের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ ও ঘৃণার সৃষ্টি করে। এসব ঘটনার মাধ্যমেই যুক্তফ্রন্টের পতন ঘটে। এ জন্য শুধু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীকেই দায়ী করা যাবে না, বরং কিছু বাঙালি নেতারও এর পিছনে হাত ছিল।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ যুক্তফ্রন্টের পতনের কারণসমূহ বর্ণনা কর | যুক্তফ্রন্ট সরকার কতদিন ক্ষমতায় ছিল
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম যুক্তফ্রন্টের পতনের কারণসমূহ বর্ণনা কর | যুক্তফ্রন্ট সরকার কতদিন ক্ষমতায় ছিল । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।