যুদ্ধাপরাধ কি | যুদ্ধাপরাধ বলতে কি বুঝ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো যুদ্ধাপরাধ কি | যুদ্ধাপরাধ বলতে কি বুঝ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের যুদ্ধাপরাধ কি | যুদ্ধাপরাধ বলতে কি বুঝ ।
যুদ্ধাপরাধ কি যুদ্ধাপরাধ বলতে কি বুঝ |
যুদ্ধাপরাধ কি | যুদ্ধাপরাধ বলতে কি বুঝ
উত্তর : ভূমিকা : যুদ্ধাপরাধ মানবতাবিরোধী এক ঘৃণ্য অপরাধ। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ বিষয়টি আরও স্পর্শকাতর। কারণ চির সবুজের দেশ বাংলার নিরীহ, নিরস্ত্র, শান্তিপ্রিয় মানুষ মুক্তিযুদ্ধকালীন সুপরিকল্পিতভাবে গণহত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছিল।
সাড়ে সাত কোটি মানুষের উপর সর্বাধুনিক মরণাস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হিংস্র হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রকারীরা, সৈন্যরা, পশুরা এবং তাদের সহায়তা করেছিল এদেশীয় দোসররা ।
তাই বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানি বাহিনী ও দেশীয় দোসরদের দ্বারা সংঘটিত এহেন কর্মকাণ্ড যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত। অর্থাৎ যুদ্ধচলাকালীন মানবতাবিরোধী যেকোনো কর্মকাণ্ডকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়।
→ যুদ্ধাপরাধের সংজ্ঞা : যুদ্ধাপরাধ বলতে কোনো দেশ, জাতি, সামরিক বা বেসামরিক ব্যক্তি কর্তৃক যুদ্ধের প্রথা বা আন্তর্জাতিক নীতিমালা লঙ্ঘন করে প্রতিপক্ষ শক্তিকে আঘাত করাকে বুঝায় ।
আন্তর্জাতিক আইন ও বিধিবিধানে যুদ্ধাপরাধকে বিভিন্নভাবে এবং বিভিন্ন মানদণ্ডের উপর ভিত্তি করে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। যা যুদ্ধপরাধের সংজ্ঞাকে সুস্পষ্ট করে তোলে।
১. হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস থেকে প্রকাশিত 'দ্য ব্ল্যাক বুক অফ কমিউনিজম; ক্রাইম, টেরর, রিপ্রেশন" গ্রন্থে যুদ্ধাপরাধের সাংজিক অর্থ যুদ্ধের আইন বা প্রথাকে লঙ্ঘন করে হত্যা, নির্যাতন যা সাধারণ নাগরিকদের নির্বাসিত করে অধিকৃত জনপদে ক্রীতদাস শ্রম ক্যাম্পে পরিণত করে, আটককৃতদের হত্যা ও নির্যাতন, অপহৃতদের হত্যা, সামরিক বা বেসামরিক প্রয়োজনীয়তা ছাড়াই দায়িত্বজ্ঞানহীন নগর, শহর ও গ্রামাঞ্চলকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করাকে উল্লেখ করা হয় ।
২. চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের ১৪৭ ধারায় যুদ্ধাপরাধ প্রসঙ্গে বলা হয়; ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা, নির্যাতন বা অমানবিক ব্যবহার এবং কারো শরীর বা স্বাস্থ্যে গুরুত্বর আঘাত করা বা তার দুর্দশার কারণ তৈরি, অন্যায়ভাবে কাউকে বিতাড়ন বা স্থানান্তর করা বা আটক করা, শত্রুবাহিনীর সেবাদানে বাধ্য করা যথাযথ ও নিয়মতান্ত্রিক বিস্তার পাওয়ার অধিকার থেকে কাউকে ইচ্ছাকৃতভাবে বঞ্চিত করা, কাউকে জিম্মি করা, বিপুল পরিমাণে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো ও সম্পত্তি আত্মসাৎ করা, সামরিক প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও বেআইনি ও নীতি বিরুদ্ধে উপরের যেকোনো এক বা একাধিক কর্মকাণ্ড যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
যুদ্ধপরাধের ধারার মর্মমূলে ছিল যে, একটি দেশের বা দেশের সৈন্যদের কাজের জন্য একজন ব্যক্তিত্ব দায়ী হতে পারেন।
গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, সাধারণ নাগরিকদের হয়রানি, এসবই যুদ্ধাপরাধের মধ্যে গণ্য হয়। এসবের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর হলো গণহত্যা।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, যুদ্ধাপরাধ হচ্ছে একটি মানবতা বিরোধী জঘণ্য ঘৃণ্য ও বর্বর অপরাধ যা বেসামরিক জনগণের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে।
কোনো যুদ্ধ চলাকালীন শত্রুপক্ষ কর্তৃক সাধারণ জনগণের উপর গণহত্যা, খুন, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, ঘরবাড়ি ধ্বংস, মালামাল ছিনতাই প্রভৃতি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটনই যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত।
অর্থাৎ যুদ্ধাপরাধ হচ্ছে মানবসভ্যতা ও সংস্কৃতির সেই ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ড যা বৃহৎ শক্তি কর্তৃক বেসামরিক জনগণের উপর আন্তর্জাতিক যুদ্ধ আইন বা নিয়মনীতি লঙ্ঘনের মাধ্যমে পরিচালিত করা হয়। যার দ্বারা জানমালের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয় এবং মানবসভ্যতাকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেয়া হয় ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ যুদ্ধাপরাধ কি | যুদ্ধাপরাধ বলতে কি বুঝ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম যুদ্ধাপরাধ কি | যুদ্ধাপরাধ বলতে কি বুঝ । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।