জাতীয়তাবাদের উপাদান গুলো কি কি
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো জাতীয়তাবাদের উপাদান গুলো কি কি জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের জাতীয়তাবাদের উপাদান গুলো কি কি ।
জাতীয়তাবাদের উপাদান গুলো কি কি |
জাতীয়তাবাদের উপাদান গুলো কি কি
- জাতীয়তাবাদের উপাদানসমূহ সংক্ষেপে আলোচনা কর
উত্তর : ভূমিকা : মানুষ সামাজিক তথা রাজনৈতিক জীব। সমাজের আদিকাল থেকেই মানুষ দলগতভাবে বসবাস করে আসছে। যদিও পৃথিবীতে সব মানুষই বাহ্যিক দিক থেকে সমান তবুও এক এলাকার মানুষের কথাবার্তা, চাল-চলন থেকে শুরু করে সবকিছুতেই অন্য আরেক এলাকার মানুষের সাথে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। আর এই পার্থক্য বা ভিন্নতার মূলে যে জিনিসটি কাজ করে তা হচ্ছে জাতীয়তাবাদ । কেননা একমাত্র জাতীয়তাবাদই হচ্ছে জনগণের ঐক্যবদ্ধতার ভিত্তি। জাতীয়তাবাদ হতে পারে আঞ্চলিক, অথবা রাষ্ট্রীয়। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের পিছনে যে জাতীয়তাবাদ কাজ করে তা হচ্ছে ভাষাগত জাতীয়তাবাদ। বাঙালি জনগণ নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদের জন্ম দেয় এবং বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ জাতীয়তাবাদ বিকাশ লাভ করে । → জাতীয়তাবাদের উপাদান : জাতীয়তাবাদের উপাদানগুলো আলোচনা করা হলো :
→ জাতীয়তাবাদের উপাদান : জাতীয়তাবাদের উপাদানগুলো আলোচনা করা হলো :
১. বিভিন্ন দেশে জাতীয়তাবাদ : বিভিন্ন দেশে বা ভৌগোলিক পরিমণ্ডলে জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটতে দেখা যায়। উনিশ-বিশ বা ত্রিশের দশকে হিটলারে নেতৃত্বে জার্মানিতে চরম জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটে। নৃতাত্ত্বিক অভিজাত্যের ধারণা এর মূলে ক্রিয়াশীল ছিল। আবার একই সময়ে ভারতে শুরু হয়েছিল ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, এ আন্দোলন ব্যাপক জনসমর্থন লাভ করেছিল। ধর্মভিত্তিক ‘দ্বি-জাতিতত্ত্ব'। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষের হিন্দু-মুসলমান যে দুটি রাষ্ট্রে ভাগ করেছিল; আজ তা পরিণত হয়েছে তিনটি রাষ্ট্রে। উভয় জাতির লোকেরা বসবাস করছে প্রত্যেকটি অংশেই। আমেরিকা বা যুক্তরাষ্ট্রে যারা বসবাস করেছে মূলত তারা সবাই এশীয়, ইউরোপীয় বা আফ্রিকার অধিবাসীদের অধস্তন পুরুষ। তারা আজ আমেরিকার জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠা করেছে বহু জাতির সমন্বয়ে। এই রাষ্ট্রীয় শাসনের অধীনে বসবাস মার্কিন জাতীয়তাবাদের ভিত্তি। ব্রিটেনের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ হয় ১৮১২ সালে। ফরাসি সমর্থক হেমিন্টনিয়ানগণ তখন রাষ্ট্রীয় স্বার্থ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল আমেরিকান জাতীয়তাবাদের পতাকাতলে ।
২. বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদ : বাংলাদেশে দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে লড়াই করে যারা পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছিলেন তারাই আবার ১৯৫২-তে দ্বি-জাতিতত্ত্ব ছুড়ে ফেলে দিয়ে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। মাতৃভাষা বাংলা পক্ষে। পূর্ব-বাংলার জনগণকে মাতৃভাষা বাংলার প্রতি মমত্ববোধের জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিল বাঙালি জাতীয়তাবোধ ।
৩. জাতীয়তাবাদের উপাদান : জাতীয়তাবাদের উপাদান বহু ও বিচিত্র। কোনো জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঐক্যবোধ সৃষ্টি হতে পারে ভাষা, ধর্ম, নৃতাত্ত্বিক, গড়ন, একই ভূ-খণ্ডে বসবাস প্রভৃতি যেকোনো একটি বা একাধিক কারণে । কারণ এই ঐক্যবোধ তাদের ঐক্যবদ্ধ জাতিতে পরিণত করতে সক্ষম হয়। ঐক্যের এই সুদৃঢ় মানসিকতাকে আমরা জাতীয়তাবাদের উপাদান বলে অভিহিত করি। ভাষা ও সাংস্কৃতি হলো বাঙালি জাতীয়তাবাদের উপাদান ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, জাতীয়তাবাদ একটি মানুষিক ধারণা। বাঙালি জাতীয়তাবাদের শুরু হয়েছিল ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে এবং ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এর পরিপূর্ণতা আসে। তবে জাতীয়তাবাদ একটি চলমান প্রক্রিয়া, তাই স্বাধীনতা অর্জনের পরবর্তীতেও এটি সুসংহত, সুদৃঢ় ও গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ জাতীয়তাবাদের উপাদান গুলো কি কি
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম জাতীয়তাবাদের উপাদান গুলো কি কি । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।