জাতীয়তাবাদ কি | জাতীয়তাবাদ বলতে কি বুঝায়
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো জাতীয়তাবাদ কি | জাতীয়তাবাদ বলতে কি বুঝায় জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের জাতীয়তাবাদ বলতে কি বুঝ | জাতীয়তাবাদ কাকে বলে ।
জাতীয়তাবাদ বলতে কি বুঝায় |
জাতীয়তাবাদ কি | জাতীয়তাবাদ বলতে কি বুঝায়
- জাতীয়তাবাদ কি?
- অথবা, জাতীয়তাবাদ বলতে কি বুঝ?
- অথবা, জাতীয়তাবাদের সংজ্ঞা দাও ।
- অথবা, জাতীয়তাবাদ কাকে বলে?
উত্তর : ভূমিকা : মানুষ সামাজিক তথা রাজনৈতিক জীব। সমাজের আদিকাল থেকেই মানুষ দলগতভাবে বসবাস করে আসছে। যদিও পৃথিবীতে সব মানুষই বাহ্যিক দিক থেকে সমান তবুও এক এলাকার মানুষের কথাবার্তা, চাল-চলন থেকে শুরু করে সবকিছুতেই অন্য আরেক এলাকার মানুষের সাথে পার্থক্য লক্ষ করা যায়। আর এই পার্থক্য বা ভিন্নতার মূলে যে জিনিসটি কাজ করে তা হচ্ছে জাতীয়তাবাদ। কেননা একমাত্র জাতীয়তাবাদই হচ্ছে জনগণের ঐক্যবদ্ধতার ভিত্তি। জাতীয়তাবাদ হতে পারে আঞ্চলিক, রাষ্ট্রীয়।
জাতীয়তাবাদ : ‘জাতীয়তাবাদ' শব্দটি ইংরেজি ‘Nationality’ শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ Nationality. শব্দটির উদ্ভব ঘটেছে ল্যাটিন শব্দ Natus' বা 'Natia' থেকে। যার অর্থ জন্ম। এদিক থেকে Nationality বা জাতীয়বাদ বলতে বুঝায় একই আদর্শ থেকে জন্ম নেওয়া জনসমষ্টি সাধারণভাবে জাতীয়তাবাদ বলতে বুঝায় এমন এক সংঘবদ্ধ জনসমষ্টিকে যারা মানসিক, আদর্শিক এবং চেতনায় ঐকবদ্ধ মূলত দীর্ঘদিন ধরে একই ভৌগোলিক সীমারেখায় বসবাসকারী জনসমষ্টির মধ্যে ভাষা, বংশ, বর্ণ, সৃষ্টি, ইতিহাস, রাজনীতি অর্থনীতি প্রভৃতি বিষয়ে মিল থাকার কারণেই তাদের মধ্যে ঐক্যবদ্ধতা গড়ে উঠে। আর এই ঐক্যবদ্ধতাই তাদেরকে অন্যের থেকে নিজেদেরকে আলাদা করে ভাবতে শেখায় এবং তারা নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী জাতীয় জীবন গড়ে তোলার মানসিকতা লাভ করে। এভাবে যখন কোনো জনসমষ্টি ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী জাতীয় জীবন পরিচালনার মানসিকতা লাভ করে তখনই বলা হয়ে থাকে যে, জাতির মধ্যে জাতীয়তাবাদ জন্ম নিয়েছে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট জনসমষ্টির মানসিক বিদ্যানুভূতিই জাতীয়তা জাতীয়বাদ নামে পরিচিত।
→ প্রামাণ্য সংজ্ঞা : বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে জাতীয়তাবাদের সংজ্ঞা দিয়েছেন। নিম্নে তাদের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সংজ্ঞা উপস্থাপন করা হলো :
L. Snyder এল. স্লাইডার-এর মতে, “জাতীয়তাবাদ হচ্ছে ইতিহাসের এক বিশেষ স্তরে রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও আত্যাত্মিক চেতনার ফল একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক এলাকার মধ্যে বসবাসকারী জনগণের মনমানসিকতা ও ভাবগত ঐকই এর প্রধান শর্ত।”
অধ্যাপক লয়েড (Prof. Lioyd)-এর ভাষায়, “জাতীয়বাদ একটি ভাবগত বা মানসিক ধারণা বিশেষ।”
আরনল্ড জে. টয়েনবি (Arnold J. Toynbee) বলেন, “জাতীয়বাদ কোনোরূপ বস্তুগত বা যান্ত্রিক অনুভূতি নয়, বরং একপ্রকার আত্মিক ও মানসিক অনুভূতি।”
রিচার্ড ডব্লিউ কোটাম (Richard w. cottam)-এর মতে, “জাতীয়তাবাদ হলো একটি বিশ্বাস, যা একটি জাতির মধ্যে পরিস্ফুটিত হয়, যে জাতি স্বাধীনভাবে নিজেদের সবকিছুকেই গৌরবের সাথে গ্রহণ করে।”
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, জাতীয়তাবাদ এমন একটি মানসিক অনুভূতি ও অনুপ্রেরণা সমষ্টি, যা কোনো জাতির স্বাজাত্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সমষ্টি সংস্কৃতিতে ঐক্যবদ্ধ চেতনার প্রতিফলন ঘটায় । বিশ্ব রাজনীতির অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী শক্তি হলো জাতীয়তাবাদ। বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষাপটের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদ বিকাশ লাভ করে । জাতীয়তাবাদ একটি গতিশীল শক্তি ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ জাতীয়তাবাদ কি | জাতীয়তাবাদ বলতে কি বুঝায়
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম জাতীয়তাবাদ কাকে বলে | জাতীয়তাবাদ শব্দের অর্থ কি । যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।