জাবের যুদ্ধ সম্পর্কে যা জান লিখ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে বিষয় হলো জাবের যুদ্ধ সম্পর্কে যা জান লিখ জেনে নিবো। তোমরা যদি পড়াটি ভালো ভাবে নিজের মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে চাও তাহলে অবশ্যই তোমাকে মনযোগ সহকারে পড়তে হবে। চলো শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমরা জেনে নেই আজকের জাবের যুদ্ধ সম্পর্কে যা জান লিখ টি।
জাবের যুদ্ধ সম্পর্কে যা জান লিখ |
জাবের যুদ্ধ সম্পর্কে যা জান লিখ
উত্তর : ভূমিকা : খলিফা আব্দুল মালিকের শাসনামলে (৬৮৫-৭০৫) সংঘটিত জাবের যুদ্ধ ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছে। এ যুদ্ধে আবু উবায়দার পুত্র আল মুখতার কারবালার কসাই ওবায়দুল্লাহকে হত্যা -করেন। যার ফলে কারবালা হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ গ্রহণ করা মুখতারের পক্ষে সম্ভব হয়। তাই এ যুদ্ধ ইসলামের ইতিহাসে ঐতিহাসিক প্রথম জাবের যুদ্ধ নামে পরিচিত।
→ ঐতিহাসিক জাবের যুদ্ধ : ঐতিহাসিক জাবের যুদ্ধ কতিপয় কারণে সংঘটিত হয়। নিম্নে আলোচনা করা হলো :
১. খারিজিদের অনুশোচনা : কারবালায় ইমাম হুসাইন নিহত হলেন। যুদ্ধে হুসাইনকে সাহায্য করতে না পেরে খারিজিরা অত্যন্ত অনুতপ্ত হয়। তারা ইমাম হুসাইনের কবরের পাশে একত্রিত হয়ে বিলাপ করে এবং তার হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণের জন্য শপথ নেয়। এমন একজন শপথকারী হলেন আল মুখতার। আর এ মুখতার ছিলেন আবু উবায়দার পুত্র। যিনি ৬৩৪ খ্রিস্টাব্দে সেতুর যুদ্ধে শহিদ হয়েছিলেন।
২. অনুশোচনাকারীদের হাহাকার : এদিকে মুখতার হুসাইন হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণকারী দল অনুশোচনাকারীদের দলে যোগদান করেন। অনুশোচনাকারীরা হুসাইন হত্যার উপযুক্ত প্রতিশোধ নেয়ার জন্য সর্বত্র হাহাকার করতে লাগলো। তারা কুফার শাসককে বিতাড়িত করে এবং ইরাক, পারস্য এবং আরবের বিভিন্ন অঞ্চলে স্বীয় প্রভাব বিস্তার করে।
৩. ওবায়দুল্লাহকে শিক্ষাপ্রদান : মুখতার কারবালার কসাই (The butcher) ওবায়দুল্লাহকে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়ার জন্য যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে থাকেন। এদিকে মুখতারের শক্তি ধ্বংস করার জন্য খলিফা আব্দুল মালিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। ফলে জাবের যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে।
→ জাবের যুদ্ধের ঘটনা : মুখতারের বিদ্রোহ দমন করার জন্য খলিফা আব্দুল মালিক কারবালার কসাই ওবায়দুল্লাহকে প্রেরণ করেন। ৬৮৬ খ্রিস্টাব্দে জাব নদীর তীরে মুখতারের সেনাপতি আল আসতার ওবায়দুল্লাহর মুখোমুখি হন। উভয় দলের মধ্যে প্রচণ্ড যুদ্ধের পর ওবায়দুল্লাহ মুখতারের সেনাপতি ইব্রাহিম ইবনে আল আশতারের হাতে নিহত হন। ফলে কারবালার যুদ্ধে ওবায়দুল্লাহ যেভাবে হুসাইনের মস্তকে বেত্রাঘাত করে ইয়াজিদের নিকট প্রেরণ করে তেমনিভাবে আল আসতার ওবায়দুল্লাহ্র ছিন্নকৃত মস্তক মুখতারের নিকট প্রেরণ করেন। ইতিহাসে এ যুদ্ধই ঐতিহাসিক প্রথম জাবের যুদ্ধে নামে পরিচিত।
→ জাবের যুদ্ধের ফলাফল : ঐতিহাসিক প্রথম জাবের যুদ্ধে মুখতার আব্দুল মালিকের বাহিনীর নিকট জয়লাভ করে দৃঢ় মনোবলের পরিচয় দেন। ফলে মুখতার আরো শক্তি সঞ্চয় করে সমগ্র ইরাক, সিরিয়া এবং পারস্যের কিছু এলাকা দখল করেন। মুখতারের উত্থানে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের শঙ্কিত হয়ে পড়েন । তিনি তার ভ্রাতা ও বসরার আমীর মুসায়াবকে তার বিরুদ্ধে পাঠান। অবশেষে ৬৮৭ খ্রি. মার্চ মাসে এক যুদ্ধে মুখতার পরাজিত ও নিহত হন।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, খলিফা আব্দুল মালিকের খেলাফতকালে (৬৮৫-৭০৫) সংঘটিত ঐতিহাসিক প্রথম জাবের যুদ্ধ ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ যুদ্ধে মুখতার জয়লাভ করে ওবায়দুল্লাহকে নিহত করে আব্দুল মালিকের দিকে অগ্রসর হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত মুখতার মুসআবের কাছে পরাজিত ও নিহত হয়। ফলে আব্দুল মালিকের খেলাফত বিপদমুক্ত হয় ।
আর্টিকেলের শেষকথাঃ জাবের যুদ্ধ সম্পর্কে যা জান লিখ
আমরা এতক্ষন জেনে নিলাম জাবের যুদ্ধ সম্পর্কে যা জান লিখ টি। যদি তোমাদের আজকের এই পড়াটিটি ভালো লাগে তাহলে ফেসবুক বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারো। আর এই রকম নিত্য নতুন পোস্ট পেতে আমাদের আরকে রায়হান ওয়েবসাইটের সাথে থাকো।